দিল্লি পুলিশ প্রায় একটি স্বশাসিত সংস্থা। তারা দিল্লির নির্বাচিত সরকারের অধীন নয়। সম্প্রতি দিল্লির নবনির্বাচিত আম আদমি পার্টির সরকার এই দিল্লি পুলিশকে নিজেদের অধীনস্থ করতে চেয়ে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কয়েক আগে দু-দিন ধরে ধরনা দিয়েছে দিল্লির রাজপথে। আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ একটি কারণ ছিল, সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা না করার জন্য দিল্লি পুলিশের কয়েকজন অফিসারকে শাস্তির দাবি। এই শাস্তির দাবি জানানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে। কারণ, খাতায় কলমে অন্তত দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন। তবে দিল্লির প্রশাসনিক প্রধান এক অনির্বাচিত ব্যক্তি, পদবী লেফটেনান্ট গভর্নর।
দিল্লি পুলিশকে আমরা চিনেছি আফজল গুরুকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ঘটনার মাধ্যমে। এই দিল্লি পুলিশের হাতেই আছে কুখ্যাত স্পেশ্যাল সেল। যাদের হাতে বিস্তর ক্ষমতা। আফজল গুরু-র ব্যাপারে দেখা গিয়েছিল, তারা কোনো নিরীহ মানুষকে কাশ্মীর থেকে টেনে দিল্লিতে এনে এক সন্ত্রাসবাদী হামলার মূল কারিগর বানিয়ে দিতে পারে। এমনকী ২০০১ সালের পার্লামেন্ট আক্রমণের ঘটনাটিও দিল্লি পুলিশের সাজানো কি না, তা নিয়েও কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছে। কারণ এই আক্রমণের কোনো তথ্যানুগ প্রমাণ নেই, আছে কেবল আফজলের ‘স্বীকারোক্তি’।
রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার তো বটেই, এমনকী দেশের সর্বোচ্চ আদালতও এই দিল্লি পুলিশকে সমঝে চলে — কোনো প্রমাণ ছাড়া, কেবল পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় আফজল গুরুর ‘স্বীকারোক্তি’টির ওপর ভর করে সুপ্রিম কোর্ট আফজলের ফাঁসি বহাল রাখে।
তবে এই দিল্লি পুলিশকে চালায় কে বা কারা? সরকার তো আসে যায় (২০০১ সালে কেন্দ্রে ছিল বিজেপি সরকার, পরে ২০০৪ থেকে কংগ্রেসি সরকার), দিল্লি পুলিশের সংগঠন-কার্যাবলী একই থেকে যায়।
কেজরিওয়াল কি পারবেন এই প্রবল ক্ষমতাশালী সংগঠনটিকে নির্বাচিত সরকারের আওতায় আনতে? পারবেন কি তার পুরোনো পাপের হিসেবনিকেশ চাইতে?
Leave a Reply