• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

জলসংবাদ ১ : ‘এই যে ভোট আসবার সময় হয়ে আসছে, এইবার দেবে জলের গাড়ি’

April 10, 2015 admin Leave a Comment

জিতেন নন্দী, নয়াবস্তি, মহেশতলা, ২৭ মার্চ#

ইটভাটা থেকে জল নিয়ে ফিরছে নয়াবস্তির মেয়েরা। ছবি জিতেন নন্দীর তোলা।
ইটভাটা থেকে জল নিয়ে ফিরছে নয়াবস্তির মেয়েরা। ছবি জিতেন নন্দীর তোলা।

মেটিয়াবুরুজের আকড়া রোডের শেষ প্রান্ত থেকে রাস্তা যেখানে মহেশতলা এলাকার দিকে বাঁক নিচ্ছে, জায়গাটার নাম আকড়া ফটক। কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের ১৪০নং ওয়ার্ড পার করেই শুরু হচ্ছে মহেশতলা পুরসভার ৭নং ওয়ার্ড। আকড়া ফটকে গঙ্গার পার বরাবর একের পর এক ইটভাঁটা। ২৬ মার্চ দুপুর পৌনে বারোটা নাগাদ আমরা পাঁচজন রওনা হলাম নয়াবস্তির উদ্দেশ্যে। আমার সঙ্গে সাইকেল ছিল। ফটকের বাজার ছাড়িয়ে খানিকটা ফুটিফাটা পিচের রাস্তা। তারপরেই মাটির রাস্তা। ইটের গুঁড়ো আর ধুলোময় উঁচু-নিচু রাস্তার মধ্যে দিয়ে ধুলো খেতে খেতে চলেছি। মাথার ওপর চড়া রোদ। এক-একটা লরি আর মোটরবাইক যাচ্ছে আমাদের সারা শরীরে ধুলো ছড়িয়ে দিয়ে। আমাদের একজন বয়স্ক সঙ্গী আর এগোতে পারলেন না। আমার সাইকেলটা নিয়ে তাঁকে ফিরে যেতে হল। পথের দুপাশে সামান্য দূরে দূরে ইটভাঁটা আর কাছে সার দিয়ে ভাঁটা-শ্রমিকদের ইটের ঘর। ঘরের মাথার টালিগুলো যেন আলগা, কোথাও কোথাও ঘর যেন মাটিতে বসে যাচ্ছে আর মাথার টালির চাল যেন পড়ো পড়ো। মিনিট পনেরো হাঁটার পর দুপাশে হালকা ঝোপ আর একটানা পায়খানার দুর্গন্ধ। আমরা এবার নয়াবস্তিতে ঢুকছি। হঠাৎ যেন একটা ঘিঞ্জি পাড়াগাঁ। বসতি-ঘরগুলো বেশিরভাগ মাটির। দোকানঘরগুলো পাকা। তবে ইটের ব্যবহার রয়েছে। যেমন, দুই বাড়ির মাঝের সরু গলিতে কোথাও ইট পাতা রয়েছে।

রানী সিং, স্কুলছাত্রী
আমি খাবার জল ১১নং ইটভাঁটার চাপাকল থেকে আনি। সকাল ৯টার সময় যাই একবার। যদি পড়া থাকে, সকালে আর যাই না। তাহলে বিকালে দু-তিনবার যেতে হয়। আমাদের পাড়ার ভিড় থাকে। আবার ভাঁটার লেবার যারা কাজ করে তাদেরও ভিড় থাকে কলে। ভাঁটার মালিকের কল। আমাদের দাঁড় করিয়ে রেখে ওরা স্নান করবে, বাসন ধোবে, কাপড় কাচবে। ওদের খতম হয়ে গেলে তারপর আমাদের দেবে। এক-একবার জলের জন্য আধঘণ্টা লেগে যায়। বাড়ির অন্য কাজের জন্য খালে গিয়ে চান করা হয়, কাজ সারা হয়। যখন জোয়ার থাকে গঙ্গার জল আসে। এখন খালে জল নেই, এবারে আসবে। বিকেল চারটে-পাঁচটার মধ্যে চলে যাবে। ভাঁটায় ইট বানানোর জন্য যারা মাটি তোলে, ওখানে জল পাওয়া যায়। মোটর দিয়ে জল তোলে। আমি রবীন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছি। ওখানে জলের ভালো ব্যবস্থা আছে। শিক্ষিকাদের আলাদা বাথরুম আছে, মেয়েদের আলাদা। বর্ষাকালে আমাদের যাতায়াতের রাস্তায় জল জমে, কাদা হয়ে যায়। আমরা বড়ো বলে এখন অসুবিধা হয় না। বাচ্চাদের অসুবিধা হয়। বৃষ্টির জলের পাশাপাশি খালের জল বাড়িতে ঢুকে যায়। যতক্ষণ জোয়ারের জল থাকে, ততক্ষণ ঘর থেকে বেরোনো যায় না। ঘরে ঘরে অসুখ-বিসুখ বেড়ে যায়। জল যাওয়ার কোনো উপায় নেই। সরু নালাগুলোতে কালো জল জমে থাকে।

