মৃত হাইতিতে ৫৪, আমেরিকায় ৫১, কিউবাতে ১১, বাহামায় ২, কানাডায় ২, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে ২, জামাইকাতে ১ |
|
গৃহহীন হাইতিতে ২ লক্ষ, কিউবাতে ৫৫ হাজারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ১ লক্ষ ৩২ হাজার বাড়ির ক্ষতি হয়, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে ৩০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় |
|
আমেরিকায় তিনটি পরমাণু কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়, একটিতে (অয়সটার ক্রিক) চুল্লির খাঁচার মধ্যে সাড়ে ছয় ফুট জল উঠে যায়, সেখানে সতর্কতা জারি করা হয় |
|
ক্ষতি আমেরিকার এক লক্ষ কোটি টাকা, আর কিউবা, বাহামা, কানাডা ও জামাইকার মিলিত ক্ষতির পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকার মতো। হাইতি এবং ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের ক্ষতির পরিমাণ অজানা
|
কুশল বসু, কলকাতা, ৩১ অক্টোবর, তথ্যসূত্র উইকিপিডিয়া, হাফিংটন পোস্ট#
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে আটলান্টিকের মধ্যভাগ, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং উত্তর-পূর্ব আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভাসিয়ে নিয়ে গেল হারিকেন স্যান্ডি (একটি বিষুব অঞ্চলের সাইক্লোন)। অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে একটি বিষুব ঝড় হিসেবে শুরু হয়ে তারপর পক্ষকাল ধরে চলার পর ঝড়টি আটলান্টিক মহাসাগরের কাছে ক্যারিবিয়ান সাগরে গরম জলের সংস্পর্শে এসে ভয়ংকর সাইক্লোনের রূপ নেয় ২২ অক্টোবর।
২৪ অক্টোবর স্যান্ডি ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের জামাইকার রাজধানী কিংস্টনের ওপর আছড়ে পড়ে ১৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে সুন্দরবনে সাইক্লোন আয়লা আছড়ে পড়েছিল সর্বোচ্চ ১১০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে। কিউবার ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় স্যান্ডি ঘুর্ণিঝড়টির বেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৬ কিমি। পরে এটি উত্তর আমেরিকার দোরগোড়ায় হাজির হয় কিছুটা দুর্বল হয়ে।
ঘুর্ণিঝড় স্যান্ডি জামাইকা, হাইতি, কিউবা, বাহামা, আমেরিকা এবং বাহামার বিস্তীর্ণ এলাকা বিধ্বস্ত করে দেয়। কিছু মানুষকে সব জায়গাতেই আগেই নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও বিপুল মানুষ গৃহহীন হয়, মারা যায় মোট ১২৩ জন, বন্ধ হয়ে যায় অনেক বিমানবন্দর, রেল-সড়ক-মেট্রো পথ। বিদ্যুৎ চলে যায় বিস্তীর্ণ এলাকায়।
এই ভয়ংকর ঘুর্ণিঝড়ের প্রেক্ষাপটে ফের বিশ্ব উষ্ণায়নের কথা চলে এসেছে। এবছর আটলান্টিকে এর মধ্যেই ১৯টি বড়ো ধরনের সাইক্লোন এসেছে, এখনও বছর শেষ হতে এক মাস বাকি। সাধারণত বছরে ১০-১২টির বেশি বড়ো সাইক্লোন আসে না। সমুদ্রের উপরিভাগের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সাইক্লোনের ভয়ঙ্করতা বেড়ে যায়, কারণ গরম সমুদ্র অনেক বেশি বাষ্প সেই সাইক্লোনে যুক্ত করে দেয়। আর এই সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে মানুষের হাত আছে। সমুদ্রের গভীর থেকে রাশি রাশি গর্ত খুঁড়ে তেল তোলার বন্দোবস্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকল্পের (তাপবিদ্যুৎ বা পরমাণু বিদ্যুৎ, কেমিকাল, ধাতু প্রভৃতি) নির্গত গরম জল সমুদ্রে মিশে যাওয়া — আমাদের তৈরি বিভিন্ন কারণেই সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে। একইসাথে বাড়ছে সমুদ্রের জলতলও, বরফ গলে যাওয়ার ফলে।
Leave a Reply