১১ অক্টোবর, জিতেন নন্দী#
আজ কলকাতার বউবাজার অঞ্চলে প্রয়াত প্রতাপ চন্দ্র চন্দের বাড়িতে ‘জনতার নয়া সমাচার’ পত্রিকার একটি পাঠকসভার আয়োজন করা হয়েছিল। এতে যাঁরা অংশ নেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন ধারা ও চিন্তার মানুষ। প্রবীণদের সংখ্যাই বেশি ছিল। সকলেই ‘জনতার নয়া সমাচার’ পত্রিকার পাঠক, কেউ কেউ লেখকও বটে। এছাড়া ছিলেন প্রেসকর্মী ও অন্যান্য কাজে সহযোগীরা। এঁদের সকলের সাহায্য নিয়ে প্রবীণ চিকিৎসক ও রাজনৈতিক কর্মী সন্মথ নাথ ঘোষ দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে এই পত্রিকাটি প্রকাশ করে চলেছেন। সভার আলাপচারিতা থেকে জানা যায়, ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটি ছিল কিছুটা অনিয়মিত। এর পর থেকে প্রতি মাসে সম্পাদক একটানা পত্রিকাটি প্রকাশ করে চলেছেন।
এই পত্রিকায় সন্মথ নাথ ঘোষ যেমন বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয়ে নিজের মত ব্যক্ত করেছেন, নিজের আদর্শনৈতিক অবস্থান প্রকাশ করেছেন, একই সঙ্গে অন্য চিন্তার লেখাও নিয়মিতভাবে ছাপিয়েছেন। পত্রিকায় অন্যের মত ধারণ করার এই দিকটি নিয়ে উল্লেখ করেন অরুণ পাল এবং রতন খাসনবিশ।
আজ ছিল জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মদিন। কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে, জয়প্রকাশজী বিভিন্ন আপাত-বিচ্ছিন্ন আন্দোলনকে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করেছিলেন। তার প্রতিফলন ঘটেছিল ‘জনতার নয়া সমাচার’-এ। একটা তৃতীয় আন্দোলনের মুখপত্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল এই পত্রিকা। আজ তার সম্পাদক প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছেছেন বটে, কিন্তু আলোচনা করা দরকার, কীভাবে কাগজটাকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে ‘গঙ্গা মুক্তি আন্দোলন’-এর কথা; দলহীন গণতন্ত্রের প্রসঙ্গ। পাঠকদের মধ্যে ছিল অন্যান্য ছোটো ছোটো কাগজের কর্মী ও সম্পাদকেরাও। উঠে আসে ‘লোকসেবক’ ও ‘এসো মুক্ত করো’ পত্রিকার কথা। সন্মথ নাথ ঘোষ একাধারে সমাজবাদী রাজনীতির অনুগামী, বাস্তুহারাদের কলোনি আন্দোলনের নেতা এবং পানিহাটি অঞ্চলের জনপ্রিয় একজন চিকিৎসক। এত কাজের মাঝেও তিনি নিজে পড়াশুনা করে পত্রিকা প্রকাশের কাজটি নিয়মিতভাবে চালিয়ে গেছেন এতদিন। সকলেই চান পত্রিকাটি বিষয়বৈচিত্র্য বাড়িয়ে আরও ভালোভাবে প্রকাশিত হোক। এর জন্য একটি প্রেসিডিয়াম ও সম্পাদকমণ্ডলী গড়ে তোলার প্রস্তাব আসে। সন্দীপ দাস সভা শেষে সুভাষচন্দ্র বসুর একটি মন্তব্যকে উল্লেখ করে বলেন, ‘নতুন মানুষ না তৈরি করে নতুন প্রোগ্রাম কীভাবে হবে?’
Leave a Reply