• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

মদেশীয় নেপালে ‘গাড়িমাই মেলা’

December 10, 2014 admin Leave a Comment

নেপালের বারিয়াপুর-এ (ভারত সংলগ্ন এলাকা) নভেম্বর মাসের শেষের দিকে হয় ‘গাড়িমাই মেলা’। এই মেলায় মোষ, ছাগল থেকে শুরু করে পাখি বলি দেওয়ার রেওয়াজ। কর্মসূত্রে নেপালে যাতায়াত অলকেশ মণ্ডলের, তাঁর অনভ্যস্ত চোখে এই বীভৎসতার আংশিক বর্ণনা, ২৯ নভেম্বর#

কলেয়া থেকে বারিয়াপুর দশ কিমি যেতে পার করতে হয় পাসাহা নদী। ছবি প্রতিবেদকের।
কলেয়া থেকে বারিয়াপুর দশ কিমি যেতে পার করতে হয় পাসাহা নদী। ছবি প্রতিবেদকের।

বিহারের ওই ভাগলপুর, ওখান থেকে যেতে হয় নেপালের বীরগঞ্জ। সেখান থেকে ২০ কিমি কলেয়া, কলেয়া পর্যন্ত বাস যাচ্ছে কিন্তু তারপরে আর যাওয়ার উপায় নেই। কারণ এত ভিড় এবং এত প্রাইভেট গাড়ি, ট্রেকার, ট্রাক্টর, ট্রাক্টরের পেছনে যে ডালা সেখানে বসে লোক যাচ্ছে। একদম হাঁড়ি-কড়া, শীতের জামাকাপড়, বাসনপত্র সব নিয়ে যাচ্ছে কারণ সেখানে বলি দেবে, দিয়ে তার মাংস খাবে, খেয়ে তারপর আসবে। এটাই বেশিরভাগ লোকের উদ্দেশ্য। তারপরও অনেক লোক এমনিই যাচ্ছে।
সকালে বাসে উঠে দেখি প্রচণ্ড ভিড়, শুক্র আর শনিবার (২৮ আর ২৯ নভেম্বর) ছিল বলির দিন। এমনও অভিজ্ঞতা বাসে এক ভদ্রমহিলা যিনি প্রায় ৬০ বছরের কাছাকাছি, তিনি বলছেন যে আমরা সুগলি থেকে হেঁটে আসছি। সুগলি সম্ভবত ৩০ কিমি হবে রকসল থেকে এবং বেশিরভাগই আমরা যাদের জিজ্ঞাসা করছি কোথা থেকে আসছেন, বেশিরভাগই ভারত থেকে — নেপালের মূল বাসিন্দা খুব কম। নেপালের যারা মদেশীয় এবং ভারতে নেপালের সাথে যাদের সম্পর্ক তারাই বেশি উৎসাহী।
২০ কিমি হাঁটতে হয়েছে। হাঁটতে বাধ্য, উপায় নেই। যাদের গাড়ি আছে, প্রাইভেট হোক বা ভাড়া, ফিরে আসারও উপায় নেই। কারণ কয়েক কিলোমিটার গাড়ির লাইন পড়ে গিয়েছে। আর এখানে তো ট্রাফিক রুল মানা হয় না বললেই হয়। এরকম অসুবিধের শেষ নেই। মানে অ্যাম্বুলেন্সেও যদি যাওয়ার চেষ্টা করে যাওয়ার পথ নেই। একদম প্রত্যন্ত গ্রামে একটা রাস্তা বেরিয়ে গিয়েছে, তার পাশে এই মন্দির। আমরা যারা গিয়েছিলাম, উল্টোদিকেও দেখলাম মাঠঘাট ছাপিয়ে লোকজন আসছে। ওখানে থাকলে কিছুটা অনুভব  করা যাবে এই ধরনের ব্যাপার।
ওখানে উল্লেখযোগ্য হল যে মন্দিরে পুজো দেওয়া হবে এই ব্যাপারটাই নেই। মানুষ যেখানে সেখানে ধূপ জ্বালাচ্ছে, একটু চাল নকুলদানা এসব পুজোর উপকরণ বিক্রি হচ্ছে। সেসব নিয়ে মন্দিরে প্রবেশের কোনো ব্যাপার নেই। ভিড়ের মধ্যে যেমনভাবে হয় মানে খেলার মাঠে বা অন্য কোনো জায়গায়, একদম গাদাগাদি করে লোক ঢুকছে আর বেরোচ্ছে। ওই হয়ে গেল, ওর মধ্যেই দর্শন। আর কেউই দর্শন করছে বলে আমাদের অভিজ্ঞতায় পেলাম না। ওখানে ওই পুকুর আছে ওখানে স্নান করে এবং ওখানে গেলেই কৃপা বা পুণ্য করবে এরকম ধারণা আর কি।
