মঞ্জু চক্রবর্তী, হালতু, ১৩ নভেম্বর#
এখন থেকে সাধারণ স্বল্প উপার্জকারীরা আর জাতীয় ব্যাঙ্কে মাসিক সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা জমাতে পারবে না। দিন কয়েক আগে আমি ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের ঢাকুরিয়া শাখায় প্রত্যেক বছরের মতো এবার আগের বছরের মাসিক সঞ্চয়ের জমা তোলার সময়, পরের বছরের জন্য ২০০ টাকা করে জমার কথা বলি, তখন আমাকে পরিচিত কাউন্টারের দিদি জানান এখন থেকে ৫০০ টাকার কমে মাসিক সঞ্চয় করা যাবে না। আমি বেশ অস্বস্তি বোধ করি এবং অবাকও হই।
এর পরে আমি আমার পরিচিত ব্যাঙ্কের মল্লিকবাবুর কাছে বিষয়টি জানতে চাই। তিনিও বলেন, হ্যাঁ এখন এটাই নিয়ম হয়েছে, এটাই রাখতে হবে। এবং সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে মাসে মাসে কাটিয়ে নিতে হয়, তাহলে ৫১ টাকা বেশি জমা দিতে হবে। ব্যাঙ্কের এই অদ্ভুত নিয়মে আমার মতো স্বল্প উপার্জনকারীর পক্ষে আর হয়ত মাসিক সঞ্চয় করা সম্ভব হবে না।
আমার মনে পড়ে গেল, এই ব্যাঙ্কেই আমি ৫ নভেম্বর ১৯৭৬ তারিখে প্রথম সেভিংস-এ অ্যাকাউন্ট করি। এর কিছু দিন পর থেকে আমি ১৫টাকা করে মাসিক সঞ্চয়ের প্রকল্প করি। এর পর থেকে একটু একটু করে আমি এই মাসিক সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়াতে থাকি। মাঝে কিছু বছর আমি ১০০, ২০০ এমনকি ৩০০ টাকা করেও মাসিক সঞ্চয়ে জমা করি, কোনোটা এক বছর কোনোটা দুই বছর, কোনোটা ৩ বছরের জন্য। বছর দু’য়েক আগে আমার পরিবারের মূল উপার্জনকারী গত হওয়ায় আমার মাসিক সঞ্চয়ের টাকা রাখার পরিমাণ কমে আসে। এখন থেকে আমি হয়ত আর মাসিক সঞ্চয়ে টাকা রাখতে পারব না।
টিভিতে দেখি খবরের কাগজে পড়ি যে সাধারণ মানুষের জন্য সরকার কত কিছু করছে। সরকারের সব কাজই বড়লোক জন্য। এখন আবার গ্যাসের ভর্তুকির জন্য ব্যাঙ্কের প্রশংসাপত্র লাগবে। লাগবে আঁধার কার্ডও। সে তো আসলে কি বুঝেই উঠতে পারলাম না। এত কার্ড রাখাও মুশকিল। সাধারণের পক্ষে এখন দিন চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
Leave a Reply