গত বর্ষায় ভয়ঙ্করতম বন্যা ও ভূমিধ্বসের ক্ষতির ওপর ওপর পরিমাপ করে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছ থেকে চুয়াল্লিশ হাজার পাঁচশো কোটি টাকা দাবি করেছিল। সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্র এক হাজার কোটি টাকা দেবার কথা ঘোষণা করেছিল। আর দেওয়ালির দিন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন আরো সাতশ’ পঞ্চাশ কোটি টাকা। অর্থাৎ দাবির মাত্র চার শতাংশ। তাও সেই সেপ্টেম্বর মাস থেকে এখনও এক পয়সাও ওই রাজ্যটিতে পৌঁছয়নি। এসব কথা জেনে বা না জেনে দেওয়ালির দিন ইংরেজি / বাংলা / হিন্দি টিভি চ্যানেলগুলি ধন্য ধন্য করেছিল নরেন্দ্র মোদিকে। তাদের হাবেভাবে এটা পরিষ্কার ছিল — কাশ্মীর তো, দেওয়া যে হচ্ছে কিছু, এই খুব।
মিডিয়ার মোদি ভজনা হয়ত নতুন, কিন্তু জম্মু কাশ্মীর থেকে শুরু করে মণিপুর — প্রান্তিক রাজ্যগুলিকে প্রায় বিদেশ হিসেবে গণ্য করার ঐতিহ্যটি পুরনো। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কয়েকশো স্বাধীন রাজ্যকে ছলে বলে কৌশলে ব্রিটিশ শাসন এবং দেশভাগ-উত্তর ভারতবর্ষের করায়ত্ত্ব করার কারিগর সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্মদিন ঘটা করে পালনের সরকারি মোচ্ছবের বাজনদার বনে যেতে তাই তাদের বিন্দুমাত্র বাধে না। যদিও প্যাটেল তথা তৎকালীন নীতিনির্ধারকদের এই কু-কাজের মূল্য চোকাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর থেকে মণিপুরের লক্ষ লক্ষ মানুষ — ইনসার্জেন্সি আর মিলিটারির চক্করে।
কয়েক বছর পরে নিজের নিয়মেই সরকার বদলে যাবে, সরকারি প্যাটেল স্মরণও হয়ত ফিকে হয়ে যাবে। মিডিয়ার কী হবে?
Leave a Reply