সংবাদমন্থন প্রতিবেদন, কলকাতা, ১০ এপ্রিল #
গত ৯ এপ্রিল গুজরাতের ২০০২ সালের হিংসার অন্যতম নায়ক নরেন্দ্র মোদির কলকাতা সফরকে কেন্দ্র করে ৮-৯ এপ্রিল মোদি বিরোধী কর্মসূচী পালিত হল। ৮ এপ্রিল বিকেল সন্ধ্যেয় মেটিয়াব্রুজ মহেশতলা অঞ্চলে আক্রা এবং সন্তোষপুর স্টেশনের সামনে এবং হাজিরতন শিশুভারতী স্কুলের সামনে একটি পথনাটিকা মঞ্চস্থ করে একটি আবেদন রাখা হয়। ওই অঞ্চলের বিভিন্ন মানুষের করা এই ‘মানবতার কাছে আবেদন’-এ পরিষ্কার বলা ছিল, আজ যে রূপেই হাজির করা হোক না কেন, মানুষ জানে, নরেন্দর মোদি একজন গণহত্যার নায়ক। ২০০২ সালের হিংসার সময় এই মেটিয়াবুরুজ মহেশতলার দোরজিরা নতুন জামাকাপড় পাঠিয়েছিল সেখানকার দুর্গত মানুষের জন্য। নরেন্দ্র মোদির বিচার এখনও হয়নি। তার বিচার চাই। সে পশ্চিমবাংলায় স্বাগত নয়।
আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে যেমন একাত্তরের গণহত্যাকারীদের বিচার হচ্ছে, মোদিরও সেরকম বিচার হওয়া দরকার।
‘… না, সেই গণহত্যার ঘটনাবলীকে এত সহজে আমরা ভুলে যেতে পারি না। আজও সেই হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের নায়কদের চরমতম অন্যায়ের বিচার হয়নি। আমরা আজও ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। তাই নরেন্দ্র মোদির বিচার আমরা চাই। আমরা চাই অন্তত কলকাতায় যেন সেই হত্যাকাণ্ডের নায়ক অভিনন্দিত না হন।
তাকিয়ে দেখুন বাংলাদেশের দিকে। ১৯৭১ সালের গণহত্যার নায়কদের বিচারের দাবিতে আজ সোচ্চার সেদেশের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। সেখানেও নির্বাচনী ফায়দা লুঠতে গণহত্যার নায়কদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিল কখনো আওয়ামি লিগ, কখনো বিএনপি ইত্যাদি দলেরা। যুদ্ধাপরাধীকে মন্ত্রী পর্যন্ত করা হয়েছিল বাংলাদেশে। কিন্তু সেই নির্লজ্জ আপোসের জবাব দিয়েছে চার দশক পরে ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ারের গণজমায়েত।’
‘পরিবর্তক’ নাট্যগোষ্ঠীর ২০ মিনিটের মোদিবিরোধী পথনাটক ‘হিম্মতওয়ালা’ হওয়ার সময় পথচারীরা সেই নাটক দেখতে দাঁড়িয়ে যায়।
৯ তারিখ কলেজ স্কোয়ারে ফের এই নাটকটি মঞ্চস্থ হয় দু-বার। সেখানে ‘শাহবাগ সংহতি, পশ্চিমবঙ্গ’-র পক্ষ থেকে দুপুর দু’টো থেকে সন্ধ্যে ছ’টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচীতে ছিল হ্যান্ড মাইকে বক্তৃতা, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে, শাহবাগ আন্দোলনের সপক্ষে পোস্টার প্রদর্শনী এবং ‘মানবতার কাছে আবেদন’-এর লিফলেট বিলি।
বিকেলে এই অনুষ্ঠান চলাকালীন তার থেকে একটু দূরে কফি হাউসের সামনে ছাত্রছাত্রীরা মোদিবিরোধী একটি পথসভা করে। কিছু ছাত্রছাত্রী মোদির কুশপুতুল নিয়ে মিছিল করে, এবং পরে সেই কুশপুতুল পোড়ায়। সকালে গ্র্যাণ্ড হোটেলের সামনে নরেন্দ্র মোদিকে কালো পতাকা দেখায় কিছু ছাত্রছাত্রী এবং থিয়েটার কর্মী। পুলিশ জমায়েত ভেঙে দিয়ে ২৩ জনকে গ্রেফতার করে। পরে বিকেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
নিচে সন্তোষপুর, আক্রা এবং হাজিরতনে ৮ এপ্রিল-এর অনুষ্ঠানের কিছু ছবি দেওয়া হলো। ছবিগুলি ‘লক্ষণের শক্তিশেল’ ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া। ছবি তুলেছেন সাগ্নিক।
Leave a Reply