শ্রীমান চক্রবর্তী, কলকাতা, ২৫ অক্টোবর#
দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর থানা থেকে রুবি হসপিটাল রুটের অটো চালকদের প্রতিদিন অটোতে জ্বালানি রূপে এল.পি.জি. ভরার সমস্যা রয়েই গেছে। প্রতি বারের ন্যায় এ’বছরও উৎসবের মরসূম শুরু হতে না হতেই পেট্রোল-ড্রিজেলের পাম্পগুলোতে অটোর প্রয়োজনীয় জ্বালানি পাওয়ার সমস্যা শুরু হয়ে গেছে বলে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন অটো রুটের চালকদের অভিমত। দক্ষিণ কলকাতার মধ্যে অটোর জ্বালানির জন্য প্রয়োজনীয় ফিলিং কেন্দ্র সর্বসাকুল্যে জন্য মোট ছয় থেকে সাতটি ( গড়িয়া মহামায়াতলা, আনায়রশাহ রোডের উপর তালতলা, রুবি সিমেন্সের পাশে তালবাগানে, বেহালায় হাইড রোড ও অজন্তা সিনামা ও চৌরাস্তার কাছে, এছাড়া টালিগঞ্জ মহাবীরতলায় ১টি ফিলিং সেন্টার হয়েছে) তবে এদের মধ্যে মহাবীরতলার পাম্পে অটোর প্রয়োজনীয় ফিলিং ব্যবস্থা চালু হলেও তা অধিকাংশ সময়েই বন্ধ থাকে। অধিকাংশ সময় সংশ্লিষ্ট রুটের কাছাকাছি পাম্পগুলিতে অটোর জ্বালানির জন্য এল.পি.জি. ফিলিং কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। উপরে উল্লেখিত পাম্পগুলিতে এল.পি.জি. ফিলিং ব্যবস্থা চালু থাকলেও তা অধিকাংশ সময়েই পর্যাপ্ত নয়। ঘন্টার পর ঘন্টা অটো চালকদের পাম্পে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হয়। তারপর আছে বিভিন্ন লোকাল রুটের অটো চালকদের দাদাগিরি। এল.পি.জি. ফিলিং কেন্দ্রের কাছাকাছি রুটের অটো চালকরা লাইন ছাড়াই অটোতে জ্বালানি ভরার সুবিধা নিয়ে থাকে, অন্য দিকে দূরের কোনো রুটের থেকে আসা রুটের অটো চালকদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। আনাশয়রোডের উপর এল.পি.জি. ফিলিং কেন্দ্র এই ধরনের অভিজ্ঞতা প্রায় অন্য যে কোনো রুটের অটো চালকদের রয়েছে।
সরাসরি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ কলকাতার এক ব্যস্ততম রুটের অটো চালক জানালেন অটোতে এল.পি.জি. জ্বালানি ভরার ক্ষেত্রেও পাম্পগুলির কারসাজি রয়েছে। বেশ কয়েকটি ফিলিং কেন্দ্রে অটোতে জ্বালানি ভরার ক্ষেত্রে গ্যাসের মধ্যে বেশ কিছু পরিমাণ হাওয়াও ভরা হয় এর ফলে কেজি প্রতি মাইলেজ কমে যায়। এটা হয় মূলত যখন ফিলিং সেন্টারে গ্যাস লোডিং হয় তখন তার সাথে হাওয়া প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়। এমনিতে কেজি মাইলেজ পাওয়া যায় ২০ থেকে ২২ কিমি। ভালো রকম ফিলিং ও ড্রাইভার ভালো হলে কেজি/ ২৫ কিমি মাইলেজও পাওয়া যায়। বর্তমানে কেজি প্রতি জ্বলানির দাম ৫০.২৫টাকা। এও এক নিঃশব্দ বিপ্লব। মাঝে মধ্যেই এল.পি.জি. দাম বাড়ানো হলেও তা’নিয়ে খবরের কাগজে বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কোন হেডলাইন হয় না। আর বিগত প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময়ে নতুন করে দক্ষিণ কলকাতায় সচল কোন অটোর জেয়ালানির ফিলিং কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। গড়িয়ায় ৪৫ নম্বর রুটের বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ফিলিং কেন্দ্র চালু হতে হতেও আটকে আছে শরিকি ঝামেলায়। শুনছি সেটা শীঘ্রই চালু হবে।
এছাড়া খুচরো সমস্যা তো রয়েছেই। অনেক সময় কেবলমাত্র খুচরোর কারণে প্যাসেঞ্জারদের সাথে আমাদের সম্পর্ক খারাপ হয়। আগে আমরা দোকানে দোকানে খুচরো দিয়ে দিতাম, কিন্তু এখন আমাদের উল্টো খুচরো কিনতে হয় কখনও কখনও, কথাগুলো বললেন পার্থ গায়েন যাদবপুর-রুবিগামী রুটে দীর্ঘদিনের এক অটো চালক। এছাড়া এখন সামনে দু’জন নেওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়াতে উপার্জন যেমন কমেছে, তেমনি বেড়েছে পুলিশি হয়রানি। থানার পুলিশও আজকাল দাঁড়িয়ে কেস দিচ্ছে। প্রতি মাসে আমাদের ই.এম.আই. দিতে হয় ২২০০ টাকা করে, নতুন এল.পি.জি.জ্বালানির অটো ব্যবহারের জন্য। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের দৈনন্দিন ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে।
Leave a Reply