• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

‘ডি-ভোটার’-এর ফাঁস থেকে মুক্তি কোন পথে?

October 14, 2012 admin Leave a Comment

বিজয়া করসোম, শিলচর, ১৪ অক্টোবর#

ডি-ভোটার। অসমবাসীর কাছে শব্দদুটি ভীষণ আতঙ্কের বিষয়। না, সারা ভারতে ডি-ভোটারের কোনো নজির নেই। আর এ নিয়ে যদি দিশপুরের বড়োকর্তাদের প্রশ্ন করেন, তখন শুনবেন, ডি-ভোটার চিহ্নিত করেছে ভারতীয় নির্বাচন কমিশন। যেহেতু এটি একটি সাংবিধানিক কমিশন, তাই এর কাজে হস্তক্ষেপ বা নির্দেশ দেওয়া বিধিসম্মত নয় এবং তা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারের বাইরে। প্রায় এক বছর আগে সিআরপিসি (নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি)-র এক প্রতিনিধিদল দিল্লির নির্বাচন কমিশনের কাছে যায় এবং কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে। সদস্যরা আকাশ থেকে পড়ে। তারা জানায়, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না। পরে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনাকালে একজন নিম্নবর্গের আধিকারিক জানান, কয়েকবছর আগে নির্বাচন কমিশন অসমে লক্ষাধিক নাগরিককে ডি-ভোটার হিসেবে চিহ্নিত করে এবং এ যাবৎ তারা ডি-ভোটার হিসেবে রয়ে গেছে। এর কোনো সুরাহা হয়নি এবং এই তালিকা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। ব্যস্‌। এই পর্যন্তই। তা, রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারের বাইরে থাকা একটি বিষয় সম্বন্ধে রাজনৈতিক নেতারা নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দেন কেন? অসমের মুখ্যমন্ত্রী যখনই এই বক্তব্য রাখেন, তখনই বলেন, ভোটার তালিকায় যাদের নাম ডি-চিহ্নিত, তাদের বেশিরভাগই ভারতীয়। কী করে তিনি তা জানলেন? আর জানলেনই যদি, তবে কেন তাদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে মেনে নিয়ে সব নাগরিক অধিকার দেন না? তারা জমি কেনাবেচা, সরকারি চাকরি, ভোটাধিকার প্রয়োগ ইত্যাদি থেকে বঞ্চিত থাকে কীভাবে? তা-ও বছরের পর বছর?
এ রাজ্যের মানুষ যখন ডি-ভোটার ইস্যুতে ভীষণ ভীত হয়ে পড়েছে, আছড়ে পড়েছে কয়েকটি সংবাদ। ক) ২৮ সেপ্টেম্বর একটি খবরের শিরোনাম ছিল : অভিযুক্তের বক্তব্য না শুনেই রায় দিতে পারে ট্রাইবুনাল। সেখানে বিস্তারিতভাবে পাই, বিদেশির তকমা লাগানো সংখ্যালঘুদের আখেরে বিচারের সুযোগ থেকেই বঞ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অসমের বিদেশি সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে গিয়ে ‘অভিযুক্ত’দের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগই কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ১৯৬৪ সালের ‘ফরেনার্স (ট্রাইবুনাল) অর্ডার’ সংশোধন করে কেন্দ্র বিদেশি ট্রাইবুনালকে অধিক ক্ষমতা দিয়েছে। যার ফলে অভিযুক্তের সাক্ষীর বক্তব্য না শুনেই রায় ঘোষণা করতে পারে ট্রাইবুনাল। অভিযুক্তের পক্ষ থেকে সরকারের সাক্ষীকে ‘এগজামিন’ করার সুযোগও নাও দিতে পারেন ট্রাইবুনালের বিচারক। দেশের বিচার প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, শুধু বিচার দিলেই চলবে না, বিচার যে হয়েছে, তাও বোঝাতে হবে। কিন্তু ১৯৬৪ সালের ‘ফরেনার্স (ট্রাইবুনাল) অর্ডার’ সংশোধন করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সম্ভবত তা মাথায় রাখেনি। তাই বিদেশি বলে কাউকে নোটিশ জারির পর সেই অভিযুক্তকে বিচার প্রক্রিয়ায় সুযোগ দেওয়ার বিষয়টিই কার্যত তুলে দেওয়া হয়েছে। খ) সন্দেহজনক নাগরিককে ট্রাইবুনালের নোটিশ পাবার দশদিনের মধ্যে নাগরিকত্বের প্রমাণ দাখিল করতে হবে। অন্যথায় সেই সন্দেহজনক বিদেশি ব্যক্তির বিচার একতরফাভাবে হবে ও তাকে বিদেশি চিহ্নিত করা হবে। গ) সন্দেহজনক ব্যক্তির প্রমাণ গ্রহণের বদলে পুলিশের দ্বারা দায়্বের করা অভিযোগের ভিত্তিতেও ট্রাইবুনাল অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে বিদেশে ঠেলে দেওয়ার আদেশ জারি করতে পারেন।