আমরা গিয়ে দেখলাম, একটা নদী পেরোতে হয়। পাসাহা নদী। নদীটা কোনোরকমে পার হলাম। যে মাচা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে সেই মাচাও ভেঙ্গে গিয়েছে, তার ওপর দিয়ে বাইক নিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই জুতো হাতে করে নিয়ে যাচ্ছে দেখলাম। আমরা পার হলাম এবং সেখানেই নদীর পার থেকে মন্দিরের ৫ কি.মি পর্যন্ত মায়ের নামে বলি চড়ে। মায়ের নামে ওখানেই বলি হয়। বলি দিয়ে তারা নিজেরা ফিরে যাচ্ছে। কেউ কেউ বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে কেউ আবার হয়তো ওখানেই রান্না করে খাচ্ছে। এরকমও আছে, ছাগল নদীতে পড়ে আছে, পারের কাছে ভেসে আছে তার মালিক নেই। কারণ ছাগলটা কাটা হয়নি, হয়তো আনার পথে কোথাও চাপে পড়ে মারা গিয়েছিল।
কত বাচ্চা হারাচ্ছে। ছোটো বাচ্চা কাঁদছে, মাইকে তাদের কান্নার আওয়াজ শুনিয়ে কোনোরকমে তাদের নাম বলা, নামও বলতে পারছে না এরকমও আছে, আমি ইয়ার্কি করে বলেছিলাম যাদের বাচ্চা দরকার তারা অনায়াসে এখান থেকে একটা বাচ্চা নিজের বলে চালিয়ে দিতে পারে। এরকম অবস্থা। গল্প অনেক তৈরি হচ্ছে, সেই গল্প কতটা সত্যি জানি না। ভিড়ের চাপ সত্যিই এত যে দোকানপাট ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে এটা আমরা দেখেছি। একজন বলল যে একটা বাচ্চা নাকি তেলে পড়ে গিয়েছে। হওয়াও বিচিত্র না, এরকম অবস্থা। নিয়ন্ত্রণের কোনো বালাই নেই। ইয়াং ছেলেরা নিজেরাই হইহুল্লোড় করে সময় কাটাচ্ছে।
মূল হচ্ছে বলি। যেখানে সেখানে বলি হচ্ছে। পাড়ায় যাতায়াতের পথে, দুটো বাড়ির মাঝখানে যাতায়াতের পথে দাঁড়িয়ে বলি হয়ে গেল। আমরা পশ্চিমবঙ্গে যে হাঁড়িকাঠ দেখি সেসবের বালাই নেই এখানে। কোনো নির্দিষ্ট বলি দেবার লোকেরও দরকার নেই। বলি দেওয়ার জন্যেও লোক মানত করে এখানে। একটা ছেলেকে দেখলাম হাতে খড়্গ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পায়ের নিচে একটা ব্যাগ ,ব্যাগে কি আছে জানি না। তাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘বলি দিতে কত করে নাও?’ সে বলল ‘আমি মানত করেছি ৫ খানা বলি দেব, যারা পাঁঠা নিয়ে এসেছে তাদের বলিটাও দিয়ে দেব’। এরকম দেখা গেছে, পরিবার থেকে এসেছে দুই ভাই, কাটছে আর পাঁঠার মাথাগুলো জমা করছে। তাদের কথা হচ্ছে, বলি দিয়ে দেবে কিন্তু মাথা তাদের দিতে হবে। আমার পাশে দাঁড়িয়েই গল্প করছে একটা পরিবার, ছয়খানা ছাগল আছে তাদের বলি দেবে। কী লাগবে? ৪টে মাথা দিতে হবে। তখন বাড়ির লোকের সাথে পরামর্শ করে ঠিক হল, দুটো মাথা তাদের দিয়ে দেওয়া যাবে। সেখানেই বলি হয়ে গেল।
এই পুজো বাচ্চাদের জীবন সুন্দর করার জন্য, তাই জন্যই বলি। বলি দেওয়ার আগে বাচ্চাকে দিয়ে চাল খাওয়ানো, তার হাত দিয়ে জল দেওয়া, তাকে দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া। বলি হওয়ার পর ওই রক্তে বাচ্চার মাথায় রক্ততিলক লাগিয়ে দেওয়া হয়।
বেশিরভাগ মোষবলি যেখানে হচ্ছে সেটা একটা স্টেডিয়াম। সেখানে অনুমতিপ্রাপ্ত লোকেরাই ঢুকতে পারে। কেউ কেউ বলছিল, ওটা নাকি সরকারি। শক্তসমর্থ লোকেরাই ওখানে যায় আর একবারে বলি দিতে না পারলেও কোনো অসুবিধা নেই। আমাদের সামনেই ভোঁতা খড়্গ নিয়ে একটা মোষের গলায় ৩ বার মারার পরেও কাটল না, তারপর একজন এসে কেটে দিল। কিন্তু দেখলাম মোষ যে কাটল পুরো ধরটা মুণ্ডু থেকে আলাদা হল না। সেটা আবার কেটে দিল আরেকজন। লোকে ছাগল মোষ নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে করতে কারো সাথে কথা হয়ে গেল সেখানেই বলি হয়ে গেল।
বলি ছাড়া আরও কিছু জিনিস আছে। একটা জায়গায় শুনলাম বলা হচ্ছে, সাইকেল খেলা দেখানো হবে। তো আমরা দেখতে পেলাম না। এখানে লোকমুখে শুনেছিলাম এবারের উৎসবের সময় নরেন্দ্র মোদি ছিলেন কাঠমাণ্ডুতে, আর এবারে নাকি নরেন্দ্র মোদি ভারতবর্ষ থেকে পশু আনা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। তবে আমি তার কোনো কিছুই দেখলাম না।
আগের থেকে কি এটা বেড়েছে না একইরকমভাবে চলছে? না এটা বলা আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি আগে দেখিনি। এই মেলা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করাটাই খুব সমস্যাজনক। মেলার বিশালতা এতটাই, এটাকে কেউ একজোট করবে রিপোর্টিংয়ের জন্যে এটাই কঠিন ব্যাপার। একজন মানুষ বা একদল মানুষও একে রিপোর্টিং করার মতো জায়গায় একেবারেই নেই। যার যেটুকু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সে সেখান থেকে বলার চেষ্টা করছে।
মাঠেঘাটে কত ফসল নষ্ট হয়েছে, এরকম প্রচুর উদাহরণ আছে। আলু লাগিয়েছে, পেঁয়াজ লাগিয়েছে। সেখান দিয়ে বাইক যাচ্ছে, মানুষ যাচ্ছে। গ্রাম মাঠের মধ্যে দিয়ে পথ। লোককে যেতেই হবে মেলায়।  কোথা দিয়ে যাবে? ধানখেতের ওপর দিয়ে। মেলায় শৌচালয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। যেখানে সেখানে যত্রতত্র যেমনতেমন ভাবে মানুষ শৌচকর্ম করছে। যারা মেলায় দোকান-টোকান দিচ্ছে, ক-দিনের মেলা ঠিক জানি না, তবে এই মেলা করলে তাদের আর সারা বছর ব্যবসা করতে হবে না। এত জনসমাগম। চাল ডাল তেল সবজি সব, মানে কোনো কিছু বাদ নেই।
তাঁবুটাবু খাটানো আছে? লোকে এসে থাকছে কোথায়?
খোলা মাঠে। কোনো অসুবিধে নেই, গাড়ির মধ্যে করে আছে ট্রাক্টরের মধ্যে করে আছে। কিছু অতিথিশালা টাইপের চোখে পড়বে যেগুলো ফাঁকা ধানজমিতে, কেবল মাথায় একটা তেরপল দেওয়া, বাকিটা ফাঁকা। এরকম মেলায় অনেক আছে। বেশিরভাগ ফাঁকা মাঠে থাকছে। দেবতার প্রতি ভক্তি অনেক!
এখানে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের ব্যাপারটা কম কিন্তু, মানে কোনো পুরোহিত দাঁড়িয়ে পুজো করছে এরকম দেখা যাচ্ছে না। অন্য সময়ে কী হয় জানি না,  এরকম অনেক লোক আছে যারা বলবে এই সময়ে যাব না, পরে যাব। ওই একাত্ম হওয়ার ব্যাপারটা আর কি। কিন্তু একাত্ম হওয়াটা এই কয়দিনে অসম্ভব। অনেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিজেদের লিফলেট দিয়েছে। তার মধ্যে আমার চেনা লাগল ব্রহ্মকুমারী, এলগিন রোডে যাদের অফিস। বাকি আরও ওই ধরনের। কিছু লোক যারা এই ধরনের প্রতিষ্ঠান চালায়, তারা সেখানে নামধ্যান করছে। কেউ কেউ নাটক টাটক করছে, যেমন ঈশ্বরের পালা-টালা হয় আর কি।
আর একটা ‘ভর’ দেখলাম। এক মাঝবয়সী মহিলা জিভ বের করে রক্ত ও সিন্দুর মেখে মুখ লাল করে চলেছে। তাকে ঘিরে একটা ভিড় মন্দিরের দিকে চলেছে। সঙ্গে হিন্দিতে সাবধানবাণী — ‘সরে যাও, রাস্তা দাও, গাড়িমাইকে’।

সংস্কৃতি কলেয়া, গাড়িমাই মেলা, পশুবলি, মদেশীয়, মদেশীয় নেপাল

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in