• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

পথচারীদের দুঃস্বপ্ন ইএম বাইপাসে একটি পথ দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা এবং …

February 14, 2015 admin Leave a Comment

শিল্পী মৈত্র, কলকাতা, ২ ফেব্রুয়ারি#

embypass
মিলন মেলা গামী বাসে গান শুনতে শুনতে এগিয়ে চলেছি। বেশ ভালো লাগছে বাসের জানালা দিয়ে বাইরেটা দেখতে। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে গুটি কয়েক লোক দাঁড়িয়ে, বাসের অপেক্ষায়। বাইপাস। জায়গার নাম জানিনা। বাসটা একটু ধীর হতেই, পলক পড়ার আগেই একটা মোটরবাইক ঝড়ের বেগে এসে বাসের জন্য অপেক্ষারত একজন ভদ্রলোককে নিয়ে চোখের সামনে উড়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে এক ভীষণ আওয়াজ! আর আমি দিগ্বিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে তৎক্ষণাৎ বাস থেকে ঝাঁপ!
একটা গোটা মানুষের দেহ উড়ে এসে চিৎপাত হয়ে মাটিতে পড়লো, আমি ঝাঁপিয়ে পড়েছি লোকটির ওপর। বুকে আঁকড়ে টেনে তোলার চেষ্টা করছি, চিৎকার করছি — জল আনুন, হাসপাতালে নিয়ে চলুন — এইসব বলে। কিন্তু কে জল আনবে। আশেপাশের সবাই তখন বাইক আরোহীকে নিয়ে ব্যস্ত। হঠাৎ মাথায় এল আমার ব্যাগে হয়তো জল আছে। ছোট্ট জলের বোতলটা কাঁপা কাঁপা হাতে কোনোরকমে হাতড়ে ঝোলা থেকে বের করলাম। চোখে মুখে, মাথায় জল দিচ্ছি আর সবাইকে ডাকছি, মুখে জল ঢালছি, সবাইকে ডাকছি। লোকটি জ্ঞানশূণ্য, ধরে বসিয়ে রাখতে পারছি না … খুব জোরে জোরে উনার বুকের কাছটা ডলতে শুরু করলাম। মুখে জল দিচ্ছি, চোখ মেলে ধরার চেষ্টা করছি, একবার পায়ের নিচে, একবার হাতের তালু, একবার বুক ডলেই চলেছি। হঠাৎ আমার মুখে ছিটে এল উনার মুখে ঢালা জল। কেশে উঠলেন। জ্ঞান ফিরেছে। চোখ মেলেছেন কিন্তু বোধ হয় কিছু চিনতে পারছেন না! মাথায় খোঁচা খোঁচা চুল, গায়ে মলিন গরমপোশাক, পায়ের চটি জোড়া কোথায় ছিটকে পড়েছে। নিতান্ত নিরীহ ও গরিব মানুষ, চেহারায় তার ছাপ। কপাল কেটে রক্ত ঝরছে, শাড়ির আঁচল দিয়ে চেপে ধরে আছি। কিছুক্ষণ উনার সঙ্গে নানান কথা বলতে উনি ধাতস্থ হলেন। বললেন, মাথার পেছনে অসহ্য যন্ত্রণা করছে, পা নাড়াতে পারছেন না। দেখলাম মাথার পেছনটা আর হাঁটু ধীরে ধীরে ফুলে উঠছে, তখনও আমি একা।
আমাদের থেকে কয়েক হাত দূরে জলটালা পেকেছে। বাইক আরোহী ছেলেদুটিকে ধরা গেছে। প্রচণ্ড বাক বিতণ্ডা হতে হতে তা গালিগালাজ এবং হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছল। আরোহীদ্বয়ের মধ্যে থেকে এক অবাঙালী সওয়ারি এসে নানান কিছু বলে আহত লোকটিকে টেনে তোলার চেষ্টা করছে। আমি বারণ করলাম তুলতে, ছেলেটিকে সরিয়ে দিলাম। আর তখন ভিড়টা আমাদের কাছে সরে এসেছে। ‘ম্যাডাম দেখুন এরাই লোকটাকে মেরে দিয়ে আবার বড়ো বড়ো রোয়াব নিচ্ছে — কেউ একজন বললেন। মোটরবাইকের প্রধান চালক তখন অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি এবং মদন মিত্রকে ডেকে পাঠাচ্ছি গোছের কথা বলছে। মুখে মদের গন্ধ। বয়স আন্দাজ উনিশ কি কুড়ি। ভাষা বাংলা হিন্দি ইংরেজি মেশানো। সে ভীষণই অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে, এলেবেলে নয়, তা বারবার তার কথায় প্রকাশ করছে।