প্রশ্ন হল, মাত্র দশদিনের মধ্যে জরুরি নথিপত্র দেওয়া সম্ভব? জীবন-জীবিকার টানে মানুষ আজ ক-ত ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। জরুরি নথিপত্র খোঁজ করা, জোগাড় করা, এসব নির্দিষ্ট কার্যালয়ে জমা দেওয়া চাট্টিখানি কথা? সম্ভব তা দ-শ দিনে করে ফেলা? আরও এক ভয়ঙ্কর কথা হল : পুলিশের দ্বারা দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেও যে কেউ বিদেশি হয়ে যেতে পারে। ভাবুন। কী মারাত্মক কথা!
খুব সম্ভবত গত বছরই বেরিয়েছিল মানিক দাসের ঘটনার বিবরণ। তিনি বলেছিলেন : ‘এমন লাঞ্ছনা, অপমান, মানসিক যন্ত্রণা পেয়েছি, তা বলার মতো নয়। বাড়িতে স্ত্রী, পুত্র, কন্যাকে রেখে অজানা স্থানে ছিলাম ক-দিন। জোটেনি খাবারও। জনা কয়েক অসম পুলিশের বর্বরতা ও অমানবিক অত্যাচারে তখন দিশেহারা। এ ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। … দীর্ঘ চার বছর আইনি লড়াইয়ের পর জয়ী হলাম মামলায়। কিন্তু গত চার বছর বাংলাদেশি তকমা দিয়ে অপমান ও লাঞ্ছনার যে সমস্ত ঘটনা, তা ক্ষতচিহ্ন হয়ে থাকবে আজীবন।’ প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আদালতের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার পর আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়ে এই মন্তব্য করলেন বাহান্ন বছর বয়সি কলা ব্যবসায়ী মানিক দাস। ২০০৬ সালে বাংলাদেশি নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয় মানিকের হাতে। স্ত্রী, দুই পুত্র, দুই কন্যার নামেও একই নোটিশ। এ ব্যাপারে মানিক দাসের কাছ থেকে কোনো নথি সংগ্রহ করেনি পুলিশ।
২০১২ সালের জুন মাসের ঘটনা। দেশে জন্মেও বিদেশি নির্ধারণ ট্রাইবুনালের ফতোয়ায় গায়ে তকমা লেগেছিল ‘বিদেশি’ বলে। ট্রাইবুনালের একতরফা রায়ের পর চার বছর ধরে যন্ত্রণায় ছটফট করতেন তিনি। কাছাড় জেলার কাটিগাড়া থানার সুবোধনগর গ্রামের যুবক অর্জুন নমশূদ্র। আপিল মামলা যত এগোচ্ছিল, সুস্থ হচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সচিত্র ভোটার তালিকার জন্য নির্বাচন কর্তারা বাড়ির আঠারো ঊর্ধ সবার কাছ থেকে কাগজপত্র চেয়ে নিলেও অর্জুনের খোঁজ করেনি। কারণ? সর্বশেষ ভোটার তালিকায় তাকে ডাউটফুল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবার আর সইতে পারেননি। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এই তরুণ। অর্জুনের মা আকলরানি নমশূদ্র ১৯৬৯ সালের কাগজপত্র দেখিয়ে প্রশ্ন রাখেন : যে ছেলে কোনোদিন বাংলাদেশে একবারের জন্যও গেল না, তাকে কী করে বাংলাদেশে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়?