ওজিদা বিবি, বাসিন্দা
১১নং ইটভাঁটার চাপাকলে জল আনতে যেতে দশ-পনেরো মিনিট লেগে যায়। সেখানে সবার কাজ কাম শেষ হয়ে যাবে, তবে আমাদের জল পাওয়া যাবে। এক ঘণ্টা লেগে যায় জল আনতে। আমরা চিঠি লিখে জমা করেছি জলের জন্য। এইভাবে কাজ চলছে কোনোরকমে। যে যখন সুযোগ পায় যায়। আমি কখনও সক্কালবেলা উঠেই চলে যাই। অনেকে বিকেলে যখন আজান দেয় সেই সময়টায় যায়, তখন ভাঁটার লোকে কাজ করছে। ওরা ঝগড়া করে, সময়ে গালাগাল করে। কী করা যাবে? আমাদের তো প্রয়োজন, গালাগাল শুনেও জল আনতে হবে। কিছুদিন জল দিচ্ছিল না, তালা মেরে দিয়েছিল। যখন দেখি ওদের ছুটি হয়, তালাটা খুলে দেয়, তখন আমরা এক-এক করে আনি। কল একটা বসেছিল। রাইট ট্র্যাক থেকে দিয়েছিল। (পুরসভা থেকে আমাদের বলল, কল এসেছে, কোথায় কোথায় দেওয়া যায়? একটা ষোলোবিঘাতে বসানো হল। সেটা থেকে লোকে জল পাচ্ছে। আর একটা আমাদের কথা মতো নয়াবস্তিতে বসানো হল। কিন্তু এখানে জলের লেয়ার পাচ্ছিল না। তাই কলটা নষ্ট হয়ে গেল।) কিন্তু সেটাতে জলই উঠছে না। কী একটা যন্তর উল্টো বসিয়ে দিয়েছে। বলছে, তোমরা যত টাকা খরচা করেছ, তার ডবল খরচা হবে এখন। তার আগে মাঠটার মুখে একটা কল বসিয়েছিল। তার পানিতে থালা-বাসন, গা ধোয়া যেত। আর একটা কল বসল, যখন আমরা অ্যাপ্লাই করেছিলাম, পার্টির তরফ থেকে পাইপ নিয়ে এসে বসাল, তার মুখে কল লাগিয়ে দিল। জল কিন্তু এল না। আমরা একদিন রাত ন-টার পরে গেলাম পার্টির কাছে। তখন জলটা ছাড়ল। এক বছর পরে জলটা এল। একটা কলে এত বড়ো পাড়ায় জল হচ্ছে না। মারপিট হতে লাগল। ভোটের পরে আর সেই কলেও জল আসছে না। এখন শুনছি সামনের ভোটের আগেই জলের ব্যবস্থা হবে। আবার ওই হবে, ভোট পরে জল যাবে।
অন্য কাজ কামের জন্য জল আনতে আমরা যাই অনেক দূরে। এখানে একটা খাল আছে, জোয়ারের সময় তাতে জল আসে। যে যতটা পারে সেখানে কাজ সেরে নিল। যে টাইম পায় না, সে আরও দূরে চলে গেল। পাড়ার বাইরের কিছু মানুষ ওই জলটাতেই ফিটকিরি মেরে খায়। ওরা বিহারি মানুষ, বলে, কোথায় যাব জলের জন্য? ওরা পারে। আমরা খাই না।
ইট তৈরির জন্য অনেকে জল তুলে রাখে ছোটো ছোটো পুকুর মতো করে। তাতেও আমরা কাজ সারি কখনও।
নবরত্ন স্কুলে জলের কলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। চাপাকল আছে। বাথরুম আছে। আগে ছিল না। খিচুরি স্কুলে জলের কোনো ব্যবস্থা নেই। বাদি জলে (মানে যে জলে থালা-বাসন ধোয়া হয়) রান্না হয়।
বর্ষাকালে জল যাওয়ার রাস্তা সেরকম নেই। নালায় নোংরা জল জমে থাকে। লোকে কোদাল দিয়ে খুঁড়ে খুঁড়ে জলটাকে পাস করে। কত করবে? যতদিন বর্ষা থাকে জল জমে থাকে। বাচ্চাদের পায়েতে ঘা হয়ে যায়।
এই যে ভোট আসবার সময় হয়ে আসছে, এইবার দেবে জলের গাড়ি। পার্টির তরফ থেকে এক-দুবার গাড়ি আসবে। তখন লাইন দিয়ে জল নিতে হয়। এমনিতে কোনো অনুষ্ঠান-বাড়ি হলে ট্যাঙ্কির জল কিনে নিয়ে আসে, জনতার জন্য তো আসে না।

মানবাধিকার জলসঙ্কট, জলের খবর, জলের গাড়ি, নয়াবস্তি, মহেশতলা, মেটিয়ামুরুজ

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in