অকুপাই আন্দোলনের পত্রিকা ণ্ণটাইডাল’ থেকে, ৬ নভেম্বর#
আজ আমাদের বলা হয়েছে, বুথে গিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে, উঠে দাঁড়াতে ও গণনায় আসতে, আমাদের আওয়াজ যাতে শোনা যায় তার ব্যবস্থা করতে, সেই লোককে নির্বাচন করতে যে আমাদের স্বার্থকে সবচেয়ে ভালোভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। বেশ ভালো কথা। আমরা এর বিরুদ্ধে নই, পক্ষেও নই। সত্য হল, আমরা সম্পূর্ণ এক ভিন্ন জগতে বাঁচছি অথবা মরছি। আমরা ভবিষ্যত গ্রহের থেকে আসা জীব, যারা চিনতে পেরেছে আমাদের সদ্য ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের বিপদ এবং প্রতিজ্ঞাকে।
দশদিন আগে, জলবায়ু ওয়াল স্ট্রিটে আঘাত হেনেছিল। এবং আমরা সবাই বন্যার্ত হয়েছিলাম। জোয়ারের জল উঠে এসেছিল। বাতি নিভে গেছিল। আমাদের বন্ধুরা, পরিবার, প্রতিবেশী এবং সমাজ, আমাদের নেটওয়ার্ক এবং মিত্ররা চলে গেছিল জলের তলায়, অন্ধকারে। আমাদের জীবন সঙ্কটে পড়েছিল। আমরা রাষ্ট্রের জন্য অপেক্ষা করতে পারিনি। আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছিল।
আমরা জরুরি অবস্থা জারি করেছিলাম। এটা আমাদের জরুরি অবস্থা। ওরা এটা ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিল — ওদের নিজস্ব লেটলতিফ, অসম, অপর্যাপ্ত কায়দায়। ওদের কাছে, জরুরি অবস্থা হল একটা আপৎকালীন অবস্থা এবং তা ম্যানেজ করতে হবে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার নামে। কিন্তু ওদের স্বাভাবিক অবস্থা মানে আমাদের কাছে একটা চিরস্থায়ী জরুরি অবস্থা — অর্থনৈতিক বৈষম্য, ঋণের ফাঁস, বর্ণভিত্তিক নিপীড়ন, ইউনিয়ন ভাঙা, পুরসভার কৃচ্ছসাধন, বাস্তুতন্ত্রের ধ্বংস, পুলিশি হিংসা, ঐতিহাসিক ভ্রান্তি, আরও কত কী …।
আমরা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে দেব না।
জনগণের জরুরি অবস্থা এই সঙ্কটের উত্তর; আমরা তৈরি করেছি বন্টন কেন্দ্র, শক্তি-উৎপাদনকেন্দ্র; আমরা স্বেচ্ছাসেবীদের জুটিয়েছি; আমরা টাকা তুলেছি ও মিডিয়াকে আকর্ষণ করেছি; আমরা অকুস্থলে উপস্থিত মানুষকে সাহায্য করেছি যখন ক্ষুধায়, অন্ধকারে, অরক্ষায় তাদের প্রাণসঙ্কট।
জনগণের জরুরি অবস্থা কিন্তু মানবিকতার কার্যক্রম নয়। এটা কোনো দান ধ্যান নয়। আমরা প্রশাসনের কোনো এজেন্সি বা জনসেবার বাহিনী নই। আমরা লাল চেক জামা পরি, রেড ক্রস নয়। আমরা সমাজ এবং সংহতির স্বশাসিত অঞ্চল তৈরি করছি, ক্ষমতাহীন দুর্যোগপীড়িত মানুষের জীবনযাপন ম্যানেজ করার ক্যাম্প বানাচ্ছি না।
আমরা স্বশাসিত, তার মানে এই নয় যে আমরা রাষ্ট্র বা তার প্রয়োজনীয় পরিষেবার প্রতি উদাসীন বা বিরূপ মনোভাবাপন্ন। আমরা কেবল তাদের শূন্যস্থানে নিজেদের বন্দোবস্ত নিজেরাই করছি, বিশেষ করে সময় যখন পেরিয়ে যাচ্ছে এবং শীতের ঝড় এগিয়ে আসছে।
