• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

বিবিরহাটের জরির কাজ আজ সংকটের মুখে

July 27, 2014 admin Leave a Comment

১৩ জুলাই, শাকিল মহিনউদ্দিন, মেটিয়াবুরুজ#

jori

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিবিরহাট, গায়ে গায়ে বাখরাহাট। জরি পরা শাড়িতে একদা অগ্রগণ্য অঞ্চল। যান্ত্রিক নগর কলকাতার খুব নিকটেই অবস্থিত, অথচ হস্তশিল্পের সূক্ষ্ম কারুকার্যে নামডাক তার। শাড়িতে জরির কাজে ওখানকার অধিবাসীরা বেশ দক্ষ। এই কাজের জন্য গর্বও ছিল তাদের। বর্তমানে সেই গর্বে বেশ ভাটা পড়েছে। ভাটা ধরিয়েছে যন্ত্র কম্পিউটার। বন্ধু বরজাহান সেখ ও নাসিরউদ্দিন মীরের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে বেরিয়ে এল ওখানকার বর্তমান অবস্থার কথা। ওদের মিষ্ট আলাপচারিতায় রসিকতার খই ফুটলেও ভেতরের একরাশ হতাশাও ধরা পড়ল। ‘ বিবি সাহেবাদের সাজানোর কাজ থেকে আমাদের ছুটি মিলেছে, কম্পিউটারের দৌলতে বিবিরা আজ মেমসাহেব।’

কথায় কথায় জানতে পারলাম, একসময় ওখানকার মা-বোন আর যুবক ভাইদের ফুরসত ছিল না, সময়ের সঙ্গে তাল রেখে হস্তশিল্পের মুন্সিয়ানায়। এগারো হাতকে আরও বাহারিয়ানায় ভরিয়ে তুলতে ওদের চেষ্টার অন্ত ছিল না। ঘর ঘর রমরমিয়ে চলত এই কাজ। দিনমানে তো আছেই, ঘুটঘুটে সন্ধ্যায় টিমটিমে লন্ঠনের ছোট্ট আলোকে দু-চোখের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আর আঙুলের কারসাজিতে ফুটে উঠত রঙবেরঙের ফুল, তাকে ঘিরে থাকত রেশমি সুতোর চকমকি। সাংসারিক কাজে নিপুণা মহিলারা ঘর সামলে বাড়িতে বসেই উপার্জন করত বেশ কিছু টাকা, সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে বাঁচিয়ে ফেলত খুঁটিনাটি স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য মূল্যবান হাতখরচ। এখন ঘরে ঘরে টানাটানি-অনটন পিছু ছাড়ে না।

