• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

আফজল গুরুর নিজের কথা

February 15, 2013 admin Leave a Comment

২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লির সাংবাদিক বিনোদ কে জোশ সংসদ ভবন আক্রমণের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত দিল্লির তিহার জেলে বন্দি মুহাম্মদ আফজল গুরুর সাক্ষাৎকার নেন। সেই সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ বাংলা অনুবাদ করেছেন শমীক সরকার#

আমি যখন বেড়ে উঠছিলাম, তখন কাশ্মীরে টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। মকবুল ভাটকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। কাশ্মীরের মানুষ ফের একবার ভোটে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য। মুসলিম ইউনাইটেড ফ্রন্ট তৈরি করা হয়েছে অন্তিম সমাধানের সময় কাশ্মীরের মুসলিমদের আশা আকাঙ্খার প্রতিনিধিত্ব করতে চেয়ে। নয়াদিল্লির প্রশাসন এই মুসলিম ইউনাইটেড ফ্রন্টের প্রতি জনসমর্থন দেখে আতঙ্কিত হল। তার ফল, ভোটে আমরা দেখলাম ব্যাপক রিগিং। বিপুল ভোটে জেতা নেতাদের গ্রেপ্তার করে, অত্যাচার করে জেলে পুরে দেওয়া হল। তারপরই এই নেতারা সশস্ত্র সংগ্রামের ডাক দেয়। এর প্রত্যুত্তরে হাজার হাজার যুবক অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। আমি শ্রীনগরের ঝিলম ভ্যালি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পড়া ছেড়ে দিলাম। অনেকের মতো আমিও একজন জেকেএলএফ সদস্য হিসেবে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের দিকের কাশ্মীরে চলে গেছিলাম। কিন্তু দ্রুতই আমার স্বপ্নভঙ্গ হল, যখন দেখলাম ভারতের রাজনীতিকরা কাশ্মীরিদের নিয়ে যা করে, পাকিস্তানি রাজনীতিকরাও তাই করছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আমি ফিরে এলাম এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করলাম। বিএসএফ আমাকে একটা আত্মসমর্পনকারী জঙ্গির শংসাপত্র দিল। আমি আবার নতুন করে জীবন শুরু করলাম। ডাক্তার হতে পারলাম না বটে, কিন্তু কমিশন নিয়ে ওষুধ ও শল্যচিকিৎসার যন্ত্রপাতি বিক্রির ব্যবসা শুরু করে দিলাম।
ওই সামান্য রোজগার, কিন্তু তার জোরেই আমি একটা স্কুটার কিনলাম ও বিয়েও করে ফেললাম। কিন্তু এমন একদিনও কাটত না, যে দিন আমাকে রাষ্ট্রীয় রাইফেল আর স্পেশাল টাস্ক ফোর্স জ্বালায়নি। কাশ্মীরের কোথাও যদি কোনো জঙ্গি হামলা হত, তাহলেই সাধারণ কাশ্মীরিদের বেঁধে মেরে চামড়া তুলে দিত ওরা। আর আত্মসমর্পনকারী জঙ্গি হলে তো কথাই নেই। সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে ওরা আমাদের আটকে রাখত, ভয় দেখাত মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেবে বলে, আর মুক্তির বিনিময়ে প্রচুর ঘুষ চাইত। আমাকে অনেকবার এই অত্যাচারের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। ২২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলের মেজর রাম মোহন রায় আমার যৌনাঙ্গে ইলেকট্রিক শক দিয়েছে। আমাকে অনেকবার ওদের পেচ্ছাপ পায়খানা পরিষ্কার করতে হয়েছে এবং ওদের ক্যাম্প ঝাঁট দিতে হয়েছে। একবার হুমহামা অত্যাচার ক্যাম্প থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য আমার সর্বস্ব দিতে হয়েছিল। ডিএসপি বিনয় গুপ্তা আর ডিএসপি দেবীন্দর সিং এই অত্যাচার পর্ব দেখভাল করত। ওদের একজন অত্যাচার বিশেষজ্ঞ ইনসপেক্টর শান্তি সিং আমাকে তিনঘন্টা ধরে ইলেকট্রিক শক দিয়েছিল যতক্ষণ না আমি ওদের এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে সম্মত হই। আমার বউ তার গয়না বিক্রি করে দিয়েছিল, আর ওরা আমার স্কুটারটা বিক্রি করে দিয়েছিল। জেল থেকে আমি বেরিয়েছিলাম অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে। ছয় মাস ধরে আমি ঘরের বাইরে বেরোতে পারিনি, শরীরে কোনো শক্তি ছিল না। আমি এমনকী আমার বউয়ের সঙ্গে শুতে পর্যন্ত পারতাম না, কারণ আমার যৌনাঙ্গে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসা করিয়ে আমার যৌন ক্ষমতা ফেরাতে হয়েছিল …।
