• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

বাগনানে আদিবাসী শিকার পরব

May 22, 2015 admin Leave a Comment

অলকেশ মণ্ডল, বাইনান, বাগনান, ২১ মে#

শিকার পরবে এক অংশের ছবি প্রতিবেদকের তোলা।
শিকার পরবে এক অংশের ছবি প্রতিবেদকের তোলা।

১৭ মে বাইনান থেকে বাগনান যাবার পথে দশ-বারো জনের একটা আদিবাসী দলকে প্রথম শিকার করতে দেখলাম। তির-ধনুক, বল্লম, টাঙ্গী, বর্শা, তরোয়াল, গুলতি প্রভৃতি নানারকম অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পিচ রাস্তার ধারে খাতের দুপাশে ঝোপ-ঝাড় থেকে ওরা শিকার করছিল। গোসাপ, ইঁদুর, ভাম, খটাশ, দাঁড়াশ সাপ, ঘুঘু বা ডাহুক পাখি সবই ছিল ওদের সংগ্রহে। বেশীর ভাগই মৃত। দুপুর রোদে বেশ কসরত করে ওদেরকে শিকার করতে দেখলাম। ওরা নিজেদের মধ্যে সাঁওতালি ভাষায় কথা বলছিল। কথা বলার আগ্রহ কম তবুও একজন জানাল যে বাগনান এলাকায় ওদের শিকার-পরব চলছে। বহু মানুষ এসেছে। ঝাড়গ্রাম, গড়বেতা, খড়্গপুর প্রভৃতি বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে ওরা আশ্র্য় নিয়েছে বাগনান রেল ষ্টেশনে। যাতায়াতের সময় আরো কয়েকটি দলকে অস্ত্র সহ যেতে দেখলাম।
১৮ ই মে বিকেলে বাগনানে গিয়ে সত্যিই অবাক হতে হল। ষ্টেশনের সর্বত্র দলে দলে শিকারী মানুষজন। যুবকরাই সংখ্যায় বেশী। অধিকাংশেরই কথা বলার আগ্রহ বা সময় নেই। শিকারকে রান্না করে খেতে ব্যস্ত। ৫ নং প্লাটফর্মের পশ্চিম প্রান্তে কয়েকজন বসে ছিলেন। কথা বলতে গিয়ে জানলাম, সবে শিকার থেকে ফিরেছে, ওদের এখনো খাওয়া হয়নি। অপেক্ষা করলাম। নিচে রেললাইনের পাশে কাঠ জ্বালিয়ে মরা প্রাণীগুলোকে ঝলসিয়ে বা চামড়া ছাড়িয়ে মাংস রেডি করা হল। তারপর একটা হাঁড়িতে টুকরো মাংসগুলোকে অল্প সেদ্ধ করে কলাপাতায় রেখে তেল, নুন, লংকা, পিঁয়াজ দিয়ে মাখানো হল। তারপর লাইনের ধার থেকে আনা চওড়া পাতায় করে সকলকে বন্টন করা হল। পেটের আগুন কিছুটা নিভল। আরো মাংস আছে। এরপর রান্না হলে ভাত দিয়ে খাওয়া হবে। ইঁট সাজিয়ে পাশাপাশি দুটো উনুন রেডি করে ভাতের হাঁড়ি বসানো হচ্ছে। সামনে শুকনো ডালপালা। কথা বলার জন্য সর্দার মত একজনকে পাওয়া গেল। জানলাম ওরা গড়বেতা থেকে এসেছেন। কেউ জানে না মোট কতগুলো দল এসেছে। তবে প্রতিটা দলই যেহেতু শিকারকে রান্না করে খায় তাই হাঁড়ি গুনলে হয়তো বলা যেত। কিন্তু আমি যখন পৌঁছেছি তখন অনেক মানুষ শিকার-পরব সাঙ্গ করে বাড়ি অথবা ক্ষীরাই ফিরে