জিতেন নন্দী, আকড়া, ১৫ জুলাই#
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা শহরে এবং তিনদিন পর ৯ আগস্ট নাগাসাকি শহরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু বোমা বর্ষণ করে। সেই বিস্ফোরণের দিনই হিরোশিমার আড়াই লক্ষ এবং নাগাসাকির সত্তর হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়, আজ পর্যন্ত হিরোশিমা ও নাগাসাকির বিস্ফোরণের ভয়াবহ ফলাফল বয়ে বেড়াচ্ছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ব্যাপী জাপান তথা বিশ্বের মানুষ। এরপর আমেরিকা ছাড়া আরও বহু রাষ্ট্র পরমাণু বোমা তৈরি করেছে; বহু দেশে মাটির নিচে এবং মাটির ওপরে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। দেশে দেশে শান্তির আবেদনকে অগ্রাহ্য করেছে অবুঝ রাষ্ট্রশক্তি। যে জাপানে হিরোশিমা-নাগাসাকির মতো ঘটনা ঘটেছিল, সেখানেই বিদ্যুৎ তৈরি করার জন্য একের পর এক মোট ৫৪টা পরমাণু চুল্লি তৈরি করা হয়েছে। ১১ মার্চ ২০১১ এই পরমাণু উন্মাদনার ওপর প্রবল আঘাত আসে। প্রবল ভূমিকম্প ও সুনামির সঙ্গে সঙ্গে জাপানের ফুকুশিমায় সাঙ্ঘাতিক পরমাণু বিপর্যয় ঘটে। এই ঘটনায় দারুণ বিপর্যস্ত জাপানের আপামর মানুষ আজ পরমাণু শক্তি থেকে অব্যাহতি চাইছে।
আমাদের দেশেও রয়েছে পরমাণু বোমা এবং পরমাণু বিদ্যুৎ তৈরির কর্মসূচি। ফুকুশিমা পরমাণু বিপর্যয়ের পর যখন সারা পৃথিবী পরমাণু শক্তির হাত থেকে মুক্তি চাইছে, তখন তামিলনাড়ুর কুডানকুলাম সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন পরমাণু কেন্দ্র তৈরি করার আয়োজন চলছে।
এই পরিস্থিতিতে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের জানা দরকার, পরমাণু শক্তি কী? তার যে অদৃশ্য রশ্মির বিকিরণ, আমাদের ওপর তার কী প্রভাব? আমরা প্রতিদিন যে মোবাইল ফোন, টিভি, এফএম রেডিও ইত্যাদি ব্যবহার করি, সেই সূত্রে আর কী কী ধরনের অদৃশ্য রশ্মির বিকিরণের প্রভাব আমাদের ওপর রয়েছে?
১৪ জুলাই ২০১২ শনিবার মহেশতলা অঞ্চলের আকড়া হাই মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীদের দুটি ক্লাস নেন বিজ্ঞানী শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় দুশো জন ছাত্রছাত্রী এতে অংশগ্রহণ করে। সমস্ত ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকদের যথেষ্ট আন্তরিকতার ছাপ ছিল। বিশেষ করে মোবাইল সংক্রান্ত মাইক্রোওয়েভ রশ্মির বিকিরণ নিয়ে আলোচনাটি ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের মধ্যে ছাপ ফেলে। প্রশ্নোত্তর পর্বের পরেও ছাত্ররা এগিয়ে এসে শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের কাছে নানা প্রশ্ন করে।
Leave a Reply