• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

যৌথ ভাবনার বিকাশে পুরুলিয়ার বিরহড় জনগোষ্ঠীর সাথে নানারকম উদ্যোগে সামিল হওয়ার দু’চার কাহন

July 22, 2020 admin Leave a Comment

সংবাদমন্থন প্রতিবেদন। ২২ জুলাই, ২০২০। #

লেখাপড়ার জগতে বিরহড় ছেলেমেয়েদের এগিয়ে আসার ইতিহাস বললেন জলধর কর্মকার

বিরহড় কন্যা জবা শিকারি, জানকী শিকারি দের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্যের কথা আনন্দবাজার পত্রিকার পাতায় ছাপা অক্ষরে দেখে মনটা ভরে গেল । আর একই সাথে মনে পড়ল কিছু পুরনো স্মৃতি । জবা,জানকী, রত্নি রা মেয়েদের মধ্যে প্রথম মাধ্যমিকের গন্ডি ডিঙিয়েছে অবশ্যই তারা আমাদের স্বপ্ন । ছেলেদের মধ্যে এই বিরহড় ডেরা থেকে বহু আগেই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে কাঞ্চন শিকারি ও সীতারাম শিকারি । ভারতের আদিমতম আদিবাসী (primitive Tribes), যারা একসময় ছিলেন সম্পূর্ণ জঙ্গল নির্ভর তাদেরকে লেখাপড়ার জগতে আনার পেছনে ধসকা পন্ডিত রঘুনাথ আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ের এবং এই আবাসিক বিদ্যালয় গড়ার প্রথম যুগের কারিগররা নমস্য । ধসকার আদিবাসীদের বিনাপয়সায় দান করা জমিতে ২০০৩ সালে আমরা প্রথম শুরু করি এই স্কুল । বি.এ. , এম.এ. পাশ এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক অনাদি মাহাতো, মনোরঞ্জন, রামরঞ্জন, রাম,মালতি, তনুজা প্রমুখ রা এগিয়ে এসেছিলেন শিক্ষা দানের কাজে, বিনা বেতনে । বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক দুখুরাম ওরাঁও, সভাপতি জাগরী মাঝি এবং উপদেষ্টা মন্ডলীর প্রধান প্রয়াত নকুল মাহাতো সাথে ধসকার গ্রাম বাসী বৃন্দ সবার হাড়ভাঙা খাটুনির ফসল ছিল এই স্কুল । সরকারের অনুমোদন আমরা পেয়েছি 2008 সালে । ঐ চার পাঁচ বছর আমাদের কাজ ছিল ২৪৪ জন আবাসিকের দুবেলা খাবার যোগাড় করা এবং নতুন নতুন ছেলে মেয়েকে এনে ঐ স্কুলে ভর্তি করা । ঐ দুর্দিনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আমাদের জেলার বহু শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি । তাঁদের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য ছিলেন মাঝিহিড়া আশ্রমের মাণিক দাশগুপ্ত, ডাক্তার পার্থ বাবু, নটনদা’, অত্রিদা’ আরও অনেকে । বিরহড় ডেরায় গিয়ে ওদের কে বুঝিয়ে তখন আমরা একরকম জোর করেই ওদের ছেলে মেয়েকে এনে এই স্কুলে ভর্তি করে আবাসিক ভাবে রাখতাম, দুবেলা কোচিং করাতাম । এর বহু পরে এস. এস. সি. থেকে আমরা স্থায়ী পদে শিক্ষক, শিক্ষিকা পেতে থাকি । নকুল বাবুর অদম্য জেদ এবং অনুপ্রেরণা সেদিন আমাদের সাহায্য করেছিল এই সম্পূর্ণ আদিবাসী ও দুর্গম এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালানোর কাজে ।বর্তমানে বান্দোয়ান, অযোধ্যা সহ বহু পশ্চাদপদ এলাকার ছেলে মেয়েরা এখানে আবাসিক ভাবে থেকে পড়াশোনা করে । আমাদের হাজার হাজার জবা, জানকী, রত্নি, সোমবারী, গুরুবারী, হপন, হেমালরা আলোর পথে এগিয়ে যাক্, এটাই আমাদের গর্ব।

উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ জানকী শিকারিকে শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন দুই দাদা। সুনীত মহান্তির ফেসবুক ওয়াল থেকে পাওয়া ছবি।

