আফ্রিকার আদিবাসী সমাজের একটা গল্প বলি। একজন নৃতাত্ত্বিক সেখানকার বাচ্চাদের একটা খেলা খেলতে দেন। তিনি একটা গাছের নিচে এক ঝুড়ি ফল রাখলেন। এবার তিনি বাচ্চাদের বললেন, ‘যে আগে ওই গাছের নিচের ঝুড়িটার কাছে পৌঁছাতে পারবে, সে ওই ফলগুলো পাবে।’ তিনি ওদের দৌড়োতে বললেন। বাচ্চারা কিন্তু প্রথমে প্রত্যেকে অপরের হাত ধরল। তারপর একসাথে দৌড়োতে শুরু করল। গাছের নিচে পৌঁছে ওরা বসে পড়ল। এবার ঝুড়ি থেকে মিষ্টি ফলগুলো বের করে খেতে লাগল সবাই মিলে। নৃতাত্ত্বিক ওদের জিজ্ঞেস করলেন, কেন ওরা একসাথে দৌড়োল? কেউ যদি আগেভাগে দৌড়ে পৌঁছে যেত, তাহলে একাই সবগুলো ফল জিতে নিতে পারত! ওরা বলল, ‘উবুনতু, যদি অন্য সকলে দুঃখ পায়, তাহলে কী করে আমরা খুশি হব?’ স্থানীয় সংস্কৃতিতে উবনতু কথার অর্থ হল, ‘আমি আছি, কারণ আমরা সকলে আছি’।
কলকাতায় বীজ উৎসবের শেষদিন রবিবার ২৯ এপ্রিল এই গল্পটা বলেন, প্রাকৃতিক চাষের কাজে যুক্ত ভরত মানসাটা। তার আগের রবিবার ছিল বসুন্ধরা দিবস। বসুন্ধরার পারস্পরিক বোধটা উপলব্ধি করতে বড়োদের বেশ অসুবিধা হয়। কারণ আমাদের শরীর আর মনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রতিযোগিতার চিন্তা। একমাত্র শিশুরাই সহজভাবে বসুন্ধরার পারস্পরিকতাকে বোঝে, যতক্ষণ না বড়োদের পাল্লায় পড়ে তাদের মগজ ধোলাই হয়।
Leave a Reply