শমিত, শান্তিপুর, ১৪ ডিসেম্বর#
কালিনারায়ণপুর স্টেশন সংলগ্ন ফুলের মোকামটি প্রতিদিনই জমজমাট হয়ে ওঠে। হাওড়ার ফুলের মোকামের একটা পরিচিতি আছে। কিন্তু কালীনারায়ণপুরের ফুলের মোকামটিও বেশ বড়োসড়ো। নদিয়া জেলার কয়েক হাজার ফুলচাষি পাইকারি ফুলের হাট এটা ছাড়া আর আছে ধানতলাতে। এখান থেকে ফুল বাংলাদেশেও রপ্তানি হয়।
মূলত রজনিগন্ধা, গাঁদা ও গোলাপ নিয়ে ফুলচাষিরা প্রতিদিন হাটে আসে রাতে ও ভোররাতে। শান্তিপুর রানাঘাট কৃষ্ণনগর বাদকুল্লা আরংঘাটা অঞ্চল থেকে ফুলচাষিদের কয়েক কুইন্টাল ফুল এখান থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছায়। বিভিন্ন পুজো ও সামাজিক অনুষ্ঠানে ফুলের চাহিদা থাকে প্রচুর। অন্য সিজনেও কমবেশি ফুল বিক্রি হয় ভালোই। কিন্তু যেদিন বাজার খুব খারাপ থাকে সেদিন চাষিরা আর বাজার থেকে ফুল ফেরত নিয়ে যায় না। চূর্ণী নদীর ধারে সেই অবিক্রীত স্তূপীকৃত ফুল পড়ে থাকতে আমরা প্রায়শই দেখি।
ভোর চারটে থেকে সকাল আটটা-নটা পর্যন্ত ফুলের হাট থাকে সরগরম। প্রতি বছর এই শীতকালে গৃহস্থের ফুলের অভাব হয়। এই সময় গৃহস্থের বাড়ির গাছপালাতেও ফুলের স্বল্পতা খুবই।
ফুলের হাট থেকে সত্তর বছর বয়স্ক শচীন বিশ্বাস ফুলের মালা কিনে এনে শান্তিপুরের পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করেন প্রতিদিন। তাঁর কাছে জানা গেল, প্রতিদিন শান্তিপুরের গ্রামাঞ্চল সংলগ্ন হরিপুর বেলডাঙা বাগআছড়া বাগদিয়া — এই সমস্ত জায়গার প্রায় একশো জন ফুলচাষি কালীনারায়ণপুর ফুলের হাটে যান ভোর চারটে চল্লিশের ট্রেন ধরে। শচীন বিশ্বাসও যান ওই ট্রেনে। উনি খুচরো বিক্রেতা, প্রতিদিন পঞ্চাশ থেকে ষাটটা গাঁদার মালা কিনে এনে বেলা এগারোটা থেকে বারোটার মধ্যে বিক্রি করে একশো পঞ্চাশ থেকে দুশো টাকা রোজগার করেন। শান্তিপুর সূত্রাগড় দালালপাড়ায় তাঁর বাড়ি।
খোলা জায়গায় খোলা আকাশের নিচে এই ফুলের বাজারটি। প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার বেচাকেনা চলে। বৃষ্টির সময় খুবই অসুবিধা। প্রতিদিন ভোরবেলাকার শান্তিপুর থেকে শিয়ালদাগামী ট্রেনে উঠলে চোখে পড়বে রকমারি ফুলের মেলা। সবই কালীনারায়ণপুরের হাট থেকে যাচ্ছে শহরে।
Leave a Reply