• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

‘আমরা টিভি দেখে জানতে পারি যে আমাদের ছেলেরা মারা গেছে’ : রফিকুল শেখের (১২) মা

June 18, 2015 admin Leave a Comment

শ্রীমান চক্রবর্তী, নতুন চাঁদরা, ১৪ জুন। অনুসন্ধানকারী দলটিতে ছিলেন মুহাম্মদ হেলালউদ্দিন, শমীক সরকার, শ্রীমান চক্রবর্তী, চিররঞ্জন পাল এবং মুহাম্মদ রাকিন শেখ।#

রবিবার সাত সকালে বিড়ি বাঁধতে বসেছে বস্তির বাচ্চারা, মেয়েরা। অরঙ্গাবাদের নতুন চাঁদরা গ্রামে চিররঞ্জন পাল-এর তোলা ছবি। ১৪ জুন ২০১৫।
রবিবার সাত সকালে বিড়ি বাঁধতে বসেছে বস্তির বাচ্চারা, মেয়েরা। অরঙ্গাবাদের নতুন চাঁদরা গ্রামে চিররঞ্জন পাল-এর তোলা ছবি। ১৪ জুন ২০১৫।

গত মাসে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানা এলাকার ব্রাহ্মণবার গ্রামে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ১৩ জন মারা যায় (বিস্ফোরণের সময় ১২ জন, পরে হাসপাতালে আরও একজন)। মৃতদের মধ্যে ৯ জন (৭ জন কিশোর ও ২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক) ছিল মুর্শিদাবাদের সুতি ব্লক এলাকার অরঙ্গাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন চাঁদরা গ্রামের বাসিন্দা। মুর্শিদাবাদ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার বাজি কারখানায় ১২-১৩ বছরের কিশোর ছেলেরা কীভাবে যায় এবং কেনই বা তারা এ ধরনের ঝুঁকির কাজে গিয়েছিল তা জানতে আমরা যাই মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনের থেকে মিনিট দশেকের হাঁটা পথে নতুন চাঁদরা গ্রামে। ভোরের আগেই পৌঁছে যাওয়ায় আমরা সকাল সকাল মসজিদে হাত-মুখ ধুয়ে নিয়ে স্থানীয় রাকিন শেখের সাথে পৌঁছাই নতুন চাঁদরা গ্রামে।
প্রথমেই আমরা যাই মৃত কিশোর ১২ বছরের রফিকুল শেখের বাড়ি। রফিকুলের বাবা, মা ও চাচিই মূলত যা বললেন তা হল — নতুন চাঁদরা গ্রামে তারা প্রায় ৪৫ বছর ধরে বাস করছে।  আগে এই গ্রামের অনেকেই থাকত গঙ্গার ধারে দারিয়াপুরে।  রফিকুলের বাবার জন্ম এখানে নয়, বড়ো রাস্তার উদ্বাস্তু শিবিরে। তারা পরে রেলের এই খাস জমিতে এসে বসে। বছর খানেক আগে তার পাট্টাও পেয়েছে। মূলত এই গ্রামটা তৈরিই হয়েছে ফরাক্কা বাঁধ তৈরি হওয়াতে যে গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়, তারই সূত্রে বাস্তুচ্যুত হয়ে পরিবারগুলি এখানে চলে আসে। ওখানেও তাদের চাষের কোনো জমি ছিল না। মূলত ওখানে বিড়ি বাঁধার কাজই করত। এই নতুন চাঁদরা গ্রামের আশে পাশে কোনো চাষের জমিই নেই, গ্রামের পুরুষদের অধিকাংশই জোগালের কাজ বা রাজমিস্ত্রির কাজ করে, আর পরিবারের মহিলারা করে বিড়ি বাঁধার কাজ। মুন্সির মাধ্যমে তারা বিড়ির বাঁধার কাজ পায়। স্থানীয় নামজাদা পতাকা কোম্পানি ও আরও কয়েকটি ছোটো কোম্পানির (যেমন কল্পনা, শিপ ইত্যাদি) বিড়ি এজেন্টের মাধ্যমে তারা এই কাজ পায়। এই গ্রামে বেশিরভাগই শিপ বিড়ি। ১০০০ বিড়ি বাঁধলে ১০০ টাকা। তবে একশো টাকা পুরো দেয় না। দু বান্ডিল খারাপ হিসাবে ধরে নেওয়া হয় এবং তার জন্য কেউ ৮৫ টাকা কেউ ৯০ টাকা পায়। তবে মেয়েরা সারা দিনে ঘরের কাজ সামলে একেকজন ৫০০-৬০০-র বেশি বিড়ি বাঁধতে পারে না বলে জানায় রফিকুলের চাচি ও মা।

Sorry, your browser doesn’t support HTML5 audio.
সাক্ষাৎপর্বের সম্পূর্ণ অডিও টেপ। সময় ২৯ মিনিট, প্রশ্নকর্তা চিররঞ্জন পাল

