সংবাদমন্থন প্রতিবেদন, ১৫ ডিসেম্বর#
অবশেষে ফাঁসি হয়ে গেল বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিশেষ ট্রাইবুনালে দোষী সাব্যস্ত কাদের মোল্লার। ১৯৭১ সালে গণহত্যা, ধর্ষণ সহ একাধিক মানবতাবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিল এই কাদের মোল্লা, যার ডাক নামই হয়ে গিয়েছিল ‘মীরপুরের কসাই’।
আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে তার প্রথমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়। কিন্তু সেই রায় শোনার পর বিজয়ের চিহ্ন ভি দেখান কাদের। গোটা বাংলাদেশ বুঝে যায়, কাদেরের কারাদণ্ড নয়, আরামদণ্ড হয়েছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবনের বদলে ফাঁসির দণ্ড চেয়ে ঢাকার শাহবাগ চত্বরে জমায়েত হয় গুটিকয় ইন্টারনেট সমাজকর্মী ও ব্লগার। ক্রমে ক্রমে এই জমায়েত বাড়তে বাড়তে জনসমুদ্রের আকার নেয় শাহবাগ চত্বর।
বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে এই রায় পুনর্বিবেচিত হয় এবং কাদের মোল্লার ফাঁসির সাজা হয়।
সাজা ঘোষিত হওয়ার পর অভাবনীয় দ্রুততার সঙ্গে এই রায় কার্যকর করে সরকার। কাদেরের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট থেকে কয়েক ঘন্টার জন্য সাজা মুলতুবি পাওয়ার পর এই সাজার স্থগিতাদেশ ও পুনর্বিবেচনার আবেদন নিয়ে কোর্টে সওয়াল জবাব হয়। কিন্তু পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। কাদের মোল্লা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাভিক্ষা চাইতে অস্বীকার করলে ১২ ডিসেম্বর ভারতীয় সময় রাত সারে ন’টায় কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়।
এই ফাঁসির আগের দিন সন্ধ্যেবেলা থেকেই শাহবাগ চত্বরে জমায়েত শুরু হয়ে যায়। ফাঁসির পর বীভৎস আনন্দে মেতে ওঠে শাহবাগ।
এদিকে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার সাথে সাথেই কাদের মোল্লার পার্টি জামাত-ই ইসলামির তাণ্ডব শুরু হয়ে যায় গোটা বাংলাদেশ জুড়ে। শাসক দলের সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর লুঠতরাজ আগুন দেওয়া, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের চেষ্টা প্রভৃতি চলতে থাকে। সেই সাথেই চলতে থাকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর আক্রমণ। সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে সারা বাংলাদেশ জুড়েই সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চাপ বাড়ছে। ভয়ে এবং বাধ্য হয়ে অনেকেই দেশ ছেড়ে চোরাপথে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে।
১৫ ডিসেম্বর রবিবার নেতার ফাঁসিকে ণ্ণরাজনৈতিক হত্যা’ আখ্যা দিয়ে হরতালের ডাক দেয় জামাত-ই ইসলামি। সেই দিন তাণ্ডব, পুলিশি হামলা, এবং সংঘর্ষে ১১ জন নিহত হওয়ার খবর মিলছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে উপজেলা ছাত্রশিবির (জামাতের শাখা) সভাপতিসহ ৩ শিবিরকর্মী নিহত হয়। রসুলগঞ্জ গ্রামে এক আওয়ামি লিগ সমর্থককে গলা কেটে হত্যা করে জামাত সমর্থকরা। জয়পুরহাট শহরের হালুট্টি বাজারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ২ কর্মীসহ ৩ জন নিহত হয়। সাতক্ষীরায় আওয়ামি লিগ সমর্থককে খুন করে জামাত কর্মী, পরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এক জামাত কর্মী নিহত হয়।
সব মিলিয়ে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে এক অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে কাদের মোল্লার ফাঁসিকে কেন্দ্র করে। এরই মধ্যে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ এবং শাসক পার্টি আওয়ামি লিগের রাজধানীর কেষ্টবিষ্টুদের তত্ত্বাবধানে এক বিশাল গান বাজনার আয়োজনের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর পরাজয়ের দিনটিতে ঘটা করে ণ্ণবিজয় দিবস’ পালন করার তোড়জোড় চলছে।
poromesh acharya says
Kader Mollar fanshi onek agei houa uchit chilo. Manthan je “bibhatsa ananda” kathata likheche ta atyonto asimichin katha. Amar mone hoy jara jamater bibhatsata dekheni ba lakhyo koreni tarai emon katha likhte pare. Manthaner kach theke e dharane bhasa asa korina. Shahbager andolon ebong ei fansir por je ullas bhukto bhugi manus dekhieche ami tar sarik hote chai.Poromesh Acharya.