কুশল বসু, কলকাতা, ৩০ জানুয়ারি#
চীন অধিকৃত তিব্বতের চুসুল জেল-এ ৬ বছর ধরে বন্দী ছিলেন ৩৩ বছর বয়সি তেনজিন চোয়েডাক। ছাড়া পাওয়ার কয়েকদিনের মাথায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর, গত ৫ ডিসেম্বর ২০১৪। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে গোসুল লোবসাঙ নামে রাজনৈতিক বন্দীরও একইভাবে ছাড়া পাবার কয়েকদিনের মাথায় মৃত্যু হয়েছিল।
২০০৪ সালে তেনজিন চোয়েডাক নির্বাসন থেকে তিব্বতের রাজধানী লাসায় ফিরে আসেন। তিনি তিব্বতের গ্রামগুলিতে একটি অসরকারি সংগঠনের হয়ে পরিবেশ এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজকর্ম শুরু করেন। ২০০৮ সালের মার্চ মাসে তিব্বতের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার অপরাধে এপ্রিল মাসে তাঁকে গ্রেফতার করে চীনা পুলিশ। কয়েক মাস ধরে অত্যাচার করার পর সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর পনেরো বছরের জেলবাস-এর সাজা হয়। জেল-এ থাকাকালীন অত্যাচারে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে যায়, মাথায় আঘাত লেগে বমি রোগ শুরু হয়। ধীরে ধীরে তিনি চেনা লোকজনকে ভুলে যেতে শুরু করেন। অন্তত দুটি হাসপাতাল জানিয়ে দেয়, মারা যেতে বসেছেন তেনজিন। তখন তেনজিনের আত্মীয়স্বজন তাঁর আগাম মুক্তির আবেদন করে। চীনা কর্তৃপক্ষ ২ ডিসেম্বর ছেড়ে দেয় তাঁকে। ৫ ডিসেম্বর মারা যায় তেনজিন। হাসপাতালে মৃত্যুর সময়ও তাঁর হাত পা বাঁধা ছিল, ঘিরে ছিল চারজন পুলিশ। মৃত্যুর সময় তেনজিন তিব্বতের জাতীয় সঙ্গীত গাইছিলেন।
তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাবা, নির্বাসনে থাকা প্রাক্তন স্বাধীনতা সংগ্রামী, জানান, ‘আমি সবসময় প্রার্থনা করি ঈশ্বরের কাছে, আমি যেন আর চীনের দখলে থাকা তিব্বতে না জন্মাই। ওরা আমার পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এবার আমার একমাত্র ছেলেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। তবু আমার কোনো খেদ নেই। বরং আমি গর্বিত, আমি এবং আমার ছেলে তিব্বতি স্বাধীনতার সংগ্রামে সামান্য হলেও ভূমিকা রাখতে পেরেছি।’
Leave a Reply