২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে মার্কিন ব্রিটিশ যৌথ বাহিনী ইরাক ছেলে চলে গেলেও তার পদচিহ্ন রেখে গেছে বিভিন্ন ভাবে। সেগুলিই নির্ধারণ করে দিচ্ছে ইরাকের ভবিষ্যত। আজ যেসব সশস্ত্র বাহিনী ইরাক রাষ্ট্রের পতন ডেকে আনছে, কয়েক বছর আগেও সেগুলিই ছিল ইরাকে যৌথ বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ। তার একটা বর্ণনা এখানে রইল। তবে সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী ছাড়াও রয়েছে সে দেশের কৃষি, শিল্প, দ্রব্যমূল্য এবং সর্বোপরি জলাধার ও তৈলাধারের কথা। সেগুলি পরে কখনও বলা হবে। সংকলন শমীক সরকার, ২৩ জুন#
গৃহযুদ্ধে ইরাক রাষ্ট্র পতনের সামনে দাঁড়িয়েছে। অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে যে, আমেরিকা ২০১১ সালে ইরাক থেকে পাততাড়ি গোটানোর পর ফের একবার সেখানে হানা দেওয়ার কথা ভাবছে। খবরে প্রকাশ, বিদ্রোহীদের কবলে চলে গেছে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ইরাকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল শহর মসুল চলে গেছে বিদ্রোহীদের হাতে। খবরে আরও প্রকাশ, বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’ নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন, যেটি আবার কি না আল কায়দা-র ইরাক শাখা ভেঙে তৈরি হয়েছে। খবরে আরও প্রকাশ, এই ইরাকি বিদ্রোহীরা বেশিরভাগই ইরাকের সংখ্যালঘু সুন্নী সম্প্রদায়ের, এবং ইরাকের নূর মালিকির সরকারে সিয়া সম্প্রদায়ের বাড়বাড়ন্ত।
মার্কিন-ব্রিটিশ যৌথ বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ দিয়ে শুরু
ইরাকে গৃহযুদ্ধ চলছিল ইঙ্গ-মার্কিন আগ্রাসনের পর থেকেই। ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ করে মার্কিন ব্রিটিশ যৌথ বাহিনী, ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল ইরাকের তদানীন্তন পরাক্রমী প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করা, কারণ সে ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রসম্ভার বানাচ্ছে। ২০০৬ সালে সাদ্দাম হুসেনকে ফাঁসিতে ঝোলায় এই যৌথ বাহিনী। যৌথ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ইরাকে সাধারণ নির্বাচন হয় ২০০৫ ও ২০১০ সালে। দুটিতেই জিতে প্রধানমন্ত্রী থাকেন নূর মালিকি। ইঙ্গ-মার্কিন যৌথ বাহিনী তো ইরাক ছেড়ে চলে যাবে, তাই ইরাকের নিজস্ব সেনাবাহিনী তৈরি করা হয়। এতে বাগদাদের মুক্তাদা আল সদর-এর মাহদি সেনা, ইরাকের ইসলামিক সুপ্রিম কাউন্সিলের বদর ব্রিগেড, আসাইব আহল আল হক সেনা, কিতাইব হেজবুল্লাহ প্রভৃতি সশস্ত্র বাহিনীর লোকেরা যথেচ্ছভাবে ঢুকে পড়ে। এরা সবাই শিয়া সম্প্রদায়ের এবং সবাই কমবেশি মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদী লড়াই করেছে। প্রধানমন্ত্রী নূর মালিকির ইরাক সরকারের সঙ্গে এদের সম্পর্ক খুবই ভালো, বলা ভালো, এদের ওপর ভর করেই নূর মালিকি সরকার টিঁকে রয়েছে। তাই ২০১০ সালে মালিকি দ্বিতীয়বার নির্বাচনে জেতার পর এবং তারপরের বছরই মার্কিন সেনা কেটে পড়ার পর মালিকি সরকার আরো বেশি বেশি করে সাম্প্রদায়িক হয়ে পড়ে। যে কোনো ধরনের বিরোধিতার ওপর সশস্ত্র রাষ্ট্রীয় হামলা শুরু হয়।