এ বিষয়ে আইনজীবী অনুপ চৌধুরির মতামত চাওয়া হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে সমন জারি হলে অর্জুন ২০০৭ সালের ৩ মে যথারীতি আদালতে হাজির হন। কিন্তু পরবর্তী তারিখ আর জানতে পারেননি। ২০০৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি একতরফাভাবে তাঁকে বিদেশি বলে রায় দেন ফরেনার্স ট্রাইবুনালের সদস্য এ কে চৌধুরি। রায় পড়েই অর্জুন জানতে পারেন, নাগাড়ে অনুপস্থিত থাকার দরুন একতরফা রায় হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি (সিআরপিসি) সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থ বলেন, ‘অর্জুনকে আত্মহত্যায় বাধ্য করা হয়েছে। ভারতে জন্মেও তাঁকে দেশে থাকতে না দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন। কাগজপত্র না দেখেই অর্জুনের নাম ফরেনার্স ট্রাইবুনালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গরিব মানুষ আইন আদালত বোঝে না বলে তাদের গায়ে অহেতুক ‘বাংলাদেশি’ তকমা এঁটে হয়রানি করা হচ্ছে’।
অর্জুন যদি জানতে পারতেন জীবনুদ্দিনের কথা? জানার কোনো সুযোগ অর্জুনের পাবার কথা নয়। কারণ জীবনুদ্দিনের কথা আমরাই জানতে পেরেছি গত মাসের ত্রিশ তারিখ। কী সেটা? খবরটা ওই দিনেই বেরিয়েছে : বিদেশি ট্রাইবুনালের বিচারে তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করা হয়েছিল। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারেও বহাল রাখা হয় সেই নির্দেশ। শেষ পর্যন্ত সেই ‘বিদেশি’ জীবনুদ্দিনই স্বদেশির মর্যাদা পেয়েছেন ট্রাইবুনালের পুনর্বিচারে। … তাই প্রকৃত ভারতীয় নাগরিককেই যে ‘বিদেশি’ সাজিয়ে বহিষ্কারের পথ প্রশস্ত করেছিল বিদেশি শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, জীবনুদ্দিন এর নতুন নজির।
কয়েকটি জরুরি তথ্য : ক) অসমে কয়েক লক্ষ ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ডি-ভোটার। খ) ১১ জুলাই ২০১১ অসমের বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে এ রাজ্যে ডি-ভোটারের সংখ্যা, ২,২১,৯৩৬। গ) বর্তমানে লক্ষাধিক মামলা আসামের ৩৬টি ফরেনার্স ট্রাইবুনালে বিচারাধীন। ঘ) ট্রাইবুনালের অধিকাংশেরই পরিকাঠামো নেই। বিচারপতিও নেই। অর্থাভাবে এগুলি ধুঁকছে। ঙ) প্রফুল্ল মহন্ত প্রচার করেছিলেন, অসমে ৩০-৪০-৫০ লক্ষের বেশি ডি-ভোটার আছে। সংখ্যাগুলি তাঁরই বিভিন্ন সময়ে দেওয়া। অথচ, দু-দুবার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে তিনি কয়েক হাজার মানুষকেও ডি-ভোটার চিহ্নিত করতে পারেননি। চ) রাজ্যপাল হিসেবে এস কে সিনহা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট যে রিপোর্ট পেশ করেন, তা অবাস্তব ও পক্ষপাতদুষ্ট।
উপসংহারে বলতে চাই, বরাক উপত্যকার প্রাবন্ধিক বিনোদলাল চক্রবর্তীর ভাষায় : ‘আমরাও চাই না অসম বা ভারতের অন্যান্য স্থানে অবৈধ নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ঘটুক। অনুপ্রবেশ বন্ধ হোক। প্রকৃত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে বহিষ্কার করা হোক। কিন্তু অনুপ্রবেশকারীর সংজ্ঞা নির্ধারণে যেন নির্যাতিত ও নিরাপত্তাহীনতার শিকার হওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের একচোখে দেখা না হয়। … অসমে প্রতিটি ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু বাঙালি সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব নিয়ে পদে পদে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হচ্ছে। তার ইতি কবে হবে তা কেউ হলফ করে বলতে অসমর্থ। অসমের বাইরে অসমের বাঙালিদের বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী হিসেবে উগ্র অসমীয়াপন্থীদের প্রচার অনেকটাই সফল। … অসমের বাইরে আমাদের অবস্থান ও সমস্যা সম্পর্কে সঠিক তথ্যের জোরদার প্রচার বিশেষ প্রয়োজন। …’

মানবাধিকার আসাম, জাতিদাঙ্গা, বোড়ো, মুসলিম

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in