• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

গহনা সহ ব্যাগ ফিরিয়ে গ্রামের বাড়ি দাওয়াত দিয়ে গেল টোটোচালক

April 20, 2015 admin 1 Comment

অন্তর, কোচবিহার, ১৫ এপ্রিল#

মঙ্গলবার। চৈত্র সংক্রান্তির দিন। মেয়ের বাড়ি থেকে মালা রাউথ, কোচবিহার রাজেন তেপথি নিবাসী, শিলিগুড়ি থেকে ফিরছিলেন। বাসে করে সন্ধ্যে সাতটা পনেরো নাগাদ কোচবিহার মিনিবাস স্ট্যান্ডে পৌঁছন। তারপর তিনি মিনিবাস স্ট্যান্ড থেকে টোটো গাড়িতে করে রাজেন তেপথি নিজ বাসভবনের সামনে নামেন। ঘরে ঢুকে তিনি খেয়াল করেন, তার দুটো ব্যাগের মধ্যে জামাকাপড় ও খাবারের ব্যাগটি তিনি নিয়ে এসেছেন, এবং টোটোর ড্রাইভারকে ভাড়া মিটিয়ে দেওয়ার সময় পার্স ব্যাগটি টোটো গাড়িতে ফেলে এসেছেন। তার ব্যাগে রয়েছে মোবাইল ফোন, দশগ্রাম সোনার গহনা, এটিএম কার্ড, ব্যাঙ্কের বই, ভোট কার্ড সহ কয়েকশো টাকা। কিছুক্ষণ পরে এলাকায় জানাজানি হলে সবাই মালাদেবীর বর্ণনা অনুসারে লাল রঙের টোটো খুঁজতে ব্যস্ত হলেও তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর মালারা ফেলে রেখে আসা মোবাইল ফোনেও কল করতে দেখা গেল মোবাইল ফোনটি সুইচ অফ। এ অবস্থায় কোচবিহার টোটো ইউনিয়নে ব্যাপারটা জানানো হয় রাত ন’টায়। কিন্তু তারাও নির্বাক শ্রোতা হয়ে রইল। কেননা মালাদেবীর টোটোর নাম্বারটি জানা ছিল না। খানিকটা হতাশ মনে ঘরে ফিরে আসতে হয় এই পঞ্চান্ন বছর বয়সী মহিলা মালা-কে। কিন্তু হঠাৎই শুভক্ষণ। হঠাৎ রাত দশটায় বেজে উঠল স্বামী স্বপন রাউথের মোবাইল। কল এল মালাদেবীর মোবাইল থেকে। কল রিসিভ করতেই ভেসে এল এক অজানা কন্ঠস্বর — ‘আমি কাকু, মুকুল। টোটো চালাই। কাকিমা তার ব্যাগটা আমার টোটোতে ফ্যালাইয়া গেছে। আমি তো এখন বাড়ি আইসা পড়ছি। কাল সকাল আটটার দিকে আপনার ব্যাগটা বাড়ি দিইয়া আইসব।’