রফিকুল ক্লাস ফাইভে পড়ত না সিক্সে তা নিশ্চিত করে বলতে পারল না কেউ। রফিকুলের পিঠোপিঠি এক বোন জানাল, ও সিক্সে পড়ত। রফিকুলের মায়ের বয়ান — ‘ছেলে স্কুলে পড়ছিল, হঠাৎ বাড়ি এসে বলল, মা আমি বিদেশে যাব কাজ করতে। আমি বললাম, বেটা পরীক্ষা আছে পরে যাবি। আগের বছর যেতে চেয়েছিল যেতে দিইনি। কিন্তু পরের দিন সকালে যখন আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম, ও ব্যাগ গুছিয়ে চলে যায়। কাজের কথা বলতে বলতে ও আমাকে বলছিল, চার হাজার টাকা মাসে দেবে। যারা ওকে নিয়ে গিয়েছিল তারাও মরে গেছে একসঙ্গে।’ মায়ের কথায়, ‘ছেলে এই প্রথমবার গেছে, অন্যদের কথা বলতে পারব না। বড়ো কে বা কারা নিয়ে গেছে তা বাড়ির লোক জানে না। বন্ধুরা নিয়ে গেছে, কিন্তু তারা তো কেউ বেঁচে নেই। মা জানালেন, রফিকুল যায় সোমবার, আর মারা যায় বুধবার। ‘আমরা টিভি দেখে জানতে পারি যে আমাদের ছেলেরা মারা গেছে।’
রফিকুলের মা বিড়ি বাঁধে। বাবা মূলত জোগালের কাজ করে, কাজ না হলে সেও বাড়িতে বসে বিড়ি বাঁধে। রফিকুলের বাবা দেখায়, তারা একটুকু জায়গায় পাঁচ ভাই ও তাদের পরিবার মিলে থাকে। সাথে তার অপ্রকৃতিস্থ বোন ও অন্ধ মা-ও থাকেন। কোনো বিধবা ভাতা বা বয়স্ক ভাতা পান না। কোনো বিপিএল কার্ডও নেই। রেশন কার্ড কেবল তাদের আছে। ছেলে-মেয়েদের কোনো রেশন কার্ড নেই। দু-তিনবার দরখাস্ত করেছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। রফিকুলরা ছিল চার ভাই ও দুই বোন। রফিকুলের ওপরের দাদার বিয়ে হয়ে গেছে, সে মালদায় কাজ করে। ওর এক দিদিরও বিয়ে হয়েছে সতের বছর বয়সে। মেয়ের কোনো ছেলে মেয়ে হয়নি। ‘পরিবারে অভাব, তাই কখন কোনো ভাল পাত্র পাওয়া গেলে অথবা মেয়ে মানুষের বদনামের ভয়ে আমরা বয়স বাড়তেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিই’। তাছাড়া পড়াশুনার খরচও অনেক। সরকারি স্কুলে কোনো পড়াশুনা হয় না। এই যে ছোটো মেয়ে পায়েল খাতুন পড়ে সরকারি মাদ্রাসা স্কুলে, ‘কিছুই শেখেনি’। এখন প্রাইভেট পড়ে মাসে দেড়শো টাকা দিয়ে, ‘ভালো শিখছে’।
ওদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আগে এখানে কোনো বাজি কারখানা ছিল কি না? কিন্তু ওরা জানায় এখানে কোনো বাজি কারখানা ছিল না। আমরা পরে জেনেছি, কথাটা মিথ্যে। রফিকুলের চাচি জানায়, রফিকুলকে রাজমিস্ত্রির কাজ করাবে বলে নিয়ে যায়। মিথ্যে বলে নিয়ে গেছে। মন্ত্রী এসে হাতে হাতে চেক দিয়ে যান বাইরের দালানে বসে। আগে ব্যাঙ্কের বই ছিল না, ওরা কানাডা ব্যাঙ্কের বই করে দেয়। কিন্তু চেক জমা করলেও টাকা ওঠেনি। বাবা বললেন, ‘ম্যানেজারবাবুকে বললাম, টাকা উঠল না কেন? উনি জানালেন, তোমরা টিপ সই দাও, তাই অসুবিধা হচ্ছে। সোমবার যেতে বলেছে, দেখি কী হয়।’ ক্ষতিপূরণের টাকায় কী করবেন, প্রশ্নের উত্তরে বাবা জানালেন, ‘কিছু দান করব আর একটু জমি কিনে রাখব ভেবেছি। ছেলে মেয়ে বড়ো হয়ে থাকবে কোথায়?’ তবে এই পয়সায় পাওয়া যায় জলা জমি। যদিও এখানে এমনি জমির দাম কাঠা প্রতি দু-লক্ষ টাকা। যদিও বাজার এলাকায় পাঁচ লক্ষ। সরকার থেকে জব কার্ড দিয়েছে কিন্তু কাজ পায়নি। কখন-সখন কাজ হলে দেড়শো বা একশো-ষাট টাকা করে পায়। ‘ওই দেখুন ঘরে জল পড়ে, সরকার থেকে কোনো সাহায্য পাই না। এতজন লোক, একটা টিউবওয়েল করে দেয়নি। ভোটের সময় এসে অনেক কিছু বলে দেয়, আর আসে না।’

শিল্প ও বাণিজ্য অভিবাসী শ্রমিক, অরঙ্গাবাদ, নতুন চাঁদরা, পতাকা বিড়ি, পরিযায়ী শ্রমিক, পিংলা বিস্ফোরণ, বাজি কারখানা, বিড়ি শ্রমিক, ব্রাহ্মণবার, মুর্শিদাবাদ, শিশু শ্রমিক

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in