• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

জঙ্গলমহলে রহৈন পুজো

June 13, 2014 admin Leave a Comment

অমিত মাহাতো, ঝাড়গ্রাম, ৩০ মে#

চাষভিত্তিক কুর্মী সম্প্রদায়ের ছবি উইকিপিডিয়া থেকে।
চাষভিত্তিক কুর্মী সম্প্রদায়ের ছবি উইকিপিডিয়া থেকে।

এই সময়টা জঙ্গলমহলের প্রকৃতি জুড়ে প্রচণ্ড দাবদাহ। দহনে মাঠের ঘাসপাতা থেকে মাটি এবং মাটির ওপর বসবাসকারী যত প্রাণী প্রত্যেকেই কষ্টের মধ্যে। চাইছে এক পশলা বৃষ্টি কিংবা কালবৈশাখী। কিন্তু হায়, বৈশাখে বেপাত্তা কালবৈশাখী। জ্যৈষ্ঠেরও একটি সপ্তাহের অবসান ঘটল। বৃষ্টি নেই। তবে সামনেই যে বৃষ্টির দেখা মিলবে তা এই রহৈন উৎসবই মনে করিয়ে দেয়।
জ্যৈষ্ঠ মাসের ১৩ দিনের দিন রহৈন। ইংরেজিতে গত ২৮ মে শুরু হয়েছে। এই দিনটির জন্য জঙ্গলমহলে, বিশেষ করে কুর্মী জনজাতির মানুষ ও কাছাকাছি কুর্মী আচার-আচরণের সমভাবাপন্ন মানুষ এই পুজোয় মেতে ওঠে। পুরো সাত দিন ধরে থাকে এর রেশ। সাতদিনের যে কোনো একদিন কুর্মী জনজাতির মানুষেরা বাড়ির উঠোনের তুলসীতলায় জোড়া পায়রার বাচ্চা (পাটছানা) বলি দিয়ে পুজোপর্ব সারে। এবং ঘরের গৃহবধূ ওই সন্ধ্যেয় শুচি হয়ে পরিশুদ্ধ কাচা কাপড় পরে জমিন থেকে বাঁশের ঝুড়ি বা ঠেকাতে রহৈন মাটি রূপে সাঁঝ থানে বা ঠাকুরথানে রাখে। সেই মাটি তিনভাগ করে যার একভাগ থাকে ঠাকুরথানে। বাকি দুভাগের একভাগ ধানের মাচায় মাঝাঘরে। এবং একভাগ মাটির ঘরের চালের কোনায় গুঁজে রাখে।
প্রসঙ্গত বলে রাখি, তুলসী তলার পরব মূলত বৈষ্ণব ধর্মের অনুপ্রবেশের ফল। তুলসীতলা নামকরণ তো তাই বলে। জঙ্গলমহলের কুর্মী জনজাতির উঠোনের মধ্যে এই দেবস্থান (তুলসীস্থান), মূল কাঠামো মাটি দিয়ে তৈরি এবং এর আকার ও আকৃতি ছোটো হলেও এর আদল অনেকটাই বৌদ্ধ গুম্ফার মতো। এই জনজাতির মানুষ কষ্ট থেকে মুক্তি বা নির্বাণ লাভের জন্য একসময় বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিল। ভগবান বুদ্ধকে প্রকৃতপক্ষে শিবরূপে গ্রহণ করেছিল। এবং পরবর্তীকালে তা থেকে বেরিয়ে এসে মূল শৈব ধর্মের ভেতর আত্মকষ্টের মধ্যে দিয়ে মুক্তির দরজা খুঁজে পেয়েছিল।
প্রসঙ্গত বলা যায়, চড়ক গাজনের সময় এই মানুষজনই বৃষ্টির জন্য আগামী কৃষিকর্মের জন্য মানত রাখে শিবথানে। নিজেকে কষ্ট দিয়ে লৌহ শলাকার বিছানায় গ্রামের দেহরী বা লায়া আসেন মন্দিরে। ভক্তরাও তৈরি। কেউ টাকরা ফোঁড়ানো, দাবনা কিংবা আলজিভ কিংবা পিঠ ফোঁড়ানোর জন্য। শস্যশ্যামলা উর্বর আগামী পৃথিবীর জন্য। কেন না ভগবান শিবই হলেন এই পৃথিবীর আদি ও প্রথম কৃষক। বিয়ের সময় শিবঘরনী পার্বতী বাপের বাড়ি থেকে তিনমুঠো শস্য এনেছিলেন। এবং তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন শিবভূমিতে। তার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি দম্পতিকে। ধরণি হয়ে উঠেছিল শস্যশ্যামলা।
এখানে আর একটি কথা সংযোজন করি। এখানে রেওয়াজ আছে যে, কুর্মী জনজাতির বিয়েতে (এমনকী আদিবাসী সাঁওতালদের বিয়েতেও দেখা যায়, এই আচারটি। বিয়ের পর্ব মিটে গেলে বাপের বাড়ি থেকে মেয়ে ও জামাইকে আঁজলা ভরে তিনমুষ্টি ধান দেওয়া হয় বীজ হিসেবে। রহৈনের মাসে বাড়ির গৃহবধূ প্রতীকি রূপে সেই তিনমুঠো ধান বোনেন জমিতে বীজবপনের আগে বীজতলার জমিতে। এই আচার অনুষ্ঠানটি হল ধানমুঠ। প্রাগৈতিহাসিক সময়ের কৃষিকর্মের প্রাকলগ্নে যে মেয়েরাই প্রথম বীজ বপন করেছিল, এই অনুষ্ঠানটির চল সে সময়েরই স্বীকৃতি দান করে।

কুর্মী জনজাতির মধ্যে সারাবছরে যতগুলো উৎসব পার্বন বা পূজোর অনুষ্ঠান, যথা মকর আইখান ছাতু পরব রহৈন অম্বুবাচী বা ঝাড়খণ্ডের অতি পরিচিত রজস্বলা উৎসব ভাদ্র একাদশীর করম ইন্দ জাওয়া কার্ত্তিকে আমাবস্যায় বাদনা পরব প্রভৃতি উৎসব গুলি সবকটিই কৃষি কেন্দ্রীক। কৃষি কাজ বা চাষ সম্বন্ধীয়। রহৈন-এর সময় মূলত আমন ধানের বীজ বপনের উৎকৃষ্ট সময়। এই সময়টা জঙ্গলমহলে রহৈনালি বাত নামে পরিচিত। বাত অর্থে বীজ বপনের বাতালি বা কাঠ বরাত। শব্দটি বায়ু সম্বন্ধীয়। জৈষ্টের তেরো থেকে কুড়ি হলো রহৈন এবং বীজ বপনের উৎকৃষ্ট সময়। এই সময়টা মাঠে বা জঙ্গলে লাল ভেলভেটে মোড়া ছোটো এক ধরনের কৃষি পোকার আবির্ভাব ঘটে। মাঠময় এরা হেঁটে বেরায়। এগুলোই হলো রহৈন পোকা। এই পোকা মূলত এই সময়টায় থাকে, এই রহৈন-এর এদের আর দেখা যায় না। তারপর এক সময় রহৈনের অবসান ঘটে।

অবসানের পরের দিন হলো ডাহা অর্থাৎ বিরাম। এদিন লাঙল চালানো বা বীজ বপন দুটোই নিষিদ্ধ। ডাহার পরে ডোহো এবং পোড়াডাহা। এই পোড়াডাহার বীজতলা থেকে ধান ভালো হয় না, বরং চাষের ক্ষতি হয়। প্রচণ্ড গরমে মাটি তেতে যাওয়ায় সাপও গর্তে থাকতে পারে না। একটু সন্ধ্যে হলেই তারাও বেরিয়ে পড়ে তৃপ্তির আশায়। এই সমাজ বিশ্বাস করে, রহৈনে যদি বৃষ্টি না হয় তা হলে সাপের বিষ বাড়ে এবং রাগও বাড়ে। তাই হয়ত এখানকার কুর্মী জাতি বৃষ্টির জন্য আপন কৃষ্টির জন্য মৃত্তিকা রূপে প্রকৃতির পূজো করে। এবং সাপের জন্যও ও সর্পকুল রক্ষার জন্যও এই পূজো।

সংস্কৃতি আদিবাসী, কুর্মী, চাষবাস, পশ্চিম মেদিনীপুর, মাহাতো, রহৈন, রহৈন উৎসব

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in