অমৃতা মুখার্জি, খড়দহ, ২০ আগস্ট#
গত ১৭ আগস্ট মাতৃভূমি স্পেশালের তিনটে বগিকে জেনারেল বগি করে দেওয়ার জন্য খড়দহ স্টেশন চত্বর কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। মহিলা যাত্রীরা ট্রেন অবরোধ করেন। পুরুষ যাত্রীদের সাথে বচসা বাধে। ঢিল ছোঁড়াছুঁড়ি, র্যাফ নামানো প্রভৃতি কারণে মেনলাইনে প্রায় চার ঘন্টা রেল চলাচল বন্ধ থাকে। এবং রেল-এর তরফ থেকে এই মাতৃভূমি স্পেশালের তিনটি বগিকে জেনারেল বগি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখা হয়।
আমি একজন রোজকারের যাত্রী। প্রায় আটবছর ধরে লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করছি। পরের দিন আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়াতে দেখলাম বলা হয়েছে যে এই মহিলা ট্রেনগুলোর তিরিশ শতাংশ নাকি খালিই যায়। দেখে প্রতিবাদ না করে পারছি না।
সাধারণ ট্রেনগুলোতে একটা মহিলা বগি থাকে। তার অর্ধেকটা থাকে সামনের দিকে। আর বাকি অর্ধেকটা থাকে পেছনের দিকে। একটা গোটা বগিতে ১২০ জন যাত্রী বসে যেতে পারে। মানে অর্ধেক কামরাতে ৬০ জন। তারমধ্যে চারজন করে একটা সিটে বসে। হিসেব করে দেখবেন, ৬০ জনের জায়গায় ৭২ জন বসে। এবং দুটো সিটের মধ্যে আটজন দাঁড়ায়। মানে যতজন বসে, ততজনই দাঁড়িয়ে যায়। এছাড়া মাঝের ফাঁকা জায়গা আর দুটো গেটের সামনে চাপাচাপি করে ৮০-৯০ জন দাঁড়ায়। তার মানে মোট ৭২+৭২+৮০/৯০=২২৪/২৩৪ জন। যদি কোনো অসুস্থ বা প্রেগন্যান্ট মহিলা থাকে, তাদের অবস্থা কহতব্য হয় না। এই হলো অফিস টাইমে মহিলা কামরার নিত্য পরিচিত দৃশ্য।
সাধারণ ট্রেনে রেল ৯ বগি ট্রেন-এর জন্য মাত্র এক বগি মেয়েদের জন্য বরাদ্দ করেছে। আমার কোনো পুরুষ সহযাত্রী হয়ত বলবেন, যে জেনারেল বগিতে মেয়েরা তো উঠতেই পারে। কিন্তু শিষ্ঠাচার আর সহযোগিতা ওই ভিড়ে আশা করা সম্ভব নয় বলে মেয়েরা মেয়েদের জন্য বরাদ্দ কামরাতেই ওঠে। আমি একটা জিনিস জানতে চাই, আজকের দিনেও কি পুরুষ ও মহিলা যাত্রীর অনুপাত ৮:১ হয়? মানে ৮ জন পুরুষ বেরোলে ১ জন মহিলা বেরোন ঘর থেকে? তাহলে কোন রীতিতে ৮টা বগি ছেলেদের হলে ১টা বগি মেয়েদের হয়? আমি সবার মতামত জানতে চাই। আর কবে মেয়েদের এই ভোগান্তি শেষ হবে?
Leave a Reply