১৪ ফেব্রুয়ারি, অমর নস্কর, সরকারপুল, মহেশতলা#
আমি তিরিশ বছরের বেশি সময় ধরে বেহালায় সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করে আসছি। চলার পথে পড়ত রাস্তা আর দু-পাশে ফুটপাত। আমার বাড়ি সরকারপুলে। সেখান থেকে বেরিয়ে জিনজিরাবাজারে ঢুকতেই দেখতে পাই ফুটপাত উধাও। জিনজিরাবাজার থেকে পর্ণশ্রী, পর্ণশ্রী থেকে বেহালা থানা উপেন ব্যানার্জী রোড বনমালী নস্কর রোড এবং পর্ণশ্রীর আশেপাশের রাস্তাগুলোতে সমস্ত হকারদের দোকানপাট তুলে দিয়ে পুরো পিচঢালা হয়েছে। ওদিকে মহেন্দ্র ব্যানার্জি রোড, বেহালা ট্রামডিপো, জয়রামপুর জলা রোড, বেচারাম চ্যাটার্জি রোডেও ফুটপাত উড়িয়ে দিয়ে পুরো পিচ ঢেলে দেওয়া হয়েছে।
ডায়মন্ড হারবার রোডে টানা আধ মাইল গিয়ে তবে এপার-ওপার করতে হচ্ছে। রাস্তা পার হতে অযথা পনেরো মিনিট হাঁটতে হচ্ছে। দু-পারের স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও অসুবিধা হচ্ছে। রাস্তার দুদিকের সমস্ত গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তারাতলা থেকে ঠাকুরপুকুর পর্যন্ত জেমস লঙ সরণিতে এখন ফুটপাত দুই থেকে আড়াই ফুট চওড়া। সেখানেও গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। রায়বাহাদুর রোডেও তাই। হকাররা অগত্যা ড্রেনের ওপর গিয়ে বসছে। বেহালায় এখন আর হাঁটার রাস্তা থাকছে না। চলতে গেলেই অ্যাকসিডেন্ট হতে পারে, হচ্ছেও। এই তো সেদিন একজন বয়স্কা মহিলা রাস্তা এপার-ওপার করতে গিয়ে মারা গেলেন সকলের চোখের সামনে।
আগে আমরা বেহালা থেকে ধর্মতলা গেলে বলতাম কলকাতায় যাচ্ছি। এখন বেহালা মানে একশো শতাংশ কলকাতা। বেহালা আর মফস্বল নয়। বেহালা এখন কলকাতা কর্পোরেশনের খোদ মেয়রের এলাকা। অথচ রাস্তার ওপরেই অকাতরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ভ্যাট। ট্রামডিপোর উল্টোদিকে বেহালা বাজারের সামনে, বেহালা থানার উল্টোদিকে, অজন্তা সিনেমার উল্টোদিকে শ্রীদুর্গার মিষ্টির দোকানের পাশে কলকাতার শোভা বর্ধন করছে ভ্যাট।
Leave a Reply