২১ সেপ্টেম্বর, সুব্রত দাস, বদরতলা, মেটিয়াবুরুজ#
যশোর রোড ধরে শ্যামবাজার থেকে দমদমের দিকে যারা যাতায়াত করে, একটু নজর করলেই তারা দেখে থাকবে, লেকটাউন আর যশোর রোডের সংযোগস্থলে অটো স্ট্যান্ডের সম্মুখে প্রতিদিন প্রকাশ্যে জুয়াখেলা চলছে। একটা টেবিলের ওপর চাদর বিছিয়ে ক্যারম বোর্ডের তিনটে স্ট্রাইকার সাজিয়ে জুয়া। খেলাটা হল, ওই সাজানো তিনটে স্ট্রাইকারের একটার নিচে একটা ছবি লাগানো রয়েছে আর তিনটে স্ট্রাইকার একরকম দেখতে। যে খেলতে আসবে তাকে আন্দাজ করতে হবে কোন স্ট্রাইকারের নিচে ওই ছবিটা আছে। সেই অনুযায়ী ওই স্ট্রাইকারের ওপর যত টাকা রাখবে, মিলে গেলে ওই টাকার দ্বিগুণ পাওয়া যাবে। খেলার নিয়ম অনুযায়ী কমপক্ষে ৫০ টাকা খেলতে হবে।
আমি সামনে থেকে অটো ধরার যাত্রী সেজে দেখছি শুধু হাতের কারসাজি। লোভী মন একবার চাইবেই ১০০ টাকা দ্বিগুণ করে বাড়ি ফিরে যেতে। বাড়ি ফিরে আয়েশ করে গিন্নিকে ১০০ টাকা অতিরিক্ত আয়ের কথা বীরত্বের সঙ্গে বলা যাবে! কিন্তু ওখানেই ধোঁকা।
প্রথম ১০০ টাকায় যেই দ্বিগুণ ফেরত পাওয়া যাবে, ওরা আপনাকে অনুরোধ করবে স্ট্রাইকারের ওপর ৫০০ টাকা ধরতে। তখন আপনি ধোঁকা খাবেন। বহু পথচলতি মানুষ প্রতিদিন এইভাবে ঠকছে। এমনকী যখন আপনার পকেটের টাকা শেষ, ওরা আপনাকে বলবে, মোবাইল, হাতের আংটি কিংবা গলার চেনটা বাজি ধরুন, দেখুন কীভাবে আপনার লোকসান হওয়া টাকা কয়েক মিনিটের মধ্যে ফিরে আসে।
এই ধরনের জুয়া গ্রাম্য মেলাগুলোতে সচরাচর চোখে পড়ে। তা বলে খোদ কলকাতার বুকে প্রকাশ্য দিবালোকে আগে এরকম কখনও চোখে পড়েনি। তবে হ্যাঁ, হাওড়ার মিনিবাস স্ট্যান্ডে এই খেলা মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে। এই ধরনের জুয়ার ফলে লেকটাউনের মতো জমজমাট চত্বরে সাধারণ মানুষ তো প্রতারিত হচ্ছেই, স্কুল-কলেজের ছাত্ররাও এর খপ্পরে পড়ছে। প্রশাসন কি জেগে ঘুমোচ্ছে?
Leave a Reply