কুশল বসু, কলকাতা, ১৫ আগস্ট। সঙ্গের এপি-র ছবিতে তিব্বতের রাজধানী লাসায় চীনা সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ, ১৪ আগস্ট#
চীন এবং তিব্বতে তিব্বতীদের আত্মাহুতির ঘটনা বেড়ে চলেছে। চীনের সিচুয়ান প্রদেশের আবা অঞ্চলে দুজন তিব্বতী স্বাধীন তিব্বতের দাবিতে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন ১৩ আগস্ট। চীনা নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের নিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা কেমন আছেন তা অজানা। এই নিয়ে ২০১১ সালের মার্চ মাস থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৭ জন তিব্বতী গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হতে উদ্যত হয়েছেন। ‘টিবেটান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ সংগঠনের সূত্র অনুযায়ী, ওই দুজনের একজনের নাম লুংটক, তিনি দক্ষিণ পশ্চিম চীনের কীর্তি মনাস্টারির একজন সন্ন্যাসী। আরেকজন সাধারণ মানুষ, নাম তাসি। এই ঘটনার পরই চীনা পুলিশ যখন ওই জায়গাটি পরিষ্কার করছিল তখন স্থানীয় তিব্বতীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ এক তিব্বতীকে পিটিয়ে মেরে ফেলে বলে অভিযোগ।
একমাস আগে, ১৭ জুলাই ওই কীর্তি মনাস্টারির আরেক সন্ন্যাসী, ১৮ বছর বয়সি লোবসাং লোনজিন নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে স্থানীয় চীনা প্রশাসনিক ভবনের দিকে ‘মুক্ত তিব্বত’ স্লোগান দিতে দিতে হেঁটে যান এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান। মনাস্টারির লোকেরা এসে মৃতদেহটি সরিয়ে নিয়ে যায়। ওইদিনই লোবসাং-এর ঐতিহ্য মেনে জলসমাধি হয়। স্থানীয় ভারখাম শহর থেকে পুলিশ তদন্তে এলে স্থানীয় মানুষ তাদের কীর্তি মনাস্টারির মধ্যে ঢুকতে বাধা দেয়। তখন পুলিশ মনাস্টারির উল্টোদিকে নদীর ওপারে কুচকাওয়াজ করে। স্থানীয় তিব্বতী দোকানপাট ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন বন্ধ ছিল।
এর আগে ২৬ জুন ওই কীর্তি মনাস্টারির এক সন্ন্যাসী লোবসাং সেরিং (২১)-কে চীনা প্রশাসনিক কর্তারা তুলে নিয়ে যায়। তাঁর আত্মীয়রা পুলিশের কাছে তাঁর খোঁজ নিতে গেলে পুলিশ কিছু বলতে পারেনি। লোবসাং সেরিং এই পূর্ব তিব্বতের আবা অঞ্চলের এক গ্রামের ছেলে, খুব কম বয়সে তিনি সন্ন্যাসী হয়েছিলেন। তাঁর বাবা এবং মায়ের নাম তাসি সেরিং এবং চুংকো।
এরও আগে ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর এই কীর্তি মনাস্টারির এক সন্ন্যাসী লোধু (৩৬) গ্রেপ্তার হয়। এই বছরের জুলাই মাসের প্রথম দিকে তাঁর আত্মীয়রা খবর পায়, তিনি ভারখাম শহরের এক জেলে বন্দী হয়ে আছেন। তাঁর তিন বছরের জেলে হয়েছে। কেন তাঁর সাজা, তা জানা যায়নি।
কীর্তি মনাস্টারি থেকে কান্যাক সেরিং এবং লোবসাং ইয়েসি ‘টিবেট পোস্ট ইন্টারন্যাশনাল’ নামক সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিব্বতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল টিবেট নেটওয়র্ক’ জানিয়েছে, তিব্বতে চীনা সেনাবাহিনীর ভয় অগ্রাহ্য করে তিব্বতীরা গণ জমায়েত করছে। পরিস্থিতি বদলাচ্ছে।
Leave a Reply