গেছেন। প্রতি বছর জৈষ্ঠ্য মাসের অমাবস্যায় ওঁরা বাগনানে আসেন। তখন ক্ষীরাই এর কালীপূজো হয়। হাওড়া-খড়্গপুর লাইনে এই ক্ষীরাই ষ্টেশন। সেখান থেকে কিছুদুরে এই বিখ্যাত তিনতৌড়ি-বেগুনবাড়ীর কালীপুজোর মেলা বসে। শিকার সেরে অনেকেই ক্ষীরাই ষ্টেশনে আশ্রয় নেন। মেলার হৈচৈ, জুয়া, মদ, হাড়িয়া, মহুয়া সবকিছুর আয়োজন থাকে। সর্দারের চিন্তা হচ্ছে, ভাত হতে দেরী হলে শিরোমনী প্যাসেঞ্জার পাওয়া যাবে না। এখানেই হয়ত রাত কাটাতে হবে। অনেক দলের কাছেই কয়েকটা করে আহত কিন্তু জ্যান্ত গোসাপ দেখলাম। গোসাপগুলোর মুখ এবং পাগুলোকে ভালো করে বেঁধে রাখা আছে। অভিজ্ঞতা নেবার জন্য মোবাইলে থাকা কয়েকটা সাপের ছবি দেখালাম। ঢেমনা সাপ ছাড়া আর কোনও সাপ ওরা খায় না। নিরুপায় না হলে বিষাক্ত সাপকেও ওরা মারে না। সাপের ছবি দেখানোর সময় অনেকেই হাজির হয়েছিল। আবার যে যার কাজে লেগে গেল। ষ্টেশনে মহুয়া বিক্রি করছে এক কমবয়সী দম্পতি। আরো কয়েকজন এসেছে মহুয়া বিক্রি করতে। যেখানেই মানুষ শিকারে যান ওরা সেখানেই হাজির থাকে। কোন দলকে দেখলাম বড় এ্যলুমিনিয়ামের হাঁড়িতে করে হাড়িয়া এনেছে। কষা মাংস বা চপ দিয়ে হাড়িয়া আর মহুয়া পান করছে অনেকেই। শুয়ে যারা আছে তারা নেশার ঘোরে না ক্লান্তিতে তা তাদের দেখে ঠিক বোঝা গেল না।
প্রথমে ভেবেছিলাম ওদের হয়তো খাবার জোটে না তাই শিকার করে খাবার সংগ্রহ করে। সর্দারের সাথে কথা বলে ভুল ভাঙল। ওরা সবাই প্রধানত  চাষের কাজ করে। এটা পুরুষানুক্রমে চলে আসা একটা পরব। অনেকটা পিকনিকের মতো। বাগনান ছাড়াও অযোধ্যা পাহাড় এবং অন্যত্র বছরের নির্দিষ্ট দিনে কেবল পুরুষরা হাজির হয় শিকারের জন্য। বিবাহিত মহিলারা তখন বাড়িতে বৈধব্যের বেশে থাকে পুরুষটির বাড়ীতে ফেরা পর্যন্ত। অতগুলো প্রানীর মৃত্যু দেখে মন খারাপ লাগছিল। বিশেষ করে গোসাপ, ভাম বা খটাশ এদের জন্য। গোসাপ না থাকলে সাপের উপদ্রব যে বাড়ে সেই আশঙ্কার কথা ওরাও স্বীকার করল। তবে সাপে কামড়ালে গুনিন অপেক্ষা হাসপাতালে যাওয়াই উচিত বলে উপস্থিত সবাই জানাল- যা দুঃখের মাঝেও সুখের অনুভুতি সঞ্চা্র করে দিয়ে গেল।

বাগনান স্টেশনে শিকার পরবে অংশগ্রহণকারী আদিবাসীর ছবি প্রতিবেদকের তোলা।
বাগনান স্টেশনে শিকার পরবে অংশগ্রহণকারী আদিবাসীর ছবি প্রতিবেদকের তোলা।

সংস্কৃতি আদিবাসী, পুরুষানুক্রমিক প্রথা, বাইনান, বাগনান, শিকার পরব

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in