এই সরকার ঘনিষ্ঠ প্রাইভেট সেনাগুলি অপহরণ থেকে শুরু করে গুপ্তহত্যা — সবই চালাতো। ২০০৯ সালে শিয়া অধ্যুষিত বসরা-র প্রধান সুন্নী ধর্মাবলম্বী উপজাতি সাদাউনদের বাড়ি বাড়ি হুমকি চিঠি পাঠানো হয় ‘হুসেনের হত্যাকারীরা ভাগো’ লিখে এবং প্রায় ৬০টি পরিবার বসরা থেকে উত্তর ইরাকের নাসিরিয়া-তে চলে যায়। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৫০ জন সুন্নী মতাবলম্বীকে বসরায় হত্যা করা হয়, একের পর এক। আসাইব আহল আল হক সেনা এইসব কাজ করেছে বলে জানা যায়। কিন্তু সরকার থেকে দোষ চাপানো হয় তুলনায় অনেক পরিচিত আল কায়দা-র ওপর। এই আসাইব বাহিনী আগে ছিল মুক্তাদা আল সদর-এর সেনা-র মধ্যেই। কিন্তু পরে বেরিয়ে আসে এবং মার্কিন বিরোধী সশস্ত্র লড়াই চালাতে থাকে। ২০০৭ সালে এদের নেতা কাইজ খাজালি জেলে গেছিলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মালিকি-র হস্তক্ষেপে বছর দুয়েক পরে ছাড়া পেয়ে যায়।
২০০৫ এবং ২০০৬ সালে এই ধরনের সশস্ত্র বাহিনীর লোকেরা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে ব্যাজ বানিয়ে নিয়েছিল পুলিশের, এবং সেগুলো পরে মার্কিন চেকপোস্ট পেরিয়ে গিয়ে সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষদের ওপর হামলা চালিয়ে আসত মুহুর্মুহু। অনেকেই বলেন, ঘুঁষ দিয়ে বানানো হয়েছিল এই ব্যাজগুলো, আবার অনেকেই বলেন, মালিকির প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে এই ব্যাজগুলো দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, এই নূর মালিকিও ছিলেন একটি শিয়া সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার, ২০০৫-০৬ সালে তিনি গুপ্তঘাতকদের হাত থেকে শিয়া পাড়াগুলোকে রক্ষা করার ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। সুন্নীদের হত্যাকাণ্ডগুলো সম্বন্ধে বলা হতো, তারা সবাই জঙ্গী, গুপ্তঘাতক, সন্ত্রাসবাদী।
সম্প্রদায়ভিত্তিক সশস্ত্র বাহিনী
শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত মিলিশিয়াগুলির পাশাপাশি অন্যান্য সম্প্রদায়েরও সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছিল মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। সুন্নী সম্প্রদায়ের মিলিশিয়া মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা লড়াই চালাতে শুরু করে ২০০৪ সাল থেকেই। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়দার ইরাক ইউনিট তৈরি হয় ২০০৪ সালের অক্টোবর মাস থেকেই। এই আল কায়দা গোষ্ঠীটি কেবল আগ্রাসনকারী যৌথ বাহিনীকে আক্রমণ করেই ক্ষান্ত থাকেনি, মূলত শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত ইরাকি নাগরিকদের ওপরও আক্রমণ চালাতে শুরু করে। মার্কিন আগ্রাসন বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহ সাম্প্রদায়িক গৃহযুদ্ধে পরিণত হতে শুরু করে। তবে সমস্ত সশস্ত্র বিদ্রোহীদেরই বিদেশি আক্রমণকারীদের শুধু নয়, তাদের স্বদেশি অনুচরদেরও নিকেশ করার ঘোষণা ছিল। ২০০৫ এবং ২০০৬ সালে এই বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসবাদী হামলা বাড়ে এবং ২০০৬ সালে তা চরমে পৌঁছয়। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে এই ধরনের হামলার পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজারেরও বেশি। ২০০৬ সালে সাদ্দামকে ফাঁসিতে ঝোলায় যৌথ বাহিনী। ২০০৭ সালে ইরাকের পার্লামেন্ট (২০০৫ সালে সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত) আমেরিকাকে জানিয়ে দেয়, যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের দিনক্ষণ ঠিক করতে হবে। ২০০৮ সালে যৌথ বাহিনীর প্রত্যাহারের দিনক্ষণ ঠিক হয় — তাতে বলা হয় ২০১১ সালের ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ইরাক ছেড়ে চলে যাবে আগ্রাসনকারী যৌথ বাহিনী।
