অমিতা নন্দী, আকড়া, ৩০ আগস্ট#
২৬ আগস্ট রবিবার সন্ধ্যায় এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হল এখানকার একজন মানুষকে যাঁর নাম শ্রী অমলেন্দু দাশ। রেঙ্গুন থেকে এদেশে এসে কর্মজীবনে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পদস্থ ড্রাফটসম্যান হিসাবে কাজ করলেও তিনি সারা জীবন একনিষ্ঠ ভাবে সংগীত সাধনা করে গেছেন। শুধু যে নিজে নিষ্ঠাভরে রেওয়াজ করেছেন এবং তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যাকে তাতে শামিল করেছেন তাই নয়, যখন যেখানে থেকেছেন আত্মীয়-অনাত্মীয়-প্রতিবেশী নির্বিশেষে সর্বত্র ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের গান এবং শেষ কয়েকবছর কবিতা আবৃত্তি শিখিয়ে গেছেন সম্পূর্ণ স্বেচ্ছা-শ্রমে, পরম আনন্দে। বেশ কিছু ছড়া ও কবিতায় তিনি সুরও দিয়েছিলেন।
কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর গ্রহণের পর অনেকে যখন বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন কিংবা ধর্মকর্মে মন দেন, অমলেন্দুবাবু গান-বাজনার জন্য অনেকটা সময় পাবেন ভেবে খুশিতে উদ্বেল হয়ে ওঠেন। কয়েকবছর আগে ওঁর পায়ের (কোমরের) হাড় ভেঙে যাওয়া ও অপারেশনের পর থেকে একটা ক্রাচ ছাড়া হাঁটতে পারতেন না। সঙ্গে প্রায়ই ওঁর স্ত্রী, পরের দিকে পাড়ার নাতিনাতনিরা থাকত পুকুরপারে হাঁটার সময়। সেই বাচ্চাদের সঙ্গে আলাপ জমিয়ে অদ্ভুত ভালোবাসায় আকৃষ্ট করে তিনি আবৃত্তি শেখাতে শুরু করেন আর হয়ে ওঠেন ওদের কবিতা-দাদু। আবৃত্তি-গান শেখার ফাঁকে দিদিমার হাতে তৈরি মোয়া-নাড়ু আর দাদুর সঙ্গে হরেকরকম গল্প আর ব্যাগাডেলি খেলা ছিল ওদের বিশেষ আকর্ষণ।
সেই সব শিশুরা আজ অনেকে কিশোর-কিশোরী। তারা আর তাদের মা-বাবা এবং আরও কিছু প্রতিবেশী-পরিজন তাঁর মৃত্যুর (২ আগস্ট ২০১১) একবছর পরে সুন্দর এক খোলামেলা আন্তরিক আলাপচারিতায় শ্রদ্ধা-ভালোবাসা জানালো সবার প্রিয় এই সদাহাস্যময়, উদার-হৃদয় অনন্য-সাধারণ মানুষটির স্মৃতির প্রতি।
Leave a Reply