২ থেকে ৬ আগস্ট ১১ জন গান্ধীবাদী কর্মী (সর্ব সেবা সংঘের সভানেত্রী রাধা ভাট ও সম্পাদক চন্দন পাল, শান্তি সাধনা আশ্রমের সম্পাদক হেমভাই সহ) চিরাং ও কোকরাঝাড় জেলার দাঙ্গাবিধ্বস্ত অঞ্চলে হিংসার কারণ অনুসন্ধান এবং জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে সরেজমিন তদন্তে যান। ৮ আগস্ট প্রেরিত তাঁদের রিপোর্টের অংশ এখানে বাংলায় অনুবাদ করা হল। শান্তি ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফেরাতে এই দলটি কিছু আশু ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছে#
আশা করা হয়েছিল যে বোড়ো জঙ্গিরা ২০০৩ সালের চুক্তির পর তাদের অস্ত্র সমর্পন করবে। কিন্তু তা হয়নি। অস্ত্রের সরবরাহ বন্ধ হয়নি। সরকারও রাজনৈতিক কারণে বোড়ো জঙ্গিদের নিরস্ত্রীকরণ চায়নি। বোড়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট শাসক জোটের শরিক এবং সরকার বোড়োদের চটাতে চায় না। আধুনিক অস্ত্র অবাধে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর জঙ্গিদের হাতে যাচ্ছে।
গত কয়েক বছর যাবৎ ‘বোড়ো টেরিটোরিয়াল অটোনমাস ডিস্ট্রিক্টস’ বিটিএডি এলাকাগুলিতে নবাগত মুসলমান বাসিন্দা এবং বোড়োদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। জমির দখল এবং হারানোর আশঙ্কা থেকেই এই উত্তেজনা। চক্রশিলা ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঙচুয়ারির মধ্যেই রয়েছে বোড়োদের বেদলংমারি গ্রাম। স্যাঙচুয়ারি এলাকায় হাজার হাজার নতুন মুসলমান বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। সেখানে সম্প্রতি ‘ঈদগাহ’ লেখা একটা সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছিল। তারা জানতে পারে যে ফরেস্ট অফিসারেরা প্রাক্তন বোড়ো জঙ্গিদের ওই সাইনবোর্ড খুলে ফেলতে বলে। এর প্রতিবাদে ‘অল আসাম মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ আমসু কোকরাঝাড় জেলায় বনধ ডাকে। ইতিমধ্যে ‘অল বোড়োল্যান্ড মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ এবিএমসিইউ-এর সভাপতি এবং তাঁর সঙ্গীকে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতি গুলি করে। তাদের পায়ে গুলি লাগে, কিন্তু তাঁরা বেঁচে যান। মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরা সন্দেহ করেন, বোড়োদের কেউ এই গুলি চালিয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যখন আঁথিরপাড়ায় দুই এবিএমসিইউ সদস্যকে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতিরা গুলি করে হত্যা করে। ফের ১৯ জুলাই মাগুরমারিতে আরও দুজন এবিএমসিইউ নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সন্দেহ করা হয় বোড়ো লিবারেশন টাইগারের প্রাক্তন জঙ্গিরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ২০ জুলাই রাতে বাঙালি মুসলমানদের এক জনতা বোড়ো লিবারেশন টাইগারের চার আত্মসমর্পনকারী জঙ্গিকে হত্যা করে। এই ঘটনার পর দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। ২৩ জুলাই চিরাং জেলাতে এবং পরে ধুবড়িতেও হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
Leave a Reply