নাকসবন্দী সেনা
এরই মধ্যে ২০০৬ সালে সাদ্দাম হুসেনের ফাঁসির পর একটি নতুন মিলিশিয়া তৈরি হয় ইরাকে, তার নাম নাকসবন্দী সেনা বা ‘জইশ আল-তারিকা আল-নাকসবন্দীয়া’ বা সংখহেপে জেটিআরএন। ইরাকের সুপ্রাচীন সুফি ধর্মাবলম্বীদের এই সংগঠনটি সুফি মুসলিম ধর্মের অহিংসাকে পরিত্যাগ করে বহি:শত্রুর আক্রমণ থেকে দেশ বাঁচানোর জন্য সশস্ত্র গেরিলা লড়াই-এর ঘোষণা করে, আগ্রাসী যৌথ বাহিনী এবং তাদের অনুচরদের বিরুদ্ধে। ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরি হলেও ২০০৩ সালের আগ্রাসনের সময় থেকেই এরা সশস্ত্র সংগ্রামে রত ছিল, এমনকি ২০০৪ সালের বিখ্যাত ফালুজা শহরের যুদ্ধেও এরা অংশগ্রহণ করেছিল। মূলত আল কায়দা (ইরাক)-এর ভ্রাতৃঘাতী রণকৌশলের হাত থেকে নাকসবন্দী ও সুন্নী তথা সাধারণভাবে ইরাকি প্রতিরোধকে বাঁচানোর জন্যই ২০০৬ সালে এরা পৃথকভাবে সংগঠিত হয়েছিল। এদের মুখপাত্র প্রেসকে বলেছিলেন, ‘আমাদের লড়াই ইরাকের সংহতি এবং একতার জন্য, ইরাকের মাটি ও মানুষের জন্য, ইরাকের আরব এবং মুসলিম সত্ত্বাকে বাঁচানোর জন্য’। এরা তারপর থেকে অন্তত সতেরটি রকেট আক্রমণ, পাঁচটা মর্টার আক্রমণ, চৌদ্দটি রাস্তায় বোমা বিস্ফোরণ, চারটে বন্দুকবাজদের দিয়ে আক্রমণ এবং যৌথবাহিনীর ওপর দুটি বড়ো মাপের আক্রমণের দায়িত্ব দাবি করে। উল্লেখ্য, নাকসবন্দী সুফি ধর্মের অরাজনৈতিক চরিত্রের কারণে সাদ্দামের আমলে তা নিষিদ্ধ ছিল না এবং সাদ্দামের মন্ত্রীসভার কেউ কেউ এই নাকসবন্দী সুফি সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন। সাদ্দামের আমলের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, যাকে যৌথ বাহিনী বা ইরাকি পুলিশ কখনও ধরতে পারেনি, সেই ইজ্জত ইব্রাহিম আল দুরি এই নাকসবন্দী সেনা গঠনের মূল মাথা বলে মনে করা হয়। তৈরির সময় এই নাকসবন্দী সেনা ঘোষণা করেছিল,
‘ইরাকের প্রতীক শহীদ সাদ্দাম হুসেনকে খতম করার যে অপরাধ করেছে বর্তমান সাম্প্রদায়িক সরকার, তার পরিপ্রেক্ষিতেই আমাদের এই ঘোষণা। আমাদের প্রিয় দেশ ইরাক আগ্রাসনের, বিধর্মী ও তাদের সাঙ্গোপাঙ্গোদের ইসলামের দুর্গ দখলের চারবছরের মাথায় আমরা আরো বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আমাদের মুক্তির লড়াই-এ, আগ্রাসনকারী এবং তাদের স্যাঙাতদের ও পুতুল সাম্প্রদায়িক সরকারটিকে উৎপাটিত করতে।
বেকার-হ্যামিলটন রিপোর্ট, বুশের বয়ান, আমেরিকান গণমাধ্যম ও সাম্প্রদায়িক ইরাকি সরকার দাবি — ইরাকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সফল, এবং প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে গেছে, সীমিত হয়ে গেছে এবং ইরাকে যা চলছে, তা কোনো প্রতিরোধ নয়, দেশের বাইরের শক্তির সন্ত্রাসবাদী হামলা — এসবের প্রত্যুত্তরে আমাদের এই ঘোষণা।