রাত পেরিয়ে সকাল ন’টার সময় লাল টোটো নিয়ে মালা রাউথের বাড়ির সামনে হাজির হলো মুকুল দেবনাথ। তখন মালা আর সদ্য চাকুরি থেকে অবসর নেওয়া স্বামী স্বপন রাউথের মুখে হাসির বন্যা। তখন টোটো চালক মুকুল রায় ঘরে এসে ব্যাগটি ফেরত দিয়ে বলেন, ‘দ্যাখেন কাকিমা, সব ঠিক আছে নাকি?’ মালা খুলে দেখলেন, সবই ঠিক আছে — মোবাইল, টাকা, ব্যাঙ্কের বই, এটিএম কার্ড, ভোট কার্ড, আর দশ গ্রাম ওজনের সোনার গহনা। তখন রাউথ পরিবার খুশিতে টোটো চালক মুকুলকে নববর্ষ উপলক্ষ্যে মিষ্টিমুখ করালেন আর হাতে তুলে দিলেন নতুন পোশাক। তখন গল্পে গল্পে জানতে পারলেন টোটো চালকের ব্যক্তিগত কথা। মুকুলের বাড়ি কোচবিহার অন্তর্গত দিনহাটা মহকুমার এক গ্রাম গোসানিমারী-তে। সেখানে তার মা বাবা স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়ে থাকে। আর মুকুল কোচবিহারে এক বাড়ি ভাড়া নিয়ে মালিকের টোটো ভাড়া করে চালায়। সে দৈনিক তিনশো টাকা মালিককে ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে প্রায় তিনশো টকা আয় করে। এই তিনশো টাকাই হলো ছয় সদস্য বিশিষ্ট মুকুলের পরিবারটির অবলম্বন। আর ব্যাগের কথা উঠতেই মুকুল বলে, কাল রাতে যখন তিনি মালাদেবীকে রাজেন তেপথি নামিয়ে দিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন, তখন দু-জন ছেলে রাজেন তেপথি থেকে তার টোটো-তে ওঠে। কিছুক্ষণ পর তাদের হাতে মুকুল এক মেয়েদের ব্যাগ লক্ষ্য করে। ব্যাগ দেখে তার সন্দেহ হয়। তখন ব্যাগ সম্পর্কে মুকুল ছেলেদেরকে প্রশ্ন করায় তারা উত্তর দেয়, এই ব্যাগ তাদের। তখন মুকুল ব্যাগ সম্পর্কে আরো তথ্য যাচাই করতে জিজ্ঞেস করে, ব্যাগের ভেতর কী আছে। তখন ছেলেরা এই উত্তর দিতে ব্যার্থ হলে মুকুল বুঝতে পারে যে ব্যাগটি তাদের নয়। আগের প্যাসেঞ্জারের ফেলে যাওয়া ব্যাগ হয়ত। তখন ব্যাগ খুলে প্রমাণ মেলায় মুকুল ছেলেদুটিকে ব্যাগ ফেরত দিতে বলে। তারা ব্যাগ দিতে অস্বীকার করলে, ব্যাগে থাকা মালা রাউথের ভোট কার্ড বেরোলে আরো নিশ্চিত হয়ে যায় যে এই ব্যাগটি আগের প্যাসেঞ্জার মালাদেবীর। অবশেষে হাতাহাতি করে মুকুল দেবনাথ ছেলেদুটির হাত থেকে ব্যাগটি রক্ষা করে ও মোবাইল ফোনের সুইচ অন করে।

গল্প আর চা-পানের পর রাউথ পরিবার মুকুলের হাতে এক হাজার টাকা পুরষ্কার হিসেবে তুলে দিতে চাইলে মুকুল তা নিতে অস্বীকার করেন। কেন না নববর্ষের শুভেচ্ছা হিসেবে পোশাক গ্রহণ করলেও তিনি অর্থ নিতে পারবেন না। এতে তিনি মাকে মুখ দেখাতে পারবেন না। মুকুল আরো বলেন ব্যাগটা সম্পর্কে টোটোর মালিক জানতে পেরে বলেন, তিন হাজার টাকার বিনিময়ে গহনা ও মোবাইল ফোনটি মালিককে দিয়ে দিতে। কিন্তু মুকুল তা না দিয়ে মালা রাউথকে ব্যাগটি ফিরিয়ে দিতে ছুটে আসে। তাই রাউথ পরিবারের টাকা তিনি নিতে পারবেন না। এ তার মানবিক কর্তব্য। মুকুল টাকা না নিয়ে রাউথ পরিবারকে নিজের বাড়িতে নেমন্তন্য করে নিজের মোবাইল নাম্বার দিয়ে যান। আর নিমন্ত্রণ রক্ষার্থে রাউথ পরিবার আসছে আষাঢ়ে মুকুলের বাড়ি গোসানিমারীতে মুকুলের টোটোতে করেই যাবে বলে ঠিক করেছে।

সংস্কৃতি কোচবিহার, টোটো, টোটোচালক

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Comments

  1. Tapan Chanda says

    April 26, 2015 at 9:01 pm

    Salute to toto-driver……

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in