• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের বাধ্যতামূলক হাজিরার নিয়মের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্সি কলেজে অনশন

June 1, 2015 admin Leave a Comment

চূর্ণী ভৌমিক, কলকাতা, ৩০ মে#

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেমেস্টারে ২৩০জন ছাত্রছাত্রী ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে পারেনি। তার আগের সেমেস্টারে ১৮০ জন। এদের প্রত্যেককে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিতে হবে।  তাদের অপরাধ – তাদের ‘নিয়মমাফিক ৭৫ শতাংশ’ উপস্থিতি ছিল না। এনএএসি-র নির্দিষ্ট গাইডলাইন মাফিক ‘ভালো প্রতিষ্ঠান’ সেগুলোই যেখানে এই নিয়মটি পালিত হয়।

আগেরবার ছাত্রছাত্রীরা এই নিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। তাদের দাবি অংশত মেনে নেয় কর্তৃপক্ষ এবং আশ্বস্ত করে যে পরের বার থেকে ছাত্রদের জানিয়ে তাদের মতামত নিয়ে নিয়ম ঠিক করা হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি রাখেনি।

তাই মে মাসের ১২ তারিখ সকাল দশটা থেকে প্রেসিডেন্সির অঙ্কের ছাত্র অমরদীপ কুমার সিংহ অনির্দিষ্টকালীন অনশনে বসে।  সে তার বক্তব্য একটি খোলা চিঠিতে জানায়। সে নিজে পরীক্ষায় বসতে পেরেছে কারণ তার উপস্থিতি যথেষ্ট ছিল, কিন্তু এই অন্যায় সে সহ্য করতে পারেনি। অনশনরত অবস্থায় সে পরীক্ষাও দিয়েছে। তার খোলা চিঠিতে সে একজায়গায় বলেছে সে যখন প্রথম এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিল তখন শিক্ষার পরিবেশ ছিল খোলামেলা। ক্লাসঘরের ভেতরে ও বাইরে সবমিলে শিক্ষার একটা পূর্ণাঙ্গ রূপ ও দেখতে পেয়েছিল, যেখানে পরীক্ষায় বসতে না দেবার জুজু দেখিয়ে ছাত্রদের ক্লাস করতে বাধ্য করার অর্থহীন নিয়ম ছিল না। ছাত্র ক্লাসে যেত স্বেচ্ছায়, না গেলেও তার নিজের দায়িত্বে।

তার অনির্দিষ্টকালীন অনশনের এই সিদ্ধান্ত ছিল সম্পুর্ণ নিজস্ব, এবং ১৯ তারিখ পর্যন্ত গুটিকয়েক ছেলেমেয়ে বাদে কোনো ছাত্রছাত্রী বা ইউনিয়নও অমরদীপের পাশে ছিল না। যারা ছিল তারা সংখ্যায় খুব কম।  এরপর ১৯ তারিখ পরীক্ষা চলাকালীন অমরদীপ অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তখন টনক নড়ে সকলের। কর্তৃপক্ষের সাহায্য অস্বীকার করে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের দায়িত্বে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করায়। অমরদীপের পাশে দাঁড়ানোর মতো ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যাও বাড়ে। সাধারণ সভার মাধ্যমে ঠিক করা হয় যে অমরদীপকে অনশন তুলে নিতে অনুরোধ করা হবে। তার বদলে একই দাবিতে আরও পাঁচজন অনির্দিষ্টকালীন অনশনে বসবে। অসুস্থ অমরদীপ এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে তার অনশন তুলে নেয়।

তারপর ২১ তারিখ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বদ্ধ অফিসঘরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিনি, বিভাগীয় প্রধানেরা ও কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী। আবারও একই কায়দায় ছাত্রদের লিখিত দাবিগুলি গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ ও আশ্বাস দেয় যে কোনো ছাত্রের যাতে বছর নষ্ট না হয় সেই দিকে তারা নজর রাখবে, স্পেশাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে।
কিন্তু উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার যে শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে অমরদীপ আন্দোলনে বসেছিল তা যেন এই ছাত্র ও কর্তৃপক্ষের সমঝোতামূলক আদানপ্রদানের আড়ালে ঢাকা-চাপা পড়ে গেল না কি?

 

অমরদীপের চিঠি

amআমি এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম ২০০৯ সালের গ্রীষ্মকালে, সে সময় এটা তখনও কলেজ ছিল, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত একটি কলেজ। আমি আরও অনেকের মতো শুনেছিলাম এই বিখ্যাত প্রেসিডেন্সি কলেজের গল্পগুলো — রাজনীতির গল্প, প্রমোদদা, ‘পড়াশুনা’, এবং ‘প্রেম’। অবাক হয়ে দেখেছিলাম, তার অনেকগুলোই সত্যি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ক্লাসরুমে যা পড়ানো হত, তা নিশ্চিতভাবেই সিলেবাসের বাইরে। কেউই বুঝতে পারত না, ক্লাস কখন শুরু হল আর কখন শেষ হল — এতটাই বুঁদ করে রাখত সেগুলো। সেই ক্লাসগুলোই আজ করতে কষ্ট হয়। যাই হোক, তখন বেশিরভাগ ক্লাসই না করা ছাত্র/ছাত্রীটির কাছেও শিক্ষকটি ক্লাসের বাইরে অধরা থাকতেন না। কমন রুমে বসে শিক্ষকের কাছ থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে বুঝে নেওয়া যেত বিষয়গুলো। ‘প্রেসিডেন্সি কলেজ’-এর চমৎকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার অবকাশ নেই।
আমি কলেজে ঢোকার কয়েক দিনের মধ্যেই অ্যাকাডেমিক স্বায়ত্বশাসনের একটি আন্দোলনে জড়িয়ে পড়লাম। এই আন্দোলনের শুরু সেই সত্তর দশকে। অবশেষে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্সি হয়ে উঠল ‘একক বিশ্ববিদ্যালয়’। তখন থেকেই প্রেসিডেন্সির একটি নতুন পথে হাঁটা শুরু। নয়া পরিকাঠামো, কমবয়সি অগ্রবাহিনী — প্রেসিডেন্সি পেল এক নয়া আশা, হায়রে, মিথ্যে সে আশা!
দ্রুতই নজরে এল, বেশ কয়েকজন অত্যন্ত ভালো শিক্ষক ইস্তফা দিলেন বা তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হল। নয়া শিক্ষকদের পড়ানোর ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। ছাত্রছাত্রীদের গলা টিপে ধরা শুরু হল। আর এটাই ছিল প্রেসিডেন্সির প্রথম দৃশ্যমান অবনমন। জ্ঞানকে ক্লাসঘরে বন্দী করে রাখার এই প্রয়াস আগে হয়তো কদাচিৎ হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে হাজিরা দিতে বাধ্য করা হতে লাগল। কিন্তু ক্লাসরুমে পড়ানোর প্রাক শর্তগুলির একটির দিকেও নজর দেওয়া হল না। ছাত্র/ছাত্রীটিকে ক্লাসে হাজির হয়ে হাঁ করে বসে থাকতেই হবে, যদি সেখানে শিক্ষক/শিক্ষিকাটি আবর্জনা আউড়ে যান, তথাপি। শিক্ষকদের ও পরিকাঠামোর গুণমান নিয়ে কোনো কথা বলা যাবে না, কেবল পঁচাত্তর শতাংশ হাজিরা নিশ্চিত করাটাই কাজ। এবং এই হাজিরার হিসেব কীভাবে করা হল, তাও মোটেই স্বচ্ছ নয়। এবং তথাকথিত ক্রেডিট সিস্টেমও চালু হল না। তবুও কেন বলির পাঁঠার মতো ছাত্রছাত্রীদের বাধ্য করা হবে ক্লাস করতে?
প্রেসিডেন্সি কখনোই পরীক্ষা নিরীক্ষার জায়গা ছিল না। জেন-এড সিস্টেম, ফি দেওয়া, ফিডব্যাক নেওয়া — আরও কত কিছুনিয়ে এই প্রশাসন পরীক্ষানিরীক্ষা করবেন? আমি তো গিনিপিগ হওয়ার জন্য এখানে ঢুকেছিলাম বলে মনে করতে পারছি না। মাথায় ঢুকছে না, কীসের ভিত্তিতে প্রবেশিকা পরীক্ষা তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে? আর যদি তাই হয়, তবে কতদিন এই অন্তহীন শোষণ ছাত্রসমাজ সহ্য করবে? আজ আমার ভাবতে অবাক লাগে, এই কলেজ থেকেই পাশ করেছিলেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, সত্যজিত রায়, অপর্ণা সেন, গায়ত্রী স্পিভাক — এবং বলাই বাহুল্য পঁচাত্তর শতাংশ হাজিরা ছাড়াই।
যখন শুনলাম, ২৩০ জন ছাত্রছাত্রী এই সেমেস্টারে পরীক্ষায় বসতে পারবে না তাদের ওই বাধ্যতামূলক হাজিরা নেই বলে (গত সেমেস্টারে এই সংখ্যাটা ছিল ১৮০), আমি তখন সিদ্ধান্ত নিলাম এই অবিচারের বিরুদ্ধে আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিবাদ করব। সিদ্ধান্তগুলো কর্তৃপক্ষের তরফে একতরফাভাবে ছাত্রছাত্রীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, কিছু বলার সুযোগ থাকে না। তাই আমারও নিজের রাস্তায় চলা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। এই প্রশাসন ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ করার মৌলিক অধিকারটুকু কেড়ে নিতে চাইছে; এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারব না। আজ তাই আমি দশটা থেকে শুরু করছি অনির্দিষ্টকালীন অনশন, এই অবিচারের নিন্দা জানিয়ে। আমি এটাও বলতে চাই যে, আমি পরীক্ষা দেওয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করেছি, তাই আমি অনশনের মধ্যেই পরীক্ষাটা দেব।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অনশন, প্রেসিডেন্সি কলেজ, বাধ্যতামূলক উপস্থিতি, বাধ্যতামূলক হাজিরা

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in