লোসার উৎসবে কী কী খাওয়া-দাওয়া হয়?
সারাদিন চা, বিয়ার আর হাতে তৈরি স্থানীয় নেশা পানীয় খাওয়া হবে। রাতে সিকাম দিয়ে পিকনিক হবে।
আপনার দেখা ছোটোবেলার লোসার উৎসব আর এখনকার লোসার উৎসবের কোনো পার্থক্য আছে?
কোনো পার্থক্য নাই। শুধু বেশি বিয়ার খাওয়া হয় এখন। আগে আমরাই ঘরে বিয়ার বানাতাম। এখন নিচের থেকে আদিবাসীরাও নাচ গান করতে আসে। আমাদের অনেকে নিচের আদিবাসীদের বিয়ে করেছে।
অনুষ্ঠানটাতে আমরা থাকতে পারব?
হ্যাঁ থাকতে পারবেন। আমাদের ঘরেই থাকার বন্দোবস্ত হবে।
আপনি যে পোশাক পরেছেন, তার নাম কী?
‘খু’। খুকুরা বলে নেপালিতে।
‘খু’ কি প্রতি বছর লোসার উৎসবে আপনারা বানান?
না। বেশিরভাগ পরিবারেই থাকে। খুব অল্প লোক নতুন করে বানায়।
আপনি কী কাজ করেন?
চাষ করি। পাহাড়ের শুকনো জমিতে আদা চাষ করি। যখন আদা চাষ থাকে না, তখন ভুটানে লেবারি করি। এখান থেকে অনেকে ভুটানে লেবারি করতে যায়।
ভুটানে যারা লেবারি করতে যায়, তারা লোসার উৎসবের সময় এখানে আসে?
সবাই আসে। যারা শহরে চাকরি করতে যায়, তারাও আসে। দু-চারদিনের জন্য ছুটি নিয়ে।
এখানে আপনাদের কি কোনও সমস্যা আছে?
এখানে চাষবাস বেশি হয় না। আগে কমলা হত। সরকার কমলা চাষ বন্ধ করে দিল। আগে কমলা বিক্রি করে আমাদের তিরিশ চল্লিশ হাজার টাকা লাভ হত। তখন কেউ লেবারি করতে বাইরে যেত না। বারো চোদ্দ বছর হল কমলা চাষ বন্ধ। আমাদের বড়ো সমস্যা জলের সমস্যা। সজলধারা জল প্রকল্পের টাকা শেষ, কিন্তু আমরা জল পাই না। কারণ কালচিনি ব্লকের নেতা/ঠিকাদাররা সব খেয়ে ফেলে, আমাদের কিছু জানায় না (ব্লক অফিস সমতল ডুয়ার্সে)।
সরকার কমলা চাষ বন্ধ করল কেন?
কিছু কমলা গাছে মড়ক লাগল। সরকার থেকে সব কমলা গাছ কেটে দিল।
আপনারা কিছু বললেন না?
বললাম তো। কালচিনি ব্লকের বিডিও অফিস ঘেরাও করলাম। কিন্তু সরকার আমাদের ধরে কেস দিয়ে দিল। জেল খাটলাম। তারপর আর পারলাম না।
বক্সা দুর্গটা ভেঙে যাচ্ছে। তার জন্য আপনারা কিছু ভাবছেন না?
আমরা ভাবি। কিন্তু কী করব? টাকা সরকার দেয়। কালচিনি ব্লকের ঠিকাদাররা খরচ করে। আমাদের ডাকে না। আমরা কমিটি করে এবার জঙ্গল পরিষ্কার করছি। কিন্তু আমাদের সব দায়িত্ব দেয় না।
Leave a Reply