উপস্থিত সকলেই নিজের পাড়া জাহির করে ছেলেটিকে মারতে উদ্যত। আমি বোঝালাম ছেলেটিকে অত কথার মধ্যেও, যে ও কি করলো আর ও কি বলছে! ইতিমধ্যে ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন পুলিশকে ফোন করে কাজের কাজ করেছেন। আশেপাশে টহল দেওয়া একজন অল্পবয়সী পুলিশ এসে হাজির। তিনি ঠিক কি করবেন জানেন না। তাই বড়োকর্তার আসার অপেক্ষায় সবার কথাই নির্বিকারভাবে শুনতে লাগলেন। আমি বারবার বলতে লাগলাম, এগুলো ছেড়ে আগে উনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। জবাব — বড়োবাবু না আসা অবধি তো কিছু করা যাবে না ম্যাডাম।
বড়োবাবু এলেন খুব বেশি দেরি না করেই। আবার একের পর এক জনগণের নালিশ চলতে লাগলো। দুর্ঘটনায় প্রধান অভিযুতক তখন আমার নাম করে রেহাই পেতে চাইছে, ‘দিদিকে জিজ্ঞেস করে দেখুন আমি কাউকে কোনো খারাপ কথা বলিনি। রাস্তা আটকানো ছিল। তাই ভুল করে মেরে দিয়েছি।’ ‘দিদি এটা আমার মামাবাড়ির পাড়া। দেখুন না কিছু করা যায় কিনা। প্রেসটিজের ব্যাপার।’ পুলিশ আমার বয়ান নিল। সকলের কথাই শুনলো। ফোনে থানায় ডায়রীও লেখানো হলো। কিন্তু এখনো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে না কেন? লোকটি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। জামা ভিজে যাওয়ায় শীতে কাঁপছেন। আমার চাদরটা খুলে জড়িয়ে দিলাম। আর একবার চিৎকার পাড়লাম, তবে রেগে। এবারে কাজ হলো। অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হলো। খানিক বাদে অ্যাম্বুলেন্স এল। স্ট্রেচারে করে উনাকে তুলে রুবি জেনারেল হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হলো। জানতে পারলাম, উনি সোনার দোকানে কাজ করেন। বয়স চল্লিশ-বিয়াল্লিশ। নাম খোকন পুরকায়েত। আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ, লক্ষ্মীকান্তপুরের দিকে বাড়ি। সঙ্গী আরো চারজন আছে (তবে নেপথ্যে)। সঙ্গে যেতে পারলাম না, তবে একজনের টেলিফোন নম্বর নিলাম। অ্যাম্বুলেন্স চলে যেতে, আমার জয়জয়কার। ‘দিদিই তো সব করলেন, উনি না থাকলে বাঁচানোই যেতে না।’ ‘হ্যাঁ ম্যাডামকে তো আমি প্রথম থেকে দেখলাম, যেভাবে উনি সব করলেন … সত্যি আজকালকার দিনে এমন …।’ ওদিকে অভিযুক্ত দুজনকে নিয়ে পুলিশ ও অন্যান্যরা ঘিরে রয়েছেন। আর ইচ্ছা করলো না ওখানে থাকতে বা কি হচ্ছে জানার জন্য। মিলনমেলাগামী আরেকটা বাস ধরলাম। উঠে কন্ডাক্টরকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমি যেখান থেকে উঠলাম, জায়গাটার নাম কী?’ বললেন, ‘বাগরি-বাজার’।
পুনশ্চ : রাতে টেলিফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, রুবি জেনারেল হাসপাতালের তিরিশ হাজার টাকা চাওয়ায় ওনাকে ওখান থেকে সরিয়ে চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সিটি স্ক্যান করতে ৮০০ টাকা লাগছে। অভিযুক্তরা সে খরচ বহন করতে নারাজ। পুলিশও জানিয়েছে তাদের আর কিছু করার নেই।
দু-দিন পর টেলিফোনে জানলাম, এখানে সিটি স্ক্যান করতে দেরি হচ্ছে দেখে ওনাকে ডায়মন্ড হারবারে সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে ১৪০০ টাকা খরচ করে। সেই স্ক্যানের রিপোর্টে সব কিছু স্বাভাবিক আছে বলে জানা গেছে।

মানবাধিকার ই এম বাইপাস, ট্রাফিক পুলিশ, পথ দুর্ঘটনা, প্রাইভেট হাসপাতাল, মোটরবাইক, শ্রমজীবী

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in