তাই আমরা ঘোষণা করছি, আমাদের সেনা হলো নাকসবন্দীয়া তরিকা-র সেনা, যারা দখলকারী এবং তাদের স্যাঙাতদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে এবং সারা পৃথিবীকে দেখিয়ে দেবে, প্রতিরোধ করছে ইরাকিরাই, শত্রুদের দাবিমতো ভিনদেশিরা নয়।’
উত্তর ইরাকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখন নিয়ন্ত্রণ করছে এই নাকসবন্দী সেনা।
ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া সেনা
পশ্চিম ইরাকের বিশালাকার প্রদেশ আল আনবার চিরকালই ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে অনেকটাই মুক্ত। এই আল আনবার এখন বহুল প্রচারিত ‘ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’ সেনা এবং বিভিন্ন ইরাকি উপজাতিদের সশস্ত্র বাহিনীদের দখলে। এই আইএসআইএস হলো ইরাকের সুন্নী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বিদ্রোহী সংগঠনের (মুজাহিদিন সুরা কাউন্সিল, আল কায়দা ইরাক, জইশ আল-ফাতিহিন, জুন্দ আল সাহাবা ইত্যাদি) সমন্বয়ে অথবা সাহায্যে তৈরি একটি রাজনৈতিক শক্তি, যারা ইরাকে খিলাফত রাষ্ট্র বানানোর কথা বলে। মূলত প্রতিবেশী সিরিয়াতে এদের শক্তি থাকলেও ২০১৪-র জুন মাসে এরা আল আনবার প্রদেশ পেরিয়ে মসুল শহরের দখল নেয়।
২০১০ সালে নির্বাচনে জেতার পর প্রধানমন্ত্রী নূর মালিকি তার বিরোধী শক্তিগুলিকে কড়া হাতে দমন করতে শুরু করে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন তিউনিসিয়া, মিশর প্রভৃতি দেশে জনবিক্ষোভ হচ্ছিল, সেই সময়ই ইরাকেও জনবিক্ষোভ শুরু হয়। সরকারি সাম্প্রদায়িকতা বন্ধ, দুর্নীতি বন্ধ, জিনিসপত্রের দামে লাগাম টানা প্রভৃতি দাবি নিয়ে বাগদাদে শান্তিপূর্ণ জনবিক্ষোভ হতে থাকে। প্রধানমন্ত্রী নূর মালিকি প্রথমে নাটকীয়ভাবে একশ’ দিনের মধ্যে দুর্নীতি দূর করার কথা বলেন। তারপর থেকেই শুরু হয় সরকারি ও সরকার পোষিত সশস্ত্র বাহিনীর জনবিক্ষোভে আক্রমণ।
২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে আল আনবার প্রদেশের রামাদি শহরে সুন্নী সম্প্রদায়ের একটি প্রতিবাদ অবস্থান চলছিল। ৩০ ডিসেম্বর সেই অবস্থান জোর করে তুলে দেয় ইরাকের সরকারি বাহিনী। তাতে ক্ষুদ্ধ হয়ে আল আনবার প্রদেশের উপজাতিদের মিলিশিয়া ইরাকি সেনাবাহিনীর সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ চালাতে থাকে। ৩১ ডিসেম্বর ইরাক সরকার আল আনবার প্রদেশ থেকেই সেনাবাহিনী তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু জানুয়ারি মাসের গোড়াতেই ফালুজা, রামাদি প্রভৃতি শহর আইএসআইএস-এর দখলে চলে গেলে ইরাকি সেনা আবার ফেরত আসে। যুদ্ধ শুরু হয় এবং চলতে থাকে। আনবার প্রদেশের বিভিন্ন শহর, ফালুজা জলাধার এবং আন্তর্জাতিক এক্সপ্রেসওয়ের দখল নিয়ে ব্যাপক যুদ্ধে ইরাকি সেনাবাহিনী ও আঞ্চলিক উপজাতিগুলির কিছু সশস্ত্র সংগঠন বনাম আইএসআইএস-এর লড়াই চলতে থাকে জুন মাসের গোড়া অবধি। বেশিরভাগ সময়ই শহরগুলোর দখল ছিল আইএসআইএস-এর। জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ শহরেই নিরঙ্কুশ দখল কায়েম করে ফেলে তারা। মাঝখানে মার্চ-এপ্রিল মাসে ইরাকি সেনা কিছুটা কব্জা করেছিল। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ফালুজা ও রামাদি শহরের প্রায় সাড়ে তিন লাখেরও বেশি মানুষ বসতি ছেড়ে পালিয়ে গেছে নিরাপত্তার আশায়।
Leave a Reply