সাধন চন্দ্র সরকার, ভোটেরহাট, ফলিমারী, কোচবিহার, ২৯ জুন ২০১৫#
কোচবিহার সদর ১নং ব্লকের ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভোটেরহাট গ্রাম। জনসংখ্যা প্রায় ১২০০। গ্রামের মূল জীবিকা কৃষিকাজ। এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্যে যে ট্রান্সফরমারটি বসানো হয়েছিল তা গত ২০ জুন ২০১৫ বিকল হয়।
এই সময়ে জমিতে জলসেচের জন্যে পাম্প চালানো খুব জরুরি নইলে জমির ধান নষ্ট হয়ে যাবে আর পাটও জ্বলে যেতে পারে। ট্রান্সফর্মার বিকল হবার পরেই কোচবিহারের নিউটাউন সেক্টরে সত্বর জানানো হয়। বিদ্যুৎ পরিষেবার অফিসে নানা টালবাহানা আর গরিমসির মধ্যে দিয়ে এক মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো সুষ্ঠু সুরাহা হয়নি। গ্রামের জীবনযাত্রা ক্রমশই বিপর্যস্ত হতে থাকে। গ্রামের প্রত্যেকটি মানুষের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে জুলাই মাসের মাঝামাঝি আক্রারহাটে প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। দীর্ঘক্ষণ অবরোধ থাকার পর বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তারা এলে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথাবার্তা বলে ট্রান্সফর্মারটি দ্রুত সারিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি আদায় হলে পথ অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তারপরও কোনো কাজ হয় না।
সাতদিন পর আবারো ওই অঞ্চলে পথ অবরোধ করে গ্রামের মানুষ। এরপর গত ২৮ জুলাই অবস্থা সঙ্গীন হয়ে উঠলে ভোটেরহাটের জনগণ একত্র হয়ে কোচবিহারের নিউটাউন সেক্টর অফিসে যায়। সেখানে স্টেশন মাস্টার সাহেবকে এই সমস্যার কথা জানালে তাঁর সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন গরমে ক্লান্ত মানুষের ক্ষোভের প্রকাশ ঘটে। স্টেশন মাস্টার সাহেবকে প্রায় ২ ঘন্টা তাঁর নিজের ঘরেই দরজা, জানলা, ফ্যান বন্ধ করে বসিয়ে রাখে। তারপর আবার আলোচনা শুরু হলে স্টেশন মাস্টার সাহেব ৩০ জুলাই তারিখে বিকল ট্রান্সফর্মারটি সারানোর ব্যাপারে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ কিছুটা স্তিমিত হয়।
এখন উত্তরবঙ্গ তথা কোচবিহারে চলছে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ৩৫-৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে। এই অবস্থায় বাড়িতে শিশু এবং বৃদ্ধদের অবস্থাই সবচেয়ে খারাপ। গরমে মারা গিয়েছে গ্রামের প্রবীণ মানুষ সূর্য্যকান্ত রায় এবং আরও এক প্রবীণ নারায়ণ সরকার অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী। ট্রান্সফর্মারটি সারানোর প্রতিশ্রুতি পেলেও তার বাস্তবায়ন সম্পর্কে সবার মনেই আশঙ্কা রয়েছে।
Leave a Reply