বারাসাত বনমালীপুরের কাছারি ময়দানের কাছে কাঙাল হরিনাথ লিট্ল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বারাসাত কাছারি ময়দান সংলগ্ন পৌর উদ্যানের পাশে টিনের ছাউনি আর দরমার বেড়া দিয়ে তৈরি বর্তমান লাইব্রেরি ঘরটি ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চালু হয়। বর্তমানে জীর্ণ অবস্থায় থাকা এই লাইব্রেরিতে রয়েছে অজস্র মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য পত্র-পত্রিকার সম্ভার। ছাত্রছাত্রী, গবেষক ও লিট্ল ম্যাগাজিনের অনুরাগী পাঠকদের জন্য এটি খোলা থাকে প্রতি বৃহস্পতি ও রবিবার। লাইব্রেরির পত্র-পত্রিকা সাধারণত বাড়িতে নিয়ে যেতে দেওয়া হয় না। এখানে পত্র-পত্রিকা পাঠ করা, নোট করা ও প্রয়োজনে জেরক্স করে নিতে পারে সকল পাঠক ও গবেষক। শিশুদের জন্য রয়েছে একটি আলাদা বিভাগ। শিশুবিভাগের বইপত্রের সংখ্যাও অনেক। সাময়িক পত্রিকার পাঠক কম হলেও তুলনায় শিশুদের বিভাগে পাঠকের সংখ্যা ভালো।
সম্প্রতি পরপর দুই সপ্তাহের দুটি দিন এই লাইব্রেরি থেকে প্রচুর মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য পত্র-পত্রিকা চুরি হয়ে গেল। গত ৩ জুন রবিবার সকালে গ্রন্থাগারিক তথা অন্যতম পরিচালক সুবীর সাহা লাইব্রেরির তালা খুলে জীর্ণ দরমার বেড়া ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। তিনি দেখেন, বেশ কিছু পত্রিকার সেট উধাও হয়ে গেছে। সেদিন স্থানীয় থানায় চুরির খবর জানানো হলেও পুলিশ প্রশাসনের কেউ খোঁজখবর নিতে লাইব্রেরিতে আসেনি। পরের সপ্তাহে রবিবার ১০ জুন লাইব্রেরি খোলার পরে দেখা যায়, আবারও বেশ কিছু পত্রিকার সেট উধাও হয়েছে। দ্বিতীয়বার আবার স্থানীয় থানায় জানানো হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আপনারা এই চুরির ব্যাপারে খোঁজখবর করুন, আমরাও খোঁজখবর করছি’। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই তদন্ত সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রশাসনের তরফ থেকে জানা যায়নি।
লিট্ল ম্যাগাজিনের অনুরাগী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রচুর পরিশ্রমে সংগৃহীত দুষ্প্রাপ্য পত্র-পত্রিকা উধাও হয়ে যাওয়ায় সকলেই মর্মাহত। রাতের বেলায় পিছনের দিকের জীর্ণ দরমার বেড়া ভেঙে চুরি হয়েছে, এমনই সকলের অনুমান। লাইব্রেরি ঘরটির নিচের দিকের কিছু অংশ টিন দিয়ে ঘেরার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় পুরপিতা এবং অন্য শুভাকাঙ্ক্ষীরা অনেকেই মনে করছেন, নিরাপত্তার জন্য লাইব্রেরি ঘরটা পাকা দালান করে নেওয়া দরকার। আপাতত পরিচালক সুবীর সাহা রাতে মশারি খাটিয়ে লাইব্রেরিতে রাতপাহারা দিচ্ছেন।
২৮ জুন, সুনীল হাওলাদার, বারাসাত
Leave a Reply