• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

ভ্রমণের কথা : ‘কোচবিহারে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা আছে কি?’

July 4, 2015 admin Leave a Comment

সোহিনী রায়, কলকাতা, ১৪ জুন#

কলকাতা থেকে ট্রেন ছাড়ার সময় গরমে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা ছিল। রাতের শুরুতে গরমে ঘুম আসছিল না। তারপর ট্রেনের দুলুনি ও ক্লান্তিতে ঘুম চলে এলেও বারবার ঘুম ভাঙ্গছিল গরমে। ভোরের দিকে ঘুমের মধ্যেই বুঝতে পারলাম একটা নরম ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে যাচ্ছে গোটা কামরায়। আরামে আরও গভীর ঘুমে ডুব দিলাম। ঘুম ভাঙ্গলো শিরশিরে ঠান্ডা লাগার অনুভূতিতে। চোখ খুলে দেখলাম নিউ জলপাইগুড়ি চলে এসেছে। জানলার বাইরে বৃষ্টিতে ভেজা ষ্টেশন। এরপরে মাথার ওপরের পাখা বন্ধ করে দিতে হল। কোচবিহার পৌঁছে দেখালাম সদ্য বৃষ্টি থেমেছে। বৃষ্টিতে ভেজা রাস্তা ঘাট, টিনের চাল দিয়ে তখনো জল পড়ছে, গাছের তলাতে দাঁড়লে মাথার ওপর জল পড়ছে। সোমনাথদার বাইকে চেপে স্টেশন থেকে পৌঁছালাম রামজীবনদার বাড়ি।
এই বছরের এপ্রিল মাসের নেপাল-ভূমিকম্প কোচবিহার সহ গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে তৈরি করেছে এক আতঙ্ক। ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণার সুত্রে এই বিষয়ে আমি খানিক ওয়াকিবহাল। তাই মূলত স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সাথে ভূমিকম্প বিষয়ক প্রাথমিক আলোচনার জন্য আমার কোচবিহার যাওয়া। যেদিন কোচবিহার পৌঁছালাম সেইদিন ছিল কোচবিহার উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান। তার পরদিন ছিল সদর গভর্নমেন্ট স্কুলের অনুষ্ঠান আর তার পরের দিন ছিল রেড ক্রশ সোসাইটি হলে একটি জনসভা। প্রতিটি অনুষ্ঠানেই আমি মূল আলোচনা করছিলাম আর তারপরে থাকছিল একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রথম দিনের অর্থাৎ উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের অনিষ্ঠানের দিনের ছাত্রী সংখ্যা ছিল পরবর্তী অন্যান্য দিনগুলোর ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি, প্রায় দেড়শো মতো। সব বয়সের ছাত্রীরাই ছিল। আমি আলোচনার সুবিধার জন্য পাওয়ারপয়েন্টে কিছু স্লাইড বানিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম, সেইগুলো প্রজেক্টারের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছিল। আলোচনা চালাতে গিয়ে আমার মনে হচ্ছিল যে শ্রোতাদের সাথে সঠিক যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে না। তার কারণ নানান কিছুই হতে পারে। আমার বলার ধরন হতে পারে। আমার স্লাইডের বেশিরভাগ লেখা ইংরিজিতে ছিল, তার জন্যও ছাত্রীরা একটা দূরত্ব অনুভব করতে পারে। এসব সত্ত্বেও ওদের মধ্য থেকে নানা ধরনের প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল সেইদিন, যেমন — ‘ভূমিকম্পের সময় কী করা উচিত’, ‘কোচবিহারে কি ভূমিকম্প হতে পারে?’, ‘হলে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে?’ ইত্যাদি।
