২৮ অক্টোবর ডিএনএ নিউজে প্রকাশিত শঙ্কর রায়ের লেখা থেকে নেওয়া#
পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ মাছের উৎপাদন ২০০১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ৮০,০০০ টন থেকে কমে ২০,০০০ টনে এসে দাঁড়িয়েছে। পরিণীতা দান্ডেকার নামে একজন গবেষক তাঁর সমীক্ষায় পেয়েছেন, ভাগিরথী নদীর ওপর ফরাক্কা বাঁধ নির্মাণের ফলে ইলিশ মাছ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ১৯৬০–এর দশকে এলাহাবাদে প্রতি কিমি গঙ্গার জলে ৯১ কেজি ইলিশ পাওয়া যেত, ২০০৬ সালে তা প্রায় শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছে। পাটনায় ওইসময়ে প্রতি কিমিতে ৯৭.১৭ কেজি থেকে ১.২ কেজিতে কমে এসেছে। ইলিশ যখন ডিম পাড়ার জন্য উজানে সরে যায়, তার আগে সমুদ্রের উপকূল ও নদীর মোহানায় জেলেদের জালে ধরা দেয়। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি নদীর মোহানায় ইলিশ উৎপাদন এত কমে গেছে যে সাধারণ পরিবারে আর ইলিশ মাছ খাওয়ার কথা ভাবাই যায় না।
আপাতভাবে বাংলাদেশে অবস্থা এতটা খারাপ নয়। বিশ্বের ইলিশ উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি ওই দেশেই হয়। ব্রহ্মপুত্র থেকে উৎসারিত ভাগিরথী, পদ্মা ও মেঘনা নদীর অববাহিকা নিয়ে গঠিত পৃথিবীর বৃহত্তম জলাভূমি। এখানেই বরাবর ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে। সারা পৃথিবীতে পারস্য উপসাগর, রেড সি, আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর, ভিয়েতনাম সাগর ও চীন সাগরে ইলিশ মাছ দেখা গেছে। সাতিল আরব, ইরান ও ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস, পাকিস্তানের সিন্ধুনদ ও মায়ানমারের ইরাওয়াডি নদী হল ইলিশের আবাস। নদীগুলির ওপর বড়ো বড়ো বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীর গতিপ্রকৃতির এমন কিছু পরিবর্তন হয়েছে যে নদীর মাছগুলি শেষ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া শোধন না করেই বর্জ্য সমেত ময়লা জল নদীতে এনে ফেলার কারণে জলের মানের এত অবনতি হয়েছে যে ইলিশের মতো বহু মাছই উধাও হয়ে যাচ্ছে।
Leave a Reply