কুশল বসু, কলকাতা, ৩১ জানুয়ারি, ছবি ইন্টারনেট থেকে#
নয়া সংবিধান গণভোটে সম্মতি পেলেও নয়া মিশর এখনও বিভক্ত হয়ে রয়েছে। বন্দর শহর পোর্ট সইদে শুরু হয়েছে ব্যাপক রক্তপাত। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসের বিপ্লবের ঠিক একবছর পর, ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অপেক্ষাকৃত সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের বসতি পোর্ট সইদ শহরের একটি স্টেডিয়ামে দুই দলের মধ্যে ফুটবল খেলাকে ঘিরে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয় ক্লাবের সমর্থকরা বাইরের ক্লাবের সমর্থকদের ওপর ছুরি, লাঠি, হকি স্টিক এবং বাজি নিয়ে আক্রমণ করে খেলা শেষ হতেই। এতে প্রায় ৭৯ জন ফুটবলপ্রেমী মারা যায়। এদের মধ্যে পাঁচজন পোর্ট সইদ শহরের, বাকিরা বাইরে থেকে আগত দলকে সমর্থন করতে এসেছিল। এই দাঙ্গার ঘটনায় পোর্ট সইদ শহরের বেশ কিছু মানুষ গ্রেপ্তার হয়। তার মধ্যে কিছু নিরাপত্তারক্ষীও ছিল।
এ বছর বিপ্লবের দুই বছর পূর্তিতে মিশরের নয়া প্রধান মুহাম্মদ মোরসির প্রতি বিপ্লবী ছাত্র-যুবদের অনেকেই সন্তুষ্ট নয়। তাঁর ক্ষমতা করায়ত্ত করতে চাওয়ার মধ্যে অনেকেই একনায়কতন্ত্রের ছায়া দেখছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে গত বছরের ফুটবল দাঙ্গার রায় দেয় আদালত। উল্লেখ্য, এই রায়দানের আগেই বেশ কিছু উন্মত্ত ফুটবল সমর্থক দাঙ্গাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মিশরে বিক্ষোভ, রেল অবরোধ, রাস্তা অবরোধ শুরু করেছিল। যাই হোক, ২৬ জানুয়ারির রায়ে আদালত জানায় ২১ জন অভিযুক্তর ফাঁসির সাজার কথা। আর এরপরেই প্রান্তিক শহর পোর্ট সইদ খেপে ওঠে। ব্যাপক মারপিট শুরু হয় রাস্তায়। দাঙ্গায় অভিযুক্তদের পরিবার পরিজনরা জেল ভেঙে অভিযুক্তদের ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী সহ প্রায় ৩০ জন নিহত হয় ওইদিনের সংঘর্ষে। পরদিন নিহতদের শব নিয়ে মিছিল হিংসাত্মক হয়ে উঠলে ফের নিরাপত্তারক্ষীরা আক্রমণ করে বিক্ষোভকারীদের ওপর। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে মিশরের অন্যত্রও। সব মিলিয়ে জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে পোর্ট সইদ, ইসমাইলিয়া সহ আরও বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষে নিহত হয় ৫০ জনের বেশি। পোর্ট সইদ, সুয়েজ এবং ইসমাইলিয়া শহরকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে মিশর সরকার। উল্লেখ্য, মুবারক জমানার জরুরি অবস্থা আইন গত বছর ঘটা করে তুলে দিয়েছিল নব নির্বাচিত মোরসি সরকার।
Leave a Reply