বিরহড়দের বেড়সা গ্রামে ‘টিম মৈত্রেয়’ এর একবছরের কান্ডকারখানা জানালেন কৃশানু মিত্র

২০শে জুলাই ২০২০, ঠিক একবছর হল পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকের বিরহড়দের গ্রাম বেড়সায় যাওয়ার। বিরহড়দের নিয়ে কিছুটা পড়াশোনা করার পর জুন মাস থেকে নিজের পায়ে হেঁটে ঘুরতে শুরু করে সপ্তর্ষিদা, অর্কেন্দুদা পুরুলিয়ার ব্লকে ব্লকে, যেখানে বিরহড় বসতি আছে, চেনা পরিচিতি বলতে কেউ নেই। একদিন সেভাবেই পৌঁছে যাওয়া বলরামপুর বাস স্ট্যান্ডে, যেখানে কাউকে চেনেনা, ফোনে একবার কথা হয় সুজিতদা’র (কুন্ডু) সাথে, দীপেনদা’ (গুপ্ত) মারফৎ, ওইটুকুই। গিয়ে দেখা করে সপ্তর্ষিদা’, সুজিতদা’র সাথে, সাথে ছিল অভিজ্ঞান, অনুপমা। পুরুলিয়া অবধি বাসে এসে অনুপমার বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে সোজা বলরামপুর বাসস্ট্যান্ড। সুজিতদার সাথে দেখা হতেই চা খেতে খেতে বাস স্ট্যান্ডে আলাপ হয় অমলেশদা’র (কুমার) সাথে, পরিচয় হয়। সেদিন সুজিতদা’ বেড়সা অবধি না যেতে পারলেও সাথে পাঠিয়েছিল অমলেশদা’কে, এভাবেই অমলেশদা’র মত মানুষকে একপ্রকার চায়ের দোকান থেকে কুড়িয়ে পায়। যাওয়া হয় বেড়সা। বেড়সা পৌঁছে আগে যোগাযোগ করা শুরু হয়। বাচ্চাদের জন্য সাথে ছিল কিছু চকোলেট। বেড়সার সবার ভাষা বিরহড়ি, আমার বাংলা। আমি বাংলা, হিন্দি, ইংরাজিতে কথা বলতে জানি, অথচ সাঁওতালি বা বিরহড়ি জানিনা, কিন্তু ওঁরা আদিবাসী হয়েও আমার সাথে বাংলায় কমিউনিকেট করে গেলেন! আর আমরা বড়াই করি ‘ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ’ নিয়ে, আমার মাটির একজন আদিবাসী তার নিজের ভাষা ছেড়ে আমার জন্য ‘ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ’ বাংলায় কথা বলছেন, আমি নিজের শিক্ষাগত পরিচয় দেওয়ার সাহস দেখাইনি। আজও ওঁরা কেউ জানেননা আমি কী করি, কী নিয়ে পড়াশোনা। আসলে আমি কিছুই জানিনা, ওঁরাও সেটা জানেন, জানেন বলেই আজ একই গামছায় আমি আর গোপাল শিকারি স্নান করতে পারি বাঁধের জলে, ছাই দিয়ে একসাথে বাসন মাজতে পারি, একসাথে কোদাল চালানো শিখতে পারি। সেদিন দরজায় ঘুরে ঘুরে সার্ভে করেছিলাম, কতজন আছেন। তাদের যাবতীয় ডিটেইলস সংগ্রহ করেছিলাম নিজের হাতে। আর বলেছিলাম ”চেষ্টা করে দেখি আবার ফিরে এসে কিছু করতে পারি কিনা তোমাদের জন্য”।

দিব্যজ্যোতি মজুমদারের লেখা ‘পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী লোককথা’ থেকে তথ্যগুলি সংগৃহীত

বছর ঘোরার পর, ২১শে জুলাই ২০২০, যা যা বদল ঘটল

১. বেড়সায় ইতিমধ্যে সবার পাট্টার জমির ডিমার্কেশন করে বেড়া দিয়ে আগাছার জঙ্গল পরিষ্কার করে মাটি পরিষ্কার করে রবি ও খারিফ মিলিয়ে মোট ২২ রকমের সবজীর চাষ করা গেছে এবং যৌথখামারের নীতিতে তার বন্টন সম্ভব হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে যৌথ ভাবনার বিকাশ যেমন ঘটছে তেমনই নিজেদের খাওয়া দাওয়া সুনিশ্চিত হয়েছে।