ন্যাশনাল গার্ড আমাদের স্বশাসিত অঞ্চলের আশেপাশে গন্ধ শুঁকতে এসেছিল। ওরা নিউ ইয়র্কের যুবা শ্রমিকশ্রেণী, ইউনিফর্ম পরে, কালো, ল্যাটিনো, আইরিশ, ইতালিয়ান, পূর্ব এশিয়ান, দক্ষিণ এশীয়, আরবি, ইহুদি, পোলিশ, স্লাভিক — ওরা বিপর্যয়ের মধ্যে নিজেদের এবং নিজেদের সমাজকে দেখছিল। ওরা জনগণের জরুরি অবস্থার মধ্যে নিজেদের দেখছিল। কারণ ওরা ঠিক সেখান থেকেই এসেছে, যেখান থেকে আমরা এসেছি। \par
মনের দিক থেকে ওরা ভালো মানুষ, আমাদের সাহায্য করতে চাইছিল। কিন্তু ওদের টিঁকি বাঁধা ওদের কমান্ডার আর তাদের আদেশের কাছে। ওরা ওদের সশস্ত্র যানে আসছিল। কিন্তু ওরা জানে না, কীভাবে শুরু করতে হবে। ওরা যে নিরস্ত্র। ওরা আমাদের জিজ্ঞেস করল, কোথায় যেতে হবে, যেমনভাবে কোনো নয়া মক্কেল এসে জিজ্ঞেস করত আমাদের, যখন আমরা জুকোত্তি পার্কে ছিলাম। আমরা তাদের বললাম, আমাদের ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়ে যেতে, সেখান থেকে ত্রাণের বস্তাগুলি নামাতে সাহায্য করার জন্য। এগুলি পাঠিয়েছে সারা শহরের বিভিন্ন পাড়াগুলি।
ওরা ওদের বাসি খাবারের প্যাকেট দিতে চাইছিল। মিলিটারি-হিউম্যানিটারিয়ান ফ্যাক্টরিতে কয়েক মাস আগে বানানো এবং ডিপ ফ্রিজে রেখে দেওয়া বিপর্যয়ের জন্য জমিয়ে রাখা কিছু প্যাকেট। আমরা বললাম, ঠিক আছে দাও। কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল গরম অ্যালুমিনিয়াম পাত্রে বাড়িতে বানানো লাসাঙা, অ্যারোজ ই গ্র্যান্দুল, কলার্ড গ্রিন, মাকারোনি, চিজ, বিরিয়ানি, চিকেন নুডল সুপ, হালাল ও কষা মাংস, ভেগান লেন্টিল স্যালাড, আপেল পাই … এবং যাদু পানীয়, যারা সারা দিন বিপর্যয়ের আবর্জনা বেলচায় করে সরিয়ে, বেসমেন্ট সরিয়ে, বাক্স প্যাঁটরা গুছিয়ে, জেনারেটর চালিয়ে, স্বেচ্ছাসেবকদের এদিক-ওদিক করে, ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করে, বাচ্চা এবং বয়স্কদের দেখাশোনা করে তা একটু খেতে চায়।
জনগণের জরুরি অবস্থা হল এক শতাংশের জন্য সত্যিকারের জরুরি অবস্থা। কারণ আমরা চাই আমাদের নিবিড় দেখাশোনার বন্দোবস্তটিকে নিয়ে এই খাদ্য, কাপড় আর বিদ্যুতের আশু সঙ্কটের মুহূর্তকে ছাপিয়ে যেতে। আমরা আশা করি, রাষ্ট্র এবং কোম্পানিগুলি আবার শক্তি ফিরিয়ে আনবে, ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করে ফেলবে, লোককে বড়ো বড়ো গাড়িতে তুলে নেবে … তার কারণ এটা নয় যে তারা খুব মানবিক। এই কারণে যে তারা যদি এই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত সমাজগুলিকে অবহেলা করতে থাকে, তাহলে তাদের হাতই ময়লা দেখাবে।
অন্য সব জিনিসের সাথেই রাষ্ট্র জরুরি ধার দেবে, কর্পোরেট ঋণ কারবারিরা তাদের মদত দেবে। রিয়েল এস্টেট ডেভেলপাররা এবং বিপর্যয়-বেনিয়ারা ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমরা প্রস্তুত।
Leave a Reply