সৌমিত্র গোস্বামী, ১৩ই ফেব্রুয়ারী ২০১৫, কোচবিহার#
৮ই ফেব্রুয়ারী, রবিবার কোচবিহারের টাকাগাছে “ নেতাজী সুভাষ ফ্রী কোচিং সেন্টারে” অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ৮ম বর্ষ বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগীতা। রৌদ্র ঝলমলে এই দিনটিতে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার মাননীয় শ্রীযুক্ত প্রদীপ কুমার রায় সরকার মহাশয় । স্থানীয় টাকাগাছ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও এই প্রতিষ্ঠানের কর্মাধক্ষ্য শ্রী হরিশ্চন্দ্র রায় মহাশয়। প্রধান অতিথী হিসেবে উপস্থিৎ ছিলেন কোচবিহার মহকুমা শাসক মাননীয় শ্রীযুক্ত বিকাশ কান্তি সাহা মহাশয় এবং সন্মানীয় অতিথী ছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ক্রিড়াবিদ শ্রী অশোক সরকার মহাশয়। এছাড়াও বেশ কিছু আমন্ত্রিত অতিথী ও উপস্থিৎ ছিলেন উক্ত অনুষ্ঠানে। ২৯ রকমের প্রতিযোগীতায় ১৫৬ জন ছাত্রছাত্রী ছাড়াও অংশগ্রহন করেছিলেন শিক্ষক শিক্ষিকা, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ও সর্বসাধারন। এই ক্রিড়াপ্রতিযোগীতার সমস্ত খরচ বহন করেন সেন্টারের সাথে যুক্ত শিক্ষক শিক্ষিকা গন।
চারিদিকে যখন ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠছে একের পর এক অর্থলোলুপ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেদিক থেকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক উজ্জ্বল ব্যাতিক্রম। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাদান করে যাচ্ছে সম্পূর্ন নিখরচায় সেই ২০০৭ থেকে। এমনকি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার আনুসাঙ্গিক সমস্ত কিছুরই খরচ বহন করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০০৭ সালে মাত্র ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যে চারাগাছ স্থাপিত হয়েছিল,সেই চারাগাছ আজ ডালপালা ছড়াতে শুরু করেছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫৬ জন। এর মধ্যে এবারে মাধ্যমিক দিচ্ছে ৭ জন। শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা ৩২ জন। মঙ্গল-বৃহস্পতি-শনি সকাল ৭ টা থেকে ৯টা অবধি আর রবিবারে ১০টা অবধি পড়াশোনা চলে। এই কোচিং সেন্টারের আর একটা বিশেষত্ত্ব হল কারো কাছ থেকে কোন আর্থিক সাহায্য গ্রহন করা হয় না। কেউ যদি আন্তরিকভাবে সাহায্য করতে চায় তবে তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনমত শিক্ষার আনুষাঙ্গিক দিয়ে তাদের সাহায্য করা হয়। এই সেন্টারে যারা পড়ান সেই শিক্ষক শিক্ষিকারাও পারিশ্রমিক নেন না।
সেন্টারের সম্পাদক বাদল ঘোষ ছাড়াও শ্রী কমল বর্মন, শ্রী অমল চক্রবর্ত্তী, শ্রী হরিশ্চন্দ্র রায়ের মত প্রবীন মানুষদের আন্তরিক অবদান আর এক ঝাঁক তরুন তরুনীর উৎসাহে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার বাইরেও ক্রিড়াদিবস, প্রতিষ্ঠাদিবস, মনীষীদের জন্মজয়ন্তী ইত্যাদি পালন করা হয়।
Leave a Reply