যোগীনের পাঠানো দি-হিন্দু-র রিপোর্ট থেকে, ২৮ মার্চ#
আধা-বিচারালয় ‘ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইবুনাল’ ছত্তিশগড়ের হাসদেও-আরান্দ বনাঞ্চলের পার্সা পূর্ব এবং কান্তে-বাসন কয়লা-ব্লকের খননের পরিবেশগত ছাড়পত্র বাতিল করে দিল। ২৪ মার্চ এই রায় দেয় ট্রাইবুনাল। উল্লেখ্য, প্রায় একবছর ধরে দড়ি টানাটানির পর, ২০১১ সালের জুন মাসে এই দুটি ব্লক এবং তারা নামে আর একটি ব্লকের এই ছাড়পত্র দেয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক। এই ছাড়পত্র দেবার সময় নিজেরই মন্ত্রকের ‘বন উপদেষ্টা কমিটি’র পরামর্শ মানেন নি তৎকালীন বনমন্ত্রী জয়রাম রমেশ।
উল্লেখ্য, এই ব্লকগুলিতে গুজরাতের বিদ্যুৎ কর্পোরেট আদানি এবং রাজস্থানের রাজ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন নিগমের যৌথ উদ্যোগে কয়লা খনন করার কথা ছিল। ছত্তিশগড়ের হাসদেও-আরান্দ বনাঞ্চলটি জৈব বৈচিত্রে অতুলনীয়, আবার এর তলাতেই রয়েছে কয়লার বিপুল ভাণ্ডার। কয়লা মন্ত্রক এই বনাঞ্চলের নিচের প্রায় সমস্ত কয়লা-ব্লকই কাউকে না কাউকে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু খনন শুরু করতে গেলে প্রয়োজন পরিবেশ ছাড়পত্র। এই বনাঞ্চলের প্রায় দু-হাজার হেক্টর এলাকার বন সাফ করতে হবে পার্সা পূর্ব এবং কান্তে-বাসন কয়লা-ব্লকের খননে।
ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইবুনাল তার রায়ে জানিয়েছে, তৎকালীন পরিবেশমন্ত্রী ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য যে কারণগুলি দেখিয়েছেন, তাতে তার ‘মানব-কেন্দ্রিক’ মনোভাবের পরিচয় রয়েছে, এবং তিনি এই খননের ফলে পরিবেশের ও বাস্তুতন্ত্রের কী ক্ষতি হতে পারে, তা মাথায় রাখেননি। জয়রাম রমেশ ছাড়পত্র দেওয়ার সময় যে যে কারণগুলি দেখিয়েছিলেন, তার মধ্যে রয়েছে, এই কয়লা একটি ‘সুপার-ক্রিটিক্যাল’ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজে লাগবে, যার ফলে কম কয়লায় বেশি বিদ্যুৎ তৈরি হবে; এটি বনাঞ্চলটির একদম ধারে অবস্থিত এবং মূল বনাঞ্চল ও এর মাঝে একটি পাহাড় রয়েছে; এই ছাড়পত্র দেওয়ার বিনিময়ে ছত্তিশগড় সরকার হাসদেও-আরান্দ অঞ্চলে আর কোনও কয়লা-ব্লক থাকবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে; বৃহত্তর উন্নয়নের দিকে তাকিয়ে এই ছাড়পত্র প্রভৃতি।
উল্লেখ্য, এই ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য পরিবেশমন্ত্রকের ওপর চাপ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রক, বিদ্যুৎ মন্ত্রক, কয়লা মন্ত্রক এবং রাজস্থান ও ছত্তিশগড় সরকার। ট্রাইবুনালের রায়ের পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তৎকালীন বন ও পরিবেশমন্ত্রী রমেশ জানান, ওই দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা অন্তত তিনবার তাঁর সাথে দেখা করেছিলেন বা চিঠি লিখেছিলেন এই ছাড়পত্রের জন্য। তিনি এও জানান, আধা-বিচারালয় স্তরের এই ‘ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইবুনাল’-ও তার ভাবনা ও পরিশ্রমের ফসল।
Leave a Reply