৯ নভেম্বর, জিতেন নন্দী, মুম্বই#
আজ রবিবার সন্ধ্যায় মুম্বই পৌঁছে আমি ভরত মানসাটার সঙ্গে যশলোক হাসপাতালে ভাস্কর সাভে-কে দেখতে যাই। তিনি তাঁর তিরানব্বই বছরের জীবনে এই প্রথম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর কিডনির অসুখ ধরা পড়েছে। এখানে তাঁর ডায়ালিসিস করা হয়েছে। হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে চব্বিশ ঘণ্টা রয়েছেন তাঁর নাতি অভিজয়। আজ একই সময়ে অশোক সাংভি, তাঁর স্ত্রী এবং অমিতা নন্দীও ভাস্কর সাভেকে দেখতে এসেছিলেন।
আমাকে দেখে ভাস্কর সাভে মারাঠি ভাষায় ভরত মানসাটাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কোথা থেকে এসেছি? কলকাতা থেকে এসেছি শুনে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কি চাষ করি, আমার খেত আছে? ভরত জবাব দিলেন, ‘না ওর কোনো খেত নেই, নিজের ঘরের আশপাশে সামান্য কিছু গাছপালা লাগায়।’
ভাস্কর সাভে আরও শুনলেন, আমি একজন ণ্ণবিদ্যার্থী’। প্রাকৃতিক চাষের শিক্ষার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমরা তেরোজন বিদ্যার্থী ওঁর খেতে গিয়েছিলাম। ওঁর ভাষায় প্রাকৃতিক চাষ হল ‘সজীব খেতি’। গুজরাতের ভালসাড় জেলায় সমুদ্র তীরবর্তী দেহরি গ্রামের সেই খেতে আটদিন আমরা ছিলাম। ভাস্কর সাভে সেকথা শুনে ভরত মানসাটাকে বললেন, ‘তুমি এই বিদ্যার্থীদের বলো, খেতের গাছপালা থেকে তুমি ১০-১৫ শতাংশ তোমার প্রয়োজনের জন্য নিতে পার। কিন্তু বাকি ৮৫-৯০ শতাংশ গাছপালার জন্যই রেখো, ওদের আর কিছু দেওয়ার দরকার নেই। ওরা নিজেরাই নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে নেবে।’ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার তিনি আবার বললেন, ‘চাষ ধান্দা (পয়সা কামানোর) নয়, ধর্ম। যদি তুমি চাষকে মুনাফা হিসেবে নাও, তাহলে প্রকৃতি লুঠ হয়ে যাবে।’ আমি বুঝতে পারলাম এই অসুস্থ শরীরে হাসপাতালে শুয়েও তিনি তাঁর বার্তা এবং সাবধানবাণী আমাদের দেওয়ার চেষ্টা করছেন। নাতি অভিজয় সামনে এসে দাঁড়ালেন। ভাস্কর সাভে তাঁকে পাশে এসে বসতে বললেন।
Leave a Reply