২. সকলে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন, বাচ্চারা নিয়মিত হাত ধোয়, চটি পরে, পায়খানা ব্যবহার করে। কৃমি হওয়া অনেকটা কমেছে। গ্রামের কারও প্রাথমিক শারীরিক সমস্যা হলে তার সমাধান এখন গ্রামেই।

৩. সামাজিক স্টিগমা কাটিয়ে সচেতন ভাবে প্রথম বিরহড় শিশু জন্মগ্রহণ করে সরকারি হাসপাতালে। পুরোপুরি সরকারি ব্যবস্থায়।

৪. স্বাস্থ্য ও কৃষিক্ষেত্রে সরকারি বেশকিছু সাহায্য ও সাহায্যের আশ্বাস মিলেছে।

৫. গ্রামে ক্লাসরুমে প্রতিদিন ক্লাস হয়। শিক্ষার প্রতি যাতে আগ্রহ তৈরি হয় সেভাবে ক্লাস নেন আমাদের মাস্টারমশাই। এমনকি পাশের পাড়ার কিছু সাঁওতাল শিশুও পড়তে আসে, শিক্ষা সবার জন্য, সেখানে কোন বেড়াজাল নেই।

৬. বাংলা, ইংরাজি, অঙ্কের পাশাপাশি শেখানো হয় অলচিকি হরফ। যা সরকার স্বীকৃত একমাত্র আদিবাসী হরফ। সবার আগে মাতৃভাষা তারপর অন্যকিছু। তাই বিদ্যাসাগরের বাংলা বর্ণপরিচয়ের আগে ঘটানো হয় পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর অলচিকি বর্ন পরিচয়। বাংলাটা তারপর।

৭. পড়াশোনার পাশাপাশি চলে চাষ করার শিক্ষা, লাঙল চালানো, কোদাল চালানোর শিক্ষা, ব্যায়াম, গান শেখা।

৮. গ্রামের সব ক্যাপ্টেন দিদিদের নিয়ে গড়া হয়েছে একটা যৌথ গোষ্ঠীর, যার আওতায় যৌথ কৃষিকাজ ছাড়াও আরও কিছু যৌথকাজের পরিকল্পনা রয়েছে। যেমন ইতিমধ্যেই সরকার থেকে ব্লকের মাধ্যমে জোগাড় হয়েছে শাল পাতার থালা বানানোর মেশিনের, এবার শুরু হবে উৎপাদন। বাকি পরিকল্পনাও জানাবো।

৯. স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করা গেছে একজন বোনের। ধারাবাহিকভাবে বিরহড়দের নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে, আজ থেকে ১০ মাস আগে, যার মধ্যে ৫ মাস লকডাউন। তবুও কাজ থেমে নেই। স্থানীয় প্রশাসন, বলরামপুরের স্থানীয় মানুষ, কলকাতা ও শহরতলী থেকে আমাদের মত তরুণ তরুণীরা মিলে একটা ফাটাফাটি টিম তৈরি হয়েছে, যার জন্যই এতকিছু সম্ভব হয়েছে মাত্র পাঁচ মাসে, বন্ধুর মত সবাই মিলেমিশে। ঠিক একই সাথে জানিয়ে রাখি আজ থেকে এই বন্ধুত্বের জোরে গড়ে ওঠা বিরহড়দের এই টিমের নাম ‘মৈত্রেয়’ বা বন্ধু স্থানীয়। রাস্তাই বন্ধু চিনিয়ে দেয়, মানুষ জুটিয়ে দেয়, বন্ধুই পারে বন্ধুর হাত ধরে চলতে, সমস্যায় কাঁধে হাত রাখতে। সেই বোধ থেকেই আমাদের মাস্টারমশাই পারেন একই সাথে অঙ্ক করাতে, অলচিকি পড়াতে এবং জমিতে কোদাল চালাতে। তাই আজ থেকে আমরা সব্বাই ‘মৈত্রেয়’।

সংস্কৃতি অলচিকি, উচ্চমাধ্যমিক, পুরুরুলিয়া, বলরামপুর, বিরহড়, বেড়সা, রঘুনাথ মুর্মু

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in