এসটিএফ ক্যাম্প থেকে আমি শিক্ষা পেয়েছিলাম, হয় এসটিএফ-এর সাথে অন্ধভাবে সহযোগিতা কর, আর যদি প্রতিরোধ করো তাহলে তোমার ও তোমার পরিবারের লোকেদের জন্য রোজ বরাদ্দ থাকবে লাঞ্ছনা। ফলে ডিএসপি দেবীন্দর সিং যখন আমাকে তার খাতিরে একটা ছোটো কাজ করতে বলল, আমি না করতে পারিনি। সে ঠিক এই কথাটাই আমাকে বলেছিল, ণ্ণএকটা ছোটো কাজ’। সে আমাকে বলল, একটা লোককে দিল্লি নিয়ে যেতে হবে। দিল্লিতে তাকে একটা ভাড়াবাড়ি খুঁজে দিতে হবে। আমি তাকে সেই প্রথমবারের জন্য দেখেছিলাম, সে কাশ্মীরিতে কথা বলছিল না, তাই আমি ভেবেছিলাম, সে বহিরাগত। তার নাম বলেছিল মোহাম্মদ (পুলিশ পরে বলেছিল, মোহাম্মদই সেই লোক, যে সংসদ আক্রমণ করা পাঁচজনের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। তারা সবাই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মারা যায়)।
যখন আমরা দিল্লিতে ছিলাম, দেবীন্দর সিং আমাকে আর মোহাম্মদকে ফোন করত। আমি আরও লক্ষ্য করেছিলাম, মোহাম্মদ দিল্লিতে অনেক লোকের সঙ্গে দেখা করছে। সে একটা গাড়ি কেনার পর আমাকে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে বলেছিল এটা উপহার, এবার আমি ফিরে যেতে পারি। এবং আমি কাশ্মীর ফিরলাম ঈদ উপলক্ষে।
আমি যখন সোপোরে ফেরার পথে শ্রীনগর বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছি, আমাকে গ্রেফতার করে পারিমপোরা থানায় নিয়ে যাওয়া হল। ওরা আমাকে অত্যাচার করল, তারপর এসটিএফ-এর সদর দফতর হয়ে দিল্লি নিয়ে গেল। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল-এর অত্যাচার কক্ষে আমি তাদেরকে মোহাম্মদ সম্পর্কে যা জানতাম বলে দিলাম। কিন্তু ওরা আমাকে জোর করল, আমি যেন বলি আমার তুতো ভাই শওকত, তার বউ নভজোত, এসএআর গিলানি এবং আমি মিলে সংসদ হামলার পরিকল্পনা করেছি। ওরা আমাকে বলেছিল এই কথাগুলি আমি যেন মিডিয়ার সামনে বিশ্বাসযোগ্যভাবে বলি। আমি প্রতিবাদ করলাম। কিন্তু ওরা আমাকে বলল, আমার পরিবার ওদের হেফাজতে আছে এবং আমি না মানলে ওরা তাদের মেরে ফেলবে, ফলে ওদের চাপের কাছে নতিস্বীকার করা ছাড়া আমার উপায় ছিল না। আমাকে দিয়ে অনেক কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হল, আমাকে মিডিয়ার সামনে ওদের শেখানো কথা বলতে বাধ্য করা হল। যখন একজন সাংবাদিক আমাকে এসএআর গিলানির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করলেন, আমি বললাম, এসএআর গিলানি নির্দোষ। এসিপি রাজবীর সিং আমার দিকে তাকিয়ে চিৎকার করল ঘরভর্তি মিডিয়ার সামনে, আমি যা শেখানো হয়েছিল তার বাইরে বলে ফেলেছিলাম। ওরা বেশ হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল আমি গল্পের বাইরে চলে যাওয়ায়। রাজবীর সিং সাংবাদিকদের অনুরোধ করল, আমি গিলানি নির্দোষ বলে যেখানে বলেছি, সেই অংশটা সম্প্রচার না করতে।
রাজবীর সিং পরদিন আমাকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে দিয়েছিল। ফোনে কথা বলা শেষ হয়ে যাবার পর আমায় বলেছিল রাজবীর, আমি যদি তাদের সঙ্গে সহযোগিতা না করি, তাহলে ওদের শেষ করে দেওয়া হবে। আমার অভিযোগ মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না এবং স্পেশাল সেল-এর অফিসাররা আশ্বাস দিয়েছিল, আমার কেসটা যথাসম্ভব হালকা করে দেওয়া হবে, যাতে আমি কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে যাই। তারপর ওরা আমাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকল, মোহাম্মদ যে বাজার থেকে কেনাকাটা করত, সেখানেও নিয়ে গেল। এভাবেই তারা প্রমাণ জোগাড় করল।
পুলিশ আমাকে বলির পাঁঠা করল, সংসদ হামলার চক্রীদের হদিশ পেতে তাদের ব্যর্থতা চাপা দেওয়ার জন্য। ওরা লোককে বোকা বানিয়েছে। এখনও লোকে জানে না, সংসদ হামলা কার মস্তিষ্কপ্রসূত। আমাকে এই মামলার ফাঁদে ফেলে দিয়েছিল কাশ্মীরের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স, আর ফাঁসিয়ে দিল দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। মিডিয়া নিরন্তর আমার টেপ বাজিয়ে গেল। পুলিশ অফিসাররা পুরস্কার পেল। আমার মৃত্যুদণ্ড হল।

মানবাধিকার আত্মসমর্পনকারী, আফজল গুরু, কাশ্মীর, জঙ্গী, ফাঁসি, সংসদ হামলা

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in