প্রবীর হালদার, মথুরাপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ২৬ জুলাই##
আমাদের পাঁচ বিঘা মতো জায়গা আছে। আষাঢ় মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত দুধেশ্বর বীজধানটা ফেলা হয়েছে। বীজতলা আমরা নিজেরাই করি। ২৫ তারিখের মধ্যে বীজতলাটা বড়ো হয়। সেটাকে মাঠে ট্রাক্টর বা গরুর হাল দিয়ে বোনা হয়। এবছর যা অবস্থা, শ্রাবণ মাসের ১০ তারিখ হয়ে গেল, যে পরিমাণ জলের প্রয়োজন এখনও পর্যন্ত তার এক সিকি পর্যন্ত জল নেই। চার কড়া মতো (জমির ওপর এক ইঞ্চি) জল ছিল জমিতে, তাতে বীজতলাটা বোনা গেছে। বৃষ্টি হচ্ছে না। জলটা প্রচণ্ড গরমের জন্য কমেও যাচ্ছে। গাছগুলো লাল হয়ে যাচ্ছে। এর কোনো ওষুধেও কাজ হবে না, সার দিলেও বাঁচবে না। একমাত্র এর প্রয়োজন জল।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি জল হয়, তাহলে ইউরিয়া, সুফলা আর ডিএপি দিয়ে গাছটাকে স্ট্রং করা যাবে। এর মধ্যে যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে একেবারে শেষ হয়ে যাবে। এখন লোকের ২০০ টাকা মজুরি। একটা জমিতে বীজ বুনতে গেলে ৬ জন লোকের পিছনে ১২০০ টাকা লাগে। এক বিঘা জমিতে ট্রাক্টরে হাল দিতে ৩৫০ টাকা পড়ে। সেই হিসাবে একটা খরচ হয়ে গেছে। পাঁচ বিঘা জমিতে ৪২০০ টাকা মতো খরচ। এরপর যদি প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়, গাছের গোড়ায় ঘাস জন্মাবে। ওগুলো পরিষ্কারের জন্য লোক লাগবে। সেই হিসেবে এবছর অবস্থা খারাপ। বৃষ্টি হলে গাছের গোড়াটা মোটা হবে, একটা থেকে দশটা হবে।
গত বছর বিঘেতে ৬ বস্তা (৬০ কেজির বস্তা) মতো ধান হয়েছিল। এবছর বোরোটাও ভালো হয়েছিল। বিঘেতে ৯ বস্তা ধান হয়েছিল। ওর খরচও একটু বেশি, ফসলটাও ভালো পাওয়া যায়। আমাদের নিজেদের ঘরের প্রয়োজনের ধানটা রাখতে হয়, একস্ট্রা যেটা হয় বিক্রি করি। কারণ চাষের খরচটা তুলতে হয়। ফলনের ওপর নির্ভর করে। আমাদের জমিটা নিচু, এঁটেল মাটি। সবজির চেয়ে ধানটাই ভালো হয়।
Leave a Reply