সঞ্জয় ঘোষ, জয়নগর, ৩১ ডিসেম্বর#
বাড়ির উঠোনে কাঁঠাল গাছটা বড্ড ঝাঁকড়া হয়ে গেছে। পাতা ভরে গেছে। শুকনো পাতাগুলো উঠোন আর নর্দমা ভরিয়ে দিচ্ছে। তাই সেদিন যখন ছেলেটা এসে জিজ্ঞাসা করল কাঁঠাল পাতা বিক্রি করব কি না, দরদাম করে রাজি হয়ে গেলাম। ফিড়কি, মানে সরু ডালগুলো সব কাঁঠাল পেড়ে নেবার পরে কেটে দিলে নাকি পরের বার ভালো কাঁঠাল হয়। সে তো গরম কালে। কিন্তু এখন গভীর শীতকাল, সবে কাঁঠাল ধরছে, এখন কাটা হয়তো ঠিক হল না। কিন্তু পাতা পড়ে ভরাচ্ছে উঠোন, তাই বিরক্ত হয়ে কাটতে বললাম।
ও ফুলপ্যান্ট ছেড়ে ভেতরের হাফপ্যান্ট পরে গাছে উঠে সরু ডাল শুদ্ধু পাতা কেটে উঠোনে ভর্তি করল। তারপর নিচে নেমে সরু ডালশুদ্ধু পাতাগুলোকে সাইজ করতে লাগল, মানে অপ্রয়োজনীয় অংশ দা দিয়ে কেটে বাদ দিতে লাগল যাতে নিতে সুবিধা হয়। ইতিমধ্যে ওর মোবাইল ফোন থেকে ফোন করে ওর চেয়ে সামান্য ছোটো একটা ছেলেকে ডেকে এনেছে। ওর নিজের নাম আমির হোসেন। বয়স ২১। জয়নগরের উত্তরদিকের ঠিক পরের ষ্টেশন বহড়ুতে ওর বাড়ি।
আমির ওদের পাড়ার ইউসুফ আলির অধীনে লেবারের কাজ করে। কাঁঠাল পাতা বিক্রির ব্যাবসাটা ইউসুফের। আমিরের কাজ, কোথায় কে পাতা বিক্রি করবে খুঁজে বের করে কেটে সাইজ করে রিক্সা ভ্যানে তুলে বহড়ু পৌঁছে দেওয়া। ওখান থেকে ট্রেনে পার্কসার্কাসে নিয়ে গিয়ে বিক্রি হয়। কাঁঠাল পাতা ছাগলে খায়। ওদের পাড়ায় ১০-১১টা পরিবার এইরকম কাঁঠাল পাতা বিক্রির ব্যাবসা করে বলে আমির জানাল।
আমিরের বাবা মা আর দুই ভাই আছে। এক ভাই কলকাতায় চামড়ার ব্যাগ তৈরির কাজ করে। আর এক ভাই দর্জির কাজ করে।
Leave a Reply