জরির কাজ এক অতুলনীয় হস্তশিল্প। জরির জারিজুরিতে সাধারণ সস্তার শাড়িও হয়ে উঠত অনন্য সাধারণ। চোখের আন্দাজ আর হাতের কলাকৌশলে এগারো হাতে ঢলে পড়ত প্রকৃতির রূপ রস আর রঙ। হাতে বোনা ফুলের সৌন্দর্যগুণে মুগ্ধ হয়ে ছুটে আসত চুমকি, রিংঝুরির মতো শয়ে শয়ে প্রজাপতিরা। চারিপাশে রেশমির সোনালী আলো নারীর আঁকাবাঁকা শরীরে ঢেউ খেলাতে খেলাতে হয়ে উঠত প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর নদীটির মতো। জরির ডুরে কাঁকাল হয়ে উঠত অনন্যসুন্দর। সুতলির এক একটি টানকে মনে হত নদীপাড়ের সারি সারি বৃক্ষরাজি। নারী হয়ে উঠত চপলা চঞ্চলা হরিণীর মতোই জীবন্ত।
কাটদানা, টিকে, রিংঝুরি, রেশম, পাথর, ফোর্জি আর অ্যাঙ্কর সুতোর নিপুণ টান আর নিখুঁত বয়নে সেজে উঠত অজস্র শাড়ি। মধ্যমণি অবশ্যই রেশম। তার চাকচিক্য ভরিয়ে তুলত সারা ক্যানভাসটাকে। লক্ষ্মীর আগমনে ঘর-গৃহস্থ উঠত নানা রঙে সেজে। কিন্তু এখন গৃহস্থ ঘরগুলি রঙ হারিয়ে বড়োই বেরঙা। কারণ জরির কাজ এলাকা থেকে প্রায় অবলুপ্তির পথে। গত পাঁচ বছরে আমূল পাল্টে গেছে সেই চেনা ছবি। কম্পিউটারের স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রে তোলা ফুলের চাপে পিছিয়ে পড়েছে বহু মেহনত করে তোলা সেই ফুল। দামের বিচারে ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে পড়তে আজ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বহু পুরোনো এই হস্তশিল্প।
তবে কম্পিউটার ফুলের অবয়বটা গড়ে তুললেও এখনও পেরে ওঠেনি তাকে সাজানোর কাজ। ফুলগুলোকে হাইলাইট করার জন্য খুঁটিনাটি কারুকার্যের প্রয়োজন থাকে। এই কাজগুলিই বর্তমানে হাতে করা হয়। বসানো হয় টিকে, পাথর, কাটদান্‌ রিংঝুরির মতো বেশ কিছু উপকরণ। সবশেষে রেশমের বেড় দিয়ে মাঝখানটাকে বিশেষ মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওর মজুরি নিতান্তই কম। তাছাড়া আগের চেয়ে কাজও অনেক কমে এসেছে। তাই কঠিন অবস্থার মুখোমুখি এই জরিশিল্প। অনেকেই এই ঘরানা থেকে সরে আসছে। আর বেকার হয়ে পড়ছে রোজগেরে মা-বোনেরা। জোয়ান যুবকেরা মাঠেঘাটে গতর খাটিয়ে কলকাতায় ছুটে কোনোরকমে রোজগারের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু পাড়াগাঁয়ের লাজুক মহিলারা? তাদের অবস্থা বেশ সঙ্গীন।
আমার বন্ধুরা জানালো আরও বিপত্তির কথা। এত কিছুর পরেও টিমটিম করে চলছিল এই কাজ। তাতে থাবা বসিয়েছে মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের লালসা আর বড়ো ব্যবসায়ী হাত। ৩০০ টাকা শাড়ি পিছু পাকাপাকি কথার পরও নতুন ফন্দিফিকিরে তারা সদা তৎপর। হুটহাট কেটে নিচ্ছে কারিগর ওস্তাগরদের খাটুনির টাকা। ধুরন্দর বুদ্ধির এই ব্যবসায়ীরা নানা ছলছুতোয় অভাবি শিল্পীদের দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে চলেছে। ণ্ণকাজ খারাপ হয়েছে’ — এই অজুহাত দিয়ে লুট করে নিচ্ছে মজুরের মজুরির টাকা। ঘটনাটা চারিদিকে চাউর হলেও আইনের কোনো হেলদোল নেই। কুমতলবিদের আটকানোর জন্য যেন দেশে কোনো আইন নেই। নিরুপায় কারিগর বা গাঁটুরি বহন করা ওস্তাগরদের হাতে হাড়ভাঙা খাটুনির শেষে বলতে গেলে কিছুই থাকছে না। তাই ফুলের সৌন্দর্য আজ ম্রিয়মান। জরির জারিজুরি আজ বেকায়দায়, রেশমির রঙ আজ বিবর্ণ, ঠিক ঘরের মা-বোনেদের শুকনো মুখের মতো। মুখ শুকনো, আঁচলে পয়সা নেই, নেই বহু সাধের শৌখিন জরির কাজ।

কৃষি ও গ্রাম মহিলা, শ্রমজীবী

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in