১ নভেম্বর সংবাদমন্থনে ‘ইজ্জত মান্থলি’ নিয়ে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে, তার সঙ্গে একটা সংযোজন আছে। ক্যানিং লাইনের একজন ছুতোর মিস্ত্রি জানিয়েছেন, তাঁর এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তাঁকে ইজ্জত কার্ড দিতে চাইছিল না। কারণ পঞ্চায়েত তৃণমুলের এবং তাদের ধারণা মিস্ত্রি সিপিএম। যদিও তিনি কোনো রাজনৈতিকি দলকেই সমর্থন করেন না। পঞ্চায়েত থেকে বেশ কয়েক মাস তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর সম্প্রতি তিনি আরও উঁচুতলার এক নেতাকে ধরে ইজ্জত মান্থলি পেয়েছেন — জানিয়েছেন তমাল ভৌমিক।
এই সংখ্যারই ‘এই লাইনের দুই নম্বরটা যেন আমার বাড়ি কাজে যায়’ খবরটি থেকে সন্তোষপুর স্টেশনে ঘর রঙ করার কাজের জন্য অপেক্ষমান মহিলা শ্রমিকদের সবাই যেন বা দেহ বিক্রি করেন বা করতে বাধ্য হন বলে একটা ধারণা তৈরি হতে পারে। তা ঠিক নয়, তবে লেখাটির প্রকাশভঙ্গিমা ও বিষয় এবং শব্দচয়ন এক অন্য মাত্রা পেয়েছে — বলেছেন নুপুর হালদার, ভাতশালা।
ওই সংখ্যারই প্রথম পাতায় ‘অযন্ত্রচালিত যান নিষেধের বিরুদ্ধে চক্র সত্যাগ্রহ …’ খবরে ‘মাইক বাজেনি’ — এই তো আন্দোলনের এক যথার্থ বিকল্পের বীজ! তবে ‘সাইকেলের দুদিকে চাকা মধ্যে ফাঁকা…’ গানের সাথে বাইসাইকেলের যোগ কোথায়? এ যে মানব জীবনের যৌনতার কথা? চক্র সত্যাগ্রহে শহরের বাউল কন্ঠে এই যে সাইকেল চড়ার আহ্বান — এতে শব্দ হয় অর্থ হয় না, শব্দেরা অর্থ থেকে কেবলই সরে পড়ে দূরে দূরে। বাড়ে শুধু কোলাহল।
১ ও ১৬ নভেম্বরের সংবাদমন্থনের পাতায় ‘মৃত্যু উপত্যকা কেদারনাথ …’ লেখক সাজিশ ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনুবাদের জন্য। ১৬ নভেম্বরের ‘আধার … ‘ অনুবাদের জন্যও লেখক কুরুবিল্লা জন ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
১ নভেম্বরের সংখ্যার দুয়ের পাতায় চলতে চলতে কলামে ‘কাজ দিয়ে মাথা কিনে নিয়েছেন নাকি’ প্রতিবেদনে এক অফিসবাবু ‘বাঁহাতে দুই চড়’ মারেন মুটে মজুর ছেলেদের। আর এক অফিস না যাওয়া বাবু প্রতিবাদ করেন এবং দেখেন, চড় খেয়েও ছেলেটার কোনো তাপ উত্তাপ নেই, এমন সহজভাবে চলে গেল — ‘ওদের সম্মান আমাদের মধ্যবিত্তদের মতো সহজে ভাঙে না।’ কোন আঘাতে কোথায় রক্ত ঝড়ে, কোন অপমান কোথায় জমে ওঠে, তা কি আমরা দেখতে পাই বাইরে থেকে! তবে যদি ওদের কথা কখনও কোনোদিন ওরা সংবাদমন্থনে জানায়, তবে আমাদের এই প্রচেষ্টার কিছু একটা অর্থ হয় — জানিয়েছে বঙ্কিম।
১৬ নভেম্বর সংখ্যায় ‘কানাখুলি ঘোষপাড়ার নাট্যব্যক্তিত্ব অকুদা’ খবরে অকু-দার কবিতা হিসেবে প্রথম যে দু-লাইন উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে — ‘ট্যাক্সি চড়ে ম্যাক্সি পড়ে আসছে আধুনিকা / ভবিষ্যতে এরাই হবে বারবণিতা …’ — শুনতে খারাপ লাগছে। যে কবিতা থেকে এই দু-লাইন তোলা হয়েছে তা পুরোটা জানলে ভালো হত। তবে ওই দুটো লাইনে মনে হচ্ছে, মেয়েদের আধুনিক সাজ করা মানেই খারাপ; এবং বারবণিতা হওয়া যেন শখের ব্যাপার। তার মধ্যে সামাজিক নিপীড়নের ভূমিকা নেই। অকুদা রচিত অন্য যেসব লেখার উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে, সেগুলি পড়লে মনে হয়, উপরিউক্ত লাইন দুটো খাপছাড়া ভাবে তুলে দেওয়ায় তার মর্যাদা রক্ষা হয়নি — জানিয়েছেন তমাল ভৌমিক ও অলোক দত্ত।
১৬ নভেম্বরের কাগজে ‘বাথানিটোলার পর বাথে …’ সংবাদের প্রসঙ্গে পরমেশ আচার্য জানিয়েছেন, ‘… এই বাজার-সমাজের বিরুদ্ধে সামগ্রিক বিশ্বের মানবতাবাদীদের নাছোড় যুদ্ধ চাই। … এমনকী একসময়ের বাম ধারার ম্যাগাজিনগুলোও আজ পুঁজিবাদী সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিচ্ছে বা তাদের পথেই হাঁটছে …’। পরমেশ আচার্যের সম্পূর্ণ মন্তব্য পাওয়া যাবে সংবাদমন্থন ওয়েবসাইটে http://tinyurl.com/qapbpg এ নিয়ে আলোচনা আরও সংলাপ হোক।
Leave a Reply