ইন্দ্রজিৎ দাস, লিলুয়া, ২৬ জুন#
রবিবার সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরছিলাম। পদ্মপুকুর জলের ট্যাঙ্ক হয়ে আমি কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে উঠি। অন্ধকারে একটা গাড়ি আমাকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। আমি বাঁদিকে পড়ে যাই। দু–হাঁটু আর দু–হাতে চোট লাগে। রাস্তায় ধূলোবালি ছিল, চামড়া ছিলে যায়, পাথরে চোট লাগে মুখে। আমি ওই অবস্থায় সাইকেলটা তুলে নিয়ে ১৫–২০ মিনিট সাইকেল চালিয়ে দাশনগর হয়ে লিলুয়ায় পৌঁছাই। লিলুয়া চকপাড়ায় আমার বাড়ি। রাত দশটা নাগাদ ঘরে পৌঁছাই। পরদিন ওখানে ডাক্তার দেখাই। তিনি হাতে আর হাঁটুতে ব্যান্ডেজ করে দেন।
আমি পেপার বিক্রি করি। ভোর পৌনে চারটেয় ঘর থেকে বেরিয়ে ধর্মতলায় এজেন্টের কাছে খবরের কাগজ আনতে যাই। সোমবার আর যেতে পারিনি। অন্যদের খবর দিই। সোমবার আমার লাইনে অনেকে পেপার পায়নি। আমার পেপারের লাইন হল বাঁধাবটতলা হয়ে মেটিয়াবুরুজের ওপর দিয়ে হাজিরতন, ঘোষপাড়া আর রবীন্দ্রনগরে। আমার মামাবাড়ি মেটিয়াবুরুজ বাঁধাবটতলায়। ওখানে বেশিরভাগ দিন দিদার কাছে দুপুরে খেয়ে নিই। কোনো কোনো দিন ওখানে থেকেও যাই। কিন্তু বেশিরভাগ দিন বাড়ি ফিরতেই হয়। ঘরে মা আছে, ঠাকুমা অসুস্থ, বাবা বাইরে থাকে। ফেরার সময় আমি বিচালিঘাট থেকে লঞ্চ পার হয়ে বকুলতলায় আসি। ওখান থেকে পদ্মপুকুর জলের ট্যাঙ্ক হয়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে লিলুয়ায় যাই।
পেপারওয়ালাদের প্রায়ই অ্যাক্সিডেন্ট হচ্ছে। এই তো সপ্তাহ দুয়েক আগে খিদিরপুরে দুজন পেপারওয়ালার অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। খিদিরপুর মাজারের আগে ট্যাক্সি পার্কিং করে রেখে দেয়। ওরা যখন তখন গেট খুলে দেয়, দেখে না পিছনে কী আছে।
বছর খানেক আগে সকাল সাতটার সময় ফতেপুরে (মেটিয়াবুরুজ) আমায় ট্যাক্সিতে ধাক্কা মেরেছিল। একটা লোক ট্যাক্সি ধোয়, সে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল। ট্যাক্সিওয়ালারা আমায় হেল্প করেছিল, আমি রামনগর মোড়ে পুলিশের কাছে ডায়েরি করেছিলাম। ট্যাক্সিওয়ালা আমাকে পেপার আর সাইকেলের ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল সাতশো টাকার মতো।
আমাদের তো উপায় নেই। সাইকেল চালাতেই হবে। গাড়িভাড়া দিতে গেলে পেট চলবে না। কলকাতায় পেপারওয়ালা আর মাছওয়ালাদের পুলিশ কিছুটা ছাড় দেয়। ক–দিন বেরোতে পারছি না। দেখি, শুক্র–শনিবার নাগাদ আবার বেরোতে হবে।
Leave a Reply