শমিত, শান্তিপুর, ২৭ জুলাই##
শান্তিপুর পৌর অঞ্চলে অন্তত দশটি পুকুর ও জলাভূমি ধ্বংসের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে রয়েছে শান্তিপুর পুরসভা। জলাভূমি রক্ষা ১৯৮৪ অ্যাক্ট এবং সংশোধিত ইনল্যান্ড ফিশারি ১৯৯৩, ১৭-এ ধারার কোনো প্রকার গুরুত্ব না দিয়েই পৌর অঞ্চলের মধ্যেই পুকুর ও জলাভূমি বুজিয়ে চলেছে পুরসভা। জলাভূমিগুলি বোজানো হচ্ছে শান্তিপুর পুরসভার আবর্জনা বহনকারী গাড়ির সাহায্যেই। পুরসভার আবর্জনা বহনকারী গাড়ি দিয়েই মাটি ও আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। প্রোমোটারি কোনো দুষ্টচক্র এর পিছনে মদত দিচ্ছে।
যে যে পুকুরগুলি ভরাটের অভিযোগ এসেছে তাদের একটি হল পুরসভার ভবনের কয়েক গজের মধ্যেই। তার নাম ণ্ণপোদ্দার পুকুর’। অন্যান্য জলাভূমিগুলি হল দত্তপাড়ার ণ্ণরায় পুকুর’, সর্বানদী পাড়ার ণ্ণসাহা পুকুর’, কবি করুণানিধান স্ট্রীটে ণ্ণচ্যাটার্জী পুকুর’, ণ্ণবোকা পুকুর’, অদ্বৈত সড়কে ণ্ণচৌধুরী পুকুর’, ণ্ণকালাচাঁদ পুকুর’, ৬নং ওয়ার্ডে ণ্ণসেন পুকুর’, বড়ো গোস্বামী পাড়ার গোস্বামীদের একটি পুকুর। এছাড়াও শান্তিপুর খালপাড় অঞ্চলের অনেকগুলি জলাশয়ের প্রায় ৫০% ওপর মাটি ও জঞ্জাল ফেলে বুজিয়ে দেওয়ার ধীর চেষ্টা চলছে। এগুলির কোনো জায়গাতেই শান্তিপুর পুরসভার পক্ষ থেকে কোনো আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উপরন্তু পুরসভা প্রোমোটারদের স্বার্থেই কাজ করে চলেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।
শান্তিপুর বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ সমিতি শান্তিপুরের জলাভূমি ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে শান্তিপুর থানায় এফআইআর দায়ের করে (কেস নং ৩৯৩/২); ৩৪৩, ৩২৩ ও ২০৬ ধারা মোতাবেক ১৯.০৬.২০১২ তারিখে এই অভিযোগ জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুকুর ও জলাভূমি বোজানোর পাশাপাশি শান্তিপুর পৌরসভার মধ্যে বিভিন্ন স্থানে অবাধে গাছ কাটাও চলছে। বহুবার পুরসভাকে জানিয়েও পুরসভার তরফে নিষ্ক্রিয়তাই চোখে পড়ছে। WBLP অ্যাক্ট সেকশন ৪ডি অনুযায়ী এদের জেল ও জরিমানা হওয়ার কথা। কিন্তু পুরসভার তরফে প্রোমোটারি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না। অথচ প্রতি বছর শান্তিপুর পুরসভার পক্ষ থেকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পদযাত্রার আয়োজন করে জলাভূমি ও জলাশয় রক্ষার কথা ফলাও করে প্রচার করা হয়। পরিবেশ দিবসে পুরসভার তরফে তোলা ওই শ্লোগানগুলি যে কতটা ভাঁওতা তা শান্তিপুর পুরসভার কাজকর্ম দেখে সহজেই অনুমেয়।
Leave a Reply