রাকেশ বিশ্বাস, শান্তিপুর, ২৭ ফেব্রুয়ারি#
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি/ ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু/ গড়ায়ে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি।
আবদুল গফফর চৌধুরির লেখা গানটি আজও আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার দিনটিকে। পাকিস্তান সরকারের স্বৈরতন্ত্রে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষারূপে স্বীকৃতি দিতে গিয়ে বাংলাদেশে শিক্ষক ও ছাত্র সহ আরও অনেক যুবক পুলিশের গুলিতে প্রাণ দেয়। ঢাকার রাজপথ যাদের রক্তে রাঙিয়ে গিয়েছিল, তারা হল, বরকত, জব্বর, সালাম, শফিউর রহমান এবং এক অজ্ঞাত বালক। আজ সেই দিনটিকে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করি।
শান্তিপুর কলেজের পাশে শহিদবেদির পাদদেশে শান্তিপুর সাজঘর নামে নাট্যদলটি প্রতিবছরের মতো এবছরও একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি পালন করে অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সহ দুটি নাট্যদল এবং খেয়া, গোরাগাঙনি ও জোনাকি নামে তিনটি সাহিত্য পত্রপত্রিকার বেশ কিছু সদস্য সদস্যা। অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সকাল সাড়ে ছ-টা নাগাদ, সঞ্চালনা করেন সাজঘর নাট্যদলের সদস্য দীনবন্ধু বিশ্বাস। মোমবাতি প্রজ্বলন করেন সাংস্কৃতিক নাট্যদলের কৌশিক চট্টোপাধ্যায়। পুষ্পদান করেন রঙ্গপীঠ নাট্যদলের নীলিমা বিশ্বাস। নীলিমা বিশ্বাস বলেন, চ্ছ্রযুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চলতে বাংলাভাষাকে আমরা প্রায় ভুলেই গিয়েছি। বিশুদ্ধ বাংলাভাষা প্রায় বলাই হয়ে ওঠে না। আমাদের সকলকে বাংলাভাষায় কথা বলতে হবে।’ কৌশিক চট্টোপাধ্যায় জানান, পৃথিবীর মিষ্টতম ভাষা বাংলাভাষা। আন্তর্জাতিক স্তরে অমূল্য নয়।
এরপর শুরু হয় প্রভাতফেরি। ৩২নং জাতীয় সড়ক ধরে প্রায় ঘন্টা দেড়েক মাতৃভাষার গান ও কবিতা আবৃত্তির মধ্যে দিয়ে শান্তিপুর ডাকঘরের সামনে রবীন্দ্র কাননে সকলে উপস্থিত হয়। সেখানে নাট্যব্যক্তিত্ব শমিত বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথের মূর্তিতে মাল্যদান করে অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত করেন।
Leave a Reply