সংবাদমন্থন প্রতিবেদন, ২৯ মার্চ. ছবি শহীদ রুমী স্কোয়াড-এর ফেসবুক পেজ থেকে#
শাহবাগ আন্দোলনের গণজাগরণ মঞ্চের দেওয়া ২৬ মার্চ-এর আল্টিমেটাম পার হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সরকার শাহবাগের দাবিগুলিতে মোটেই কর্ণপাত করেনি। এই প্রসঙ্গে গণজাগরণ মঞ্চের ইমরান বলেন, ‘২৬ মার্চের আগেই সংশোধিত আইনের অধীনে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যায় নেতৃত্বদানকারী সন্ত্রাসী শক্তি জামায়াতে ইসলামী বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানিয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আল্টিমেটামের সময় পেরিয়ে গেলেও সরকারের টনক নড়েনি।’
তাঁর আরও অভিযোগ, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা ও এর প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ১৯৯৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ থাকলেও সরকার কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। সম্প্রতি জামায়েতের নিবন্ধন বাতিল প্রসঙ্গে হাইকোর্টের একটি রিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই রিটের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন যদি বাতিলও হয়, তবুও এই দেশবিরোধী দলটি রাজনৈতিক দল হিসাবে অপকর্ম চালিয়ে যাবে।’
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের দাবি না মানা প্রসঙ্গে ইমরান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের একটি গণমাধ্যমের ধর্মীয় উস্কানিদাতা সম্পাদককে গ্রেপ্তারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হলেও সরকার কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি।
এপ্রসঙ্গে ক্ষুদ্র পরিসরের মিডিয়া ব্লগ এবং দানবাকৃতির বড়ো মিডিয়াগুলির তুলনা টেনে ইমরান বলেন, ‘ব্লগের ক্ষুদ্র গণ্ডি থেকে অবমাননাকর বিষয়গুলো যে গণমাধ্যম হীন উদ্দেশ্যে ছাড়ালো সেই গণমাধ্যমের বিষয়ে সরকার নিশ্চুপ। অথচ আমরা দেখলাম বাংলা ব্লগগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার প্রজ্ঞাপণ জারি করেছে।’
সরকারের প্রতি বিষোদগার করলেও গণজাগরণ মঞ্চ মামুলি কিছু কর্মসূচীর বেশি নিতে পারেনি।
কিন্তু ওই দিনই রাত সাড়ে দশটা থেকে যাদুঘরের সামনে জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবীতে আমরণ অনশনের কর্মসূচী নেয় শাহবাগ আন্দোলনের একটি অংশ, ‘শহীদ রুমী স্কোয়াড’। এই কর্মসূচীর সঙ্গে সংহতি জানায় ‘শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্কোয়াড’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘শিক্ষা অধিকার মঞ্চ’ এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বোধন’।
তাদের সাতজন তরুণ এই অনশন শুরু করে এবং পরদিন আরও দু’জন এই অনশনে যোগ দেয়।
গণজাগরণ মঞ্চের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা জানিয়ে এই সংগঠনটি জানায়, আল্টিমেটাম না মানায় পরবর্তী সময়ের জন্য গণজাগরণ মঞ্চের তরফ থেকে যে সকল কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা এবং সমর্থন দলটির আছে। বরাবরের মতোই প্রতিটি কর্মসূচিতে স্কোয়াডের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ থাকবে সক্রিয়ভাবেই। গণজাগরণ মঞ্চও এই অনশনের বিরোধিতা করেনি। এই রুমী স্কোয়াড-ই শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের বিশাল শহীদ জননী জাহানারা ইমামের প্রতিকৃতি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল।
২৯ মার্চ অনশনকারী মানিক সূত্রধর-এর শরীর খারাপ হয়ে যাওয়ায় তাকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই অনশনকে সংহতি জানিয়ে প্রায় শ’খানেক মানুষ প্রতীকি অনশনে সামিল হয়েছে। তাদের মধ্যে আছে বেশ কিছু ব্লগার, যারা সামহোয়ারইন ব্লগে লেখে। বিকেলে গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার অনশনস্থলে যান ও সংহতি জানান।
Leave a Reply