পরের দিনের বক্তব্য আমি যথাসম্ভব সহজবোধ্য ও সরল করে তুলি। স্লাইডগুলো ইংরিজি থেকে বাংলা করি, বেশ কিছু ভিডিও ক্লিপ যোগ করি। সেদিনের আলোচনায় সদর গভর্নমেন্ট স্কুলের ষাট জনের মতো ছাত্র উপস্থিত ছিল। চতুর্থ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সব বয়সের ছাত্ররাই ছিল। আমার মনে হয়েছিল যে, স্নেহাশিসদার গোছানো ব্যবস্থাপনায় শুরু হওয়া সেইদিনকার অনুষ্ঠান খুবই প্রাণবন্ত ছিল। আলোচনা চলার গোটা সময়টা জুড়েই ছাত্ররা অত্যন্ত সজাগ ছিল। আমার করা বিভিন্ন প্রশ্নের সাধ্যমতো উত্তর দেওয়ার মধ্য দিয়ে তারা প্রতি মুহূর্তে নিজেদের জড়িয়ে নিচ্ছিল আলোচনার সাথে। তাদের কিছু কিছু উত্তর মনে রাখার মতো ছিল। যেমন, একজন জার্মান বিজ্ঞানীর তত্ত্ব বিজ্ঞানসমাজ প্রাথমিক ভাবে মেনে নেয়নি।, আমার প্রশ্ন ছিল, ‘ কেন মেনে নেয়নি বলে তোমাদের মনে হয়?’ বেশীরভাগ ছাত্র উত্তর দেয় ‘চার্চ বাধা দিয়েছিল’, একজন উত্তর দিয়েছিল, ‘উনি জার্মান ছিলেন তো তাই ওঁর লেখাগুলো জার্মান ভাষায় ছিল, তাই আমেরিকানরা পড়ে বুঝতে পারেনি’। একবার আমি প্রশ্ন করি, ‘ভূমিকম্পের সময় মাটি কাঁপে কেন কেউ বলতে পারবে?’ একজন উত্তর দেয়, ‘ভারতীয় পাত এশিয়ার পাতের তলায় অবিরাম ঢুকে চলেছে, হঠাৎ কিছুক্ষণের জন্য যখন থেমে যায়, তখন আমরা কেঁপে উঠি। চলন্ত বাস হঠাৎ থেমে গেলে যেমন ঝাঁকুনি হয় আর কি!’ উপরোক্ত উত্তরগুলোর একটিও সঠিক নয়, এমনকী সঠিকের কাছাকাছিও নয়। কিন্তু প্রতিটি উত্তরই ছাত্রদের যুক্তিবোধ, কল্পনাপ্রবণতা ও আগ্রহকে তুলে ধরে। আমি বুঝতে পারছিলাম যে  ছাত্ররা ক্রমশ আলোচনার ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে, আমার চিন্তার সাথে তাদের চিন্তার একটা যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে।
এখানেও বহু ধরনের প্রশ্ন উঠে এসেছে। ভূমিকম্পের কারণ আর ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা কীরকম ভাবে করা যেতে পারে —– প্রধানত এই দুই বিষয়কে ঘিরে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠে আসছিল। প্রথম ধরনের প্রশ্নগুলো ছিল এইরকম, ‘ তৃতীয় ধরণের পাত-সীমান্ত কেন একটি পাত-সীমান্ত?’, ‘ নতুন ধরনের কোনো পাত-সীমান্ত তৈরি হতে পারে কি না, যদি হয় সেইখানে ভূমিকম্প হতে পারে কি না?’, ‘ভূ-ত্বকের তলায় লাভার স্তর উত্তপ্ত হওয়ার কারণ কি?’, ইত্যাদি। ভুমিকম্প-নিরোধক বাড়ি প্রসঙ্গে করা তাদের প্রশ্নগুলোকে প্রশ্ন না বলে, কল্পনাপ্রবণ সংযোজন বলাই ভালো। কারোর বক্তব্য ‘বাড়ির তলাটা যদি নৌকার মতো হয়, তাহলে কেমন হয়’, কেউ আবার বলল ‘বাড়িগুলি যদি জলের মধ্যে হয় তাহলে কেমন হয়’, ইত্যাদি। ভূমিকম্প-নিরোধক বাড়ির উদাহরণ আমি বার বার দিচ্ছিলাম আমেরিকা ও জাপান থেকে। একটি ছেলে প্রশ্ন করে যে ভারতবর্ষের মতো গরিব দেশে কি ওই ধরনের বাড়ি করা সম্ভব? আমি সাধ্যমতো উত্তর দিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল যে ভারতবর্ষের মতো গরিব দেশে যুদ্ধাস্ত্র খাতে, সেনাবাহিনীর অফিসারদের আমোদপ্রমোদ খাতে কত খরচ করা হয় (যার সবটাই অপ্রয়োজনীয় বলেই আমি মনে করি) সে বিষয়ে সঠিক তথ্য যদি আমার কাছে থাকত, তাহলে আমার উত্তর আরও তীক্ষ্ণ ও তথ্যসমৃদ্ধ হত। আলোচনা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ছাত্ররা অনেকক্ষণ প্রশ্ন করে যাচ্ছিল। তারা প্রশ্ন করছিল যে ভূতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা কীভাবে করা যায়, ভূতত্ত্ব নিয়ে পড়তে গেলে আগে থেকে কী ধরনের বিষয় নিয়ে পড়তে হবে ইত্যাদি। ছাত্রদের সাথে কথা বলার সময়  ভূতত্ত্বের বেশ কিছু বাংলা পরিভাষা আমি শিখেওছিলাম।
রেড ক্রশ সোসাইটি হলের আলোচনা তুলনায় বেশ কিছুটা নিষ্প্রভ ছিল। আলোচনা করার সময় বুঝতে পারছিলাম যে  আলোচনার মধ্যে দর্শকরা ঠিক অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। আমি যে প্রশ্নগুলো করছিলাম সেইগুলোর কোনো উত্তর আসছিল না। দর্শকদের সবার বয়সই যথেষ্ট বেশি ছিল। সম্ভবত সেই কারণেই এক ধরনের সংকোচ কাজ করছিল তাদের মধ্যে। দর্শকদের বয়সের কথা মাথায় রেখে আমারই হয়তো আলোচনার ধরন বদলানোর দরকার ছিল। আলোচনাটা প্রাণ ফিরে পায় প্রশ্নোত্তর পর্বে। তবে আমি যে বিষয়টি নিয়ে বলেছিলাম, প্রশ্ন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার বাইরে থেকে আসছিল, যেমন, ‘ভূমিকম্পের সময় মাথা ঘোরায় কেন?’, ‘কোচবিহারে কত বড়ো ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে, জাপান, আমেরিকা, দিল্লির মতো ভূমিকম্প নিরোধক ব্যবস্থা কোচবিহারের জন্য দরকার আছে কি না?’ পশুপাখিদের আচরণ থেকে ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা জারি করা সম্ভব কি না? না গেলে কেন সম্ভব নয়?’, ইত্যাদি। আমার মনে হচ্ছিল, প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে আমার আলোচনার কোন প্রয়োজন ছিল না। সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্বে চলে গেলেই ভালো হত। যারা এসেছিলেন সবাই আগে থেকেই কিছু প্রশ্ন ভেবে এসেছিলেন, হয়তো সেই প্রশ্নগূলো তাঁদের অনেকদিন ধরে তাড়া করে বেড়াচ্ছিল, অপেক্ষা করছিলেন কখন আমার বলা শেষ হবে আর প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হবে। দু-একটা অন্যরকম প্রশ্ন ছাড়া বাদবাকি সব প্রশ্নই কোচবিহারে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা ও সেই অনুযায়ী কী রকম ধরনের বাড়ি তৈরি করা দরকার — এইসব বিষয়কে ঘিরেই ঘোরাফেরা করছিল। আমার বার বার মনে হচ্ছিল যে তারা আমার মুখ থেকে এইটাই শুনতে চাইছেন যে, কোচবিহারে ভূমিকম্প হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, সুতরাং এখানে ভূমিকম্প নিরোধক কোনো ব্যবস্থা নেওয়ারও কোনো দরকার নেই। আমি হয়তো তাদেরকে হতাশ করেছি। কারণ, কোচবিহারের মতো হিমালয়ের এত কাছাকাছি থাকা একটা জায়গা সম্পর্কে এইরকমটা বলা যেতে পারে বলে আমি মনে করি না। বস্তুত, পৃথিবীর কোনো জায়গা সম্পর্কেই এই ধরনের কথা বলা যায় বলেও আমি মনে করি না। আর তাই আমি মনে করি যে, পৃথিবীর সমস্ত জায়গাতেই মাত্রা অনুযায়ী ‘কমবেশি’ ভূমিকম্প নিরোধক ব্যবস্থা থাকা দরকার। কিছু প্রশ্ন মনে রাখার মতো ছিল, যেমনঃ ‘পৃথিবীর কেন্দ্র কঠিন পদার্থ কেন?’, ‘কোনো একটি জায়গায় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা ভূতাত্ত্বিকরা কীভাবে বুঝতে পারেন?’, ‘ পূর্ব কম্পন, মূল কম্পন আর উত্তর কম্পন কীভাবে আলাদা করা যায়?, ‘শোনা যাচ্ছে যে নেপালের ভূমিকম্প নাকি আমেরিকা তৈরি করেছে — এইটা কি সত্যি?’, ইত্যাদি।
এই তিনটি আলোচনারই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ও মাধুর্য্য ছিল। আলোচনাগুলো থেকে আমি নিজেও অনেক কিছু শিখেছি। এরপরের আলোচনা দুটি ছিল দিনহাটার একটি স্কুলে ও বামনহাটা বাজারে। ‘শহর’ কোচবিহারের পর, কোচবিহারের ‘গ্রাম’-এর অভিজ্ঞতার জন্য অপেক্ষা করছিলাম অধীর আগ্রহে।

সংস্কৃতি কোচবিহার, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভূমিকম্প, ভূমিকম্প নিরোধক বাড়ি

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in