- ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০২ গুজরাতের গোধরা স্টেশনে সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ফলে ৫৮ জন মারা যায়, যাদের মধ্যে বেশ কিছু লোক অযোধ্যা থেকে করসেবা করে ফিরছিল। পরদিন সেই মৃতদেহগুলি আহমেদাবাদ নিয়ে গিয়ে মিছিল করার অনুমতি দেয় মোদির সরকার। শাসক দলের সমর্থনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বনধ্ ডাকে। এই শবদেহ নিয়ে মিছিল এবং বনধ্ থেকে শুরু হয় প্রায় গোটা গুজরাত জুড়ে মাসাধিক কাল ব্যাপী হিংসা। মোদি প্রকাশ্যে বলেন, এই হিংসা গোধরার ঘটনার প্রতিক্রিয়া।
- গুজরাত সরকারের পরিসংখ্যান, সেখানকার ২৫টি জেলার মধ্যে অন্তত ১৫টিতে, ১৫১টি শহরে এবং ৯৯৩টি গ্রামে এই সাম্প্রদায়িক হিংসা ঘটে।
- সরকারি মতে মোট মৃতের সংখ্যা ১২০০-র কিছু বেশি। বেসরকারি মতে আড়াই হাজার। তার মধ্যে আড়াইশ’ জনের লাশটুকুও পাওয়া যায়নি। ৭০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়।
- সরকারি হিসেবে ২৭৩টি দরগা, ২৪১টি মসজিদ, ১৯টি মন্দির এবং ৩টি চার্চ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- এখনও পর্যন্ত গোধরার ঘটনার জন্য ৩১ জন আর তার পরবর্তী হিংসার জন্য ২১৮ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছে বিভিন্ন আদালতে।
- হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর ২০০২ সালের মে মাসের রিপোর্টে আছে, গুজরাতের রাজ্য সরকারি অফিসাররা সরাসরি এই হিংসায় জড়িত ছিল, এবং পরে সেগুলি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ব্যাপক কারচুপি করে।
- ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত ণ্ণবিশেষ তদন্ত কমিটি’র রিপোর্টে জানায়, এই হিংসায় মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা ছিল না, কারণ তিনি সেনা নামানো, ত্রাণ শিবির খোলা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনায় ভূমিকা নিয়েছিলেন। এই কমিটির রিপোর্টের তীব্র বিরোধিতা করে সমাজকর্মীরা। মোদি সরকার প্রথম থেকেই তথ্য লোপাট, সাক্ষীদের ভয় দেখানো, ইমানদার অফিসারদের শাস্তি প্রভৃতির মাধ্যমে সত্য আড়াল করেছে বলে জানায় তারা।
- গুজরাত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত অ্যামিকাস কুরি ণ্ণবিশেষ তদন্ত কমিটি’র মোদিকে ছাড় দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করে। এক আইপিএস অফিসারের হলফনামা উদ্ধৃত করে বলা হয়, মোদি গোধরার ঘটনার রাতে পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করে এই হিংসার রূপরেখা তৈরি করেন — এই অভিযোগ থেকে এখনই নিষ্কৃতি পাওয়ার কোনও কারণ নেই।
Leave a Reply