• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

‘কাঠমাণ্ডু উপত্যকার সমস্ত পুরনো বিল্ডিং ভেঙে পড়েছে; উত্তরকম্পনে সারারাত ঘরে-বাইরে করেছে সবাই’

April 27, 2015 admin Leave a Comment

স্টিফেন মাইকসেল, কাঠমাণ্ডু, ২৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ন’টা#

ভকতপুরে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে বুদ্ধমূর্তি। ছবি রয়টার।
ভকতপুরে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে বুদ্ধমূর্তি। ছবি রয়টার।

যমুনা এবং আমি একটা চড়াই ডিঙিয়ে কাঠমাণ্ডু উপত্যকায় একটা কৃষি-স্কুলে গেছিলাম গতকাল দুপুরে। দেখা সাক্ষাৎ করে ওই স্কুল বিল্ডিংগুলোর পাশ দিয়ে খেতের দিকে যাচ্ছি, এমন সময় মাটি নড়ে উঠল। হমম্‌, কে ট্রাক চালাচ্ছে এখানে — আমার প্রথম ভাবনা ছিল এরকমই …। ঐ যে মেয়েগুলো বিশাল বিশাল বোঝা নিয়ে আসছে, ওদের জন্য নিশ্চয়ই মাটি কাঁপছে না … আমি হেঁটে এগোতে পারছি না কেন? … তারপর আমি দেখলাম, সামনের বিল্ডিংগুলো কলের পুতুলের মতো দুলছে; ছাদের ওপর বড়ো বড়ো জলের ট্যাঙ্কগুলো সামনে পেছনে করছে। ওহ্‌, ভূমিকম্প হচ্ছে — এইবার বুঝলাম।
আগের যত ভূমিকম্প দেখেছি, মাটি যেন তার ওপরে যা কিছু সে ধরে আছে, সবকিছুর ওপর বাঁধন আলগা করে ফেলে। এবার যেন তা কাঁপছে ভীষণভাবে, আমি অনেক দেরি করে বুঝলাম। এতে খুব অস্বস্তি হলো, কারণ আমি ভেবে এসেছি, ভূমিকম্পের মুখে যদি পড়ি, তাহলে বাড়ি-ঘর যেখানেই থাকি সেখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি আগে একাধিকবার তাই করেছি-ও। কিন্তু যদি আমি বুঝতেই না পারি যে ভূমিকম্প হচ্ছে, তাহলে কী হবে?
আমি দেখলাম, একটি বাচ্চা মেয়ের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছি। মেয়েটার চোখেমুখে ভয়ের ছাপ। একদঙ্গল ছাত্রছাত্রীর মধ্যে আমি। আমরা সবাই চেষ্টা করছি কীভাবে এই বিল্ডিংগুলো থেকে দূরে যাওয়া যায়। বাচ্চারা চিৎকার করছে, আর যমুনা চেঁচাচ্ছে, ‘চলো চলো’। কিন্তু আমাদের পা গুলো যেন কেউ কোনো এক শক্তিতে মাটির সঙ্গে গেঁথে দিয়েছে। বিল্ডিংগুলোর দিকে তাকিয়ে আমি আন্দাজ করলাম, এইবার এইগুলো পড়ে যাবে। কিন্তু যেমন হঠাৎ করে সে এসেছিল, তেমনি হঠাৎ করেই সে চলে গেল।
যদিও ইঁটের গুঁড়ো দলা পাকিয়ে উপত্যকার সব বিল্ডিংগুলোর চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল, এই নতুন সিমেন্টের স্কুল এবং ফার্ম হাউসগুলো সব দাঁড়িয়ে ছিল। তাতে আমি অবাকই হলাম। ইঁটের গুঁড়োগুলো আসছে কোত্থেকে? আরেকটু চড়াই-এ উঠে দেখলাম, একটা কনস্ট্রাকশন সাইট থেকে ইঁটগুলো সব পড়ে গেছে। একটা পুরনো বড়ো বাড়ির টালিগুলো সব ভেঙে পড়েছে। আমাদের পাশেই একটা ডরমিটরির দো-তলা তৈরি হচ্ছে, তাতে একটা বড়ো ফাটল। প্রথম উত্তরকম্পন (আফটারশক)-এ ওপর তলা থেকে প্রচুর ইঁট খসে পড়ল। দেওয়ালে বড়ো ছ্যাঁদা হয়ে গেল। গোশালার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, একটা পুরনো মাটি দিয়ে বানানো ফার্ম হাউস ভেঙে পড়েছে। পড়ে আমরা গাড়ি চালিয়ে চলে এলাম মূল রাস্তায়। প্রতিটি এই ধরনের বাড়িরই একই দশা।
নিচ থেকে একদল লোক এসে বলল, প্রতিটি পুরনো বাড়ি আর মন্দির ধ্বসে পড়েছে। হাসপাতালের বাইরে স্ট্রেচারে করে লোককে শোয়ানো হয়েছে, কারণ হাসপাতালগুলোতে আর জায়গা নেই। তারা বলল, প্রতিটি মানুষ রাস্তায়, ফের ধ্বস নামার ভয়ে। সমস্ত রাস্তা বন্ধ, শুধু আপৎকালীন গাড়ি চলতে দেওয়া হচ্ছে।
আমাদের ফোন মূলত কাজ করছিল না, কারণ প্রচুর ফোন ট্র্যাফিক বেড়ে গিয়েছিল সেই সময়।
আমরা কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করলাম। প্রত্যেকে চিৎকার করছিল এবং কাছের বিল্ডিংগুলো থেকে বেরিয়ে আসছিল প্রতিটি উত্তরকম্পন-এর পর। কিছুক্ষণ পর খাবার দাবার দেওয়া হলো, লোকে কিছুটা আশ্বস্ত হলো। যখন লোকে বলল, কিছু গাড়ি চলছে রাস্তা দিয়ে, তখন আমরা উপত্যকায় আমাদের ঘরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। যাওয়ার পথে দেখলাম, একটা হাসপাতালের সামনের রাস্তা আর উঠোন ভর্তি হয়ে গেছে স্ট্রেচারে করে চেওয়া রোগীতে। স্ট্রেচার লোকের স্যালাইন চলছে।
সব জায়গাতেই পুরনো বিল্ডিংগুলো এবং দেওয়াল ধ্বসে পড়েছে। সমস্ত পুরনো মন্দির ধূলিসাৎ। একটা নতুন সিমেন্ট বিল্ডিং দাঁড়িয়ে আছে। তবে পাশেই আরেকটি সিমেন্টের স্তুপ। লোকে একটা ক্রেন দিয়ে সিমেন্টের মেঝেগুলো তোলার চেষ্টা করছে। এইসময় আরেকবার উত্তরকম্পন হলো… প্রত্যেকে বাইরে বেরিয়ে এল। আবার …। এইটা অভ্যস্ত ধরনের, সামনে পেছনে দুলুনি। (ভূ-তত্ত্ববিদরা বলছে, ভূকম্পের কেবল চার শতাংশ শক্তি বাইরে বেরিয়েছে মাত্র। এবং একটা আট রিখটার স্কেল মাত্রার ভূমিকম্পে যা হতে পারে, তার প্রায় কিছুই হয়নি।) ঘরের কাছে দাঁড়িয়ে আমার শালার একটা কমার্শিয়াল বিল্ডিং দেখলাম, মনে হলো একটু মুচড়ে গেছে।
প্রত্যেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বাইরে ঘুমোলো। তারপর প্রত্যেকে ঘরের নিচের তলায় ঘুমোতে গেল। রাতজুড়ে বারাবার কাঁপুনিতে বারবার সবাই বাইরে বেরিয়ে এল। আমার শ্যালিকা চেঁচাচ্ছিল, ‘এইটা বড়ো, এইটা বড়ো’। বার দুয়েক বেরিয়ে আসার পর আমি আর বিছানা ছেড়ে নড়লাম না। আজও কাঁপুনি চলছে, প্রত্যেকে অস্বস্তিতে। আমার শালা যে দেওয়ালটা ভেঙে পড়েছে, তার ইঁট কুড়োচ্ছে। পুরনো করোগেটেড ছাদ-এর টুকরো এবং বেড়া দিয়ে ফাটল বোজানো হচ্ছে। একশ’ ফিট লম্বা ফাটল।
এখনও অবদি দু-হাজার জন মারা গেছে। আরো অনেক হাজার আহত। কিন্তু পশ্চিম দিকে এপিসেন্টারের কাছের সমস্ত গ্রাম ও শহর মাটিতে মিশে গেছে। তাই এই সংখ্যাগুলো অনেক বাড়বে। অনেকেই যারা বিভিন্ন পর্বতশৃঙ্গে আরোহন করতে গেছিল, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে হাজার খানেক মানুষকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে হিমানী সম্প্রপাত বা তুষার ধ্বস (এরই মধ্যে কুড়ি জনের মৃত্যুর খবর এসেছে, যার মধ্যে একজন গুগল কোম্পানির এক্সিকিউটিভ)। … আমার ল্যাপটপের ব্যাটারিও ফুরিয়ে এসেছে।
>

খবরে দুনিয়া উপত্যকা, কাঠমাণ্ডু, নেপাল, ভূমিকম্প, স্টিফেন